শ্মশানে সৎকারে বাধা স্থানীয়দের, হাসপাতালের মর্গে উপচে পড়ছে কোভিড রোগীর মৃতদেহ!

প্রসঙ্গত, করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে রাজ্যে। জেলাতেও মৃত্যু হচ্ছে করোনা রোগীদের। জেলায় এই পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮৮ জনের। এর মধ্যে গত ৪৮ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।

শ্মশানে সৎকারে বাধা স্থানীয়দের, হাসপাতালের মর্গে উপচে পড়ছে কোভিড রোগীর মৃতদেহ!
নিজস্ব ছবি
Follow Us:
| Updated on: May 06, 2021 | 10:36 PM

দক্ষিণ দিনাজপুর: শ্মশানে সমাধা করা যাবে না মৃত কোভিড রোগীর দাহকার্য। স্থানীয় বাসিন্দাদের এমন আপত্তিতে কার্যত হাসপাতালের মর্গেই জমছে মৃতদেহ (Dead body)। বালুরঘাট শহরের এই ঘটনায় কার্যত চোখ কপালে তুলেছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। কিন্তু, বহুবার বোঝানো সত্ত্বেও হালে পানি ফেরেনি।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরদফতরের নির্দেশ সত্ত্বেও বালুরঘাটের বাসিন্দাদের প্রবল আপত্তিতে খিদিরপুর শ্মশানে কোভিড রোগীদের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হলেও দেহ নিয়েই ফিরে আসতে হয়েছে। হয়নি দাহকাজ। ফলে মৃতদেহ এসে জমেছে বালুরঘাট স্পেশালিটি হাসপাতালের (Balurghat Super Specialty Hospital) মর্গে। গত বছর মৃতদেহ সৎকারে সমস্যা হওয়ায়, এ বারে রাজ্য় পুর দফতর থেকে নির্দেশিকা জারি করে সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিতে সৎকারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেই মোতাবেক বালুরঘাট পৌরসভার খিদিরপুর শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লিতে মৃতদেহ সৎকারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেখানে কোভিড নিয়ম মেনেই সৎকার করা হবে বলে জানিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু, স্থানীয়দের প্রবল আপত্তিতে থমকে যায় দাহকার্য।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মৃত করোনা (COVID19) রোগীর দাহকার্য খিদিরপুর শ্মশানে সমাধা হলে সেখান থেকে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে পারে। মৃত্য়ুর ৪৮ ঘণ্টা পর মৃতদেহে যে করোনা ভাইরাসের জীবাণুু থাকে না এ কথা বার বার বোঝানোর পরেও আশ্বস্ত হননি তাঁরা। মনকি জেলা প্রশাসনের কর্তারা, পুর কর্তারা , এমনকি জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা এলাকায় গিয়ে বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে মানুষকে বুঝিয়েও সমস্যার সমাধান করতে পারেননি। অগত্যা, বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের হিমঘরেই জমছে মৃতদেহ।

হিমঘরে এভাবে মৃতদেহ জমতে জমতে এমন অবস্থা যে আর দেহ রাখার জায়গা নেই। এই পরিস্থিতিতে, মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য কুলারগুলিকে আরও সক্রিয় করতে উঠেপড়ে লেগেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আগে হাসপাতাল হিমঘরের ২৪ টি মেশিনের মধ্য়ে ১২ টি কাজ করত। বাকি এক ডজন মেশিন খারাপ ছিল। হিমঘর ক্রমশ ভর্তি হওয়ায়, এ বার বাকি ১২ টি কুলার সংস্কারের কাজ শুরু  করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে রাজ্যে। জেলাতেও মৃত্যু হচ্ছে করোনা রোগীদের। জেলায় এই পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮৮ জনের। এর মধ্যে গত ৪৮ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুকুমার দে বলেন,  “হিমঘরে মৃতদেহ জমে রয়েছে। বালুরঘাট পুর এলাকার শ্মশানে সৎকারের ব্যবস্থা করা যায়নি। তাই অন্যত্র শ্মশান খোঁজা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই মৃতদেহ গুলি সৎকারের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি, হিমঘরে মৃতদেহ সংরক্ষণের পরিকাঠামোও সংস্কারের মধ্য দিয়ে বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে।”

উল্লেখ্য, রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত ১৮,৪৩১ জন। মোট সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯,৩৫,০৬৬। বর্তমানে অ্যাকটিভ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১,২২,৭৭৪। নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ১১৭ জনের। এই নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১১,৯৬৪।

আরও পড়ুন: ৭০,০০০! এই দামেই বিক্রি হচ্ছে এক-একটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর! পুলিশের জালে ৪ চক্রী