Bankura: বাঁকুড়া-বিষ্ণুপুর ভাগ হলে ধাক্কা খেতে পারে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, আশঙ্কা জেলাবাসীর

Bankura: বাঁকুড়া জেলাবাসীদের একাংশের বক্তব্য, জেলা ভাগ করা হলে, এখানকার মানুষের শিল্প, সংস্কৃতি এবং সামাজিক বন্ধনের উপর আঘাত আসবে। আঘাত হবে ভাবাবেগেও। 

Bankura: বাঁকুড়া-বিষ্ণুপুর ভাগ হলে ধাক্কা খেতে পারে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, আশঙ্কা জেলাবাসীর
বিষ্ণুপুর পৃথক করার প্রতিবাদ জেলার একাংশের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 02, 2022 | 8:06 PM

বাঁকুড়া : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবারই ঘোষণা করেছেন নতুন সাত জেলার কথা। সেই তালিকায় রয়েছে বিষ্ণুপুর জেলা। বাঁকুড়া থেকে একটি অংশকে ভাগ করে এই পৃথক বিষ্ণুপুর জেলা গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এই ঘোষণার পর থেকেই বাঁকুড়া জেলায় বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। বাঁকুড়া জেলাবাসীদের একাংশের বক্তব্য, জেলা ভাগ করা হলে, এখানকার মানুষের শিল্প, সংস্কৃতি এবং সামাজিক বন্ধনের উপর আঘাত আসবে। আঘাত হবে ভাবাবেগেও।

প্রসঙ্গত, ১৮৮১ সালে বাঁকুড়াকে সদর শহর করে বাঁকুড়া জেলার জন্ম হয়। মানভূম জেলা থেকে রাইপুর, সিমলাপাল ও খাতড়াকে বাঁকুড়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। সেই সঙ্গে বর্ধমান থেকেও ইন্দাস, সোনামুখী ও কোতুলপুরকে আলাদা করে বাঁকুড়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। সেই সময় থেকেই অটুট রয়েছে বাঁকুড়া জেলার সীমানা। মাঝে প্রায় ১৪০ বছর কেটে গিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্লক ভেঙে ভেঙে নতুন ব্লক তৈরি হয়েছে। কিন্তু জেলার সীমানায় কোনও পরিবর্তন হয়নি। এবার জেলার সেই সীমানা ভেঙে বিষ্ণুপুরকে পৃথক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

স্নেহাশিস রায় নামে জেলার এক সাংস্কৃতিক কর্মী জানিয়েছেন, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর এক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যমণ্ডিত জায়গা। এটি সংস্কৃতির পীঠস্থান। আমরা যাঁরা সংস্কৃতি চর্চা করি, তাঁরা গর্বের সঙ্গে বলি বিষ্ণুপুর আমাদের। বিস্তীর্ণ সাংস্কৃতিক ইতিহাস রয়েছে। এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছি। সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে মনে করি, সোনামুখী, বিষ্ণুপুর… এগুলি আমাদের আঁকড়ভূমি। আমাদের সেই শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার যে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, তা পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করছি।”

বাঁকুড়া খ্রিষ্টান কলেজের অধ্যাপক অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। রাজ্যের হাতে ক্ষমতা আছে। কিন্তু এটা তো গণতান্ত্রিক সরকার। জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাই জনগণের যে আবেগ, সেটির উপর জনপ্রতিনিধিদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বিষ্ণুপুর আমাদের কাছে একটি আবেগ, একটি পরিচিতি। পরিচিতি মানুষকে আত্মবল দেয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে অঞ্চলের মানুষদের মনের মধ্যে একটি পরিচিতি নিয়ে একটি সঙ্কটের পরিস্থিতি তৈরি হবে। তাই বাঁকুড়ার মানুষের আবেগকে মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ রাখছি।”

বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্সের সচিব মধুসূদন দরিপাও বলেন, “এটির দরকার ছিল বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না। বাঁকুড়া এক আধুনিক শহরের দিকে এগোচ্ছে। শিল্প ও সংস্কৃতির দিক থেকে এগোচ্ছে। মানুষ সব নাগরিক পরিষেবাও অনলাইনে পেয়ে যাচ্ছে। কিছু মানুষ হয়ত না বুঝে বলছেন, খুব ভাল হল। কিন্তু আমার মতে, এটির মাধ্যমে বাঁকুড়ার এক সাংস্কৃতিক বিভাজন করা হল।”