ছত্রধরের আঘাত লাগলে দায় এনআইএর, ২ দিনের হেফাজত

রবিবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ গ্রেফতার করে তাঁকে। আর ব্যাঙ্কশাল কোর্ট ৩০ মার্চ পর্যন্ত এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দিল ছত্রধরের।

ছত্রধরের আঘাত লাগলে দায় এনআইএর, ২ দিনের হেফাজত
গ্রেফতার ছত্রধর মাহাত।
Follow Us:
| Updated on: Mar 28, 2021 | 8:20 PM

কলকাতা: লালগড়ে ভোট মিটতেই কাকভোরে গ্রেফতার ছত্রধর মাহাত। রাজধানী এক্সপ্রেস মামলায় এই গ্রেফতারি বলে এনআইএ (NIA) সূত্রে খবর। রবিবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ গ্রেফতার করে তাঁকে। আর ব্যাঙ্কশাল কোর্ট ৩০ মার্চ পর্যন্ত এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দিল ছত্রধরের।

১১ বছর পর শনিবার নিজের কেন্দ্রে ভোট দিয়েছিলেন ছত্রধর। এরপর রবিবার কাকভোরে তাঁর বাড়িতে হানা দেয় তদন্তকারীদের ৩০ জনের একটি দল। গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। এনআইএ স্পেশাল কোর্ট বন্ধ থাকায় ছত্রধরকে পেশ করা হয় ব্যাঙ্কশাল কোর্টের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে। সেখানেই আদালত ছত্রধরের ৩০ মার্চ পর্যন্ত এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। আদালতে তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে ক্ষোভের কথা বলেন ছত্রধর। তিনি বিচারককে বলেন, “হাত ফুলে গিয়েছে। ভাইজি, মা, স্ত্রীকে মেরেছে।” নিজের হাত দেখিয়ে বিচারকের কাছে তিনি দাবি করেন, মারের চোটে হাত ফুলে গিয়েছে।

ছত্রধরের গ্রেফতারির বিরোধিতা করে তাঁর আইনজীবী কৌশিক সিনহা বলেন, “কেন এই গ্রেফতারি তার যথাযথ কোনও কারণ ছত্রধরের পরিবারকে জানানো হয়নি। হঠাৎই ভোররাতে এনআইএ-এর একটি দল এসে তাঁকে নিয়ে যায়। সবথেকে দুঃখজনক কেন এই গ্রেফতার সেটাই তাঁর পরিবারকে জানানো হল না। নতুন করে কোনও মামলা দায়ের হল কি না সেটা দেখতে হবে। কারণ ছত্রধরের বিরুদ্ধে কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা নেই।” পাশাপাশি ভোটবঙ্গে ছত্রধরের গ্রেফতারিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও দাবি করেন তিনি। তবে এনআইএ পক্ষ জানায়, তাঁদের কাছে এমন কিছু প্রমাণ রয়েছে,  যার ওপর ভিত্তি করে ছত্রধরের গ্রেফতারি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ছত্রধরকে ‘ষড়যন্ত্রী’ বলে জানায় এনআইএ। এরপর ছত্রধরকে ২ দিনের এনআইএ হেফাজতে নির্দেশ দেয় আদালত। তাঁকে এরপর কলকাতার এনআইএ স্পেশাল আদালতে পেশ করা হবে। ছত্রধরের এনআইএ হেফাজতে আদালত জানিয়েছে, এই সময় যদি তাঁর শরীরে কোনও আঘাত হয়, তার দায় বর্তাবে এনআইএর ওপর। এর সঙ্গে তাঁকে চিকিৎসার সুবিধাও দিতে হবে।

২০০৯ সালের ২৭ অক্টোবর। তখন ছত্রধর জেলে। ছত্রধরের মুক্তির দাবিতে ঝাড়গ্রামের বাঁশতলা স্টেশনে রাজধানী এক্সপ্রেস আটকানোর অভিযোগে ছত্রধরের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলারই পুনর্তদন্ত চেয়ে আদালতে গিয়েছিল এনআইএ। আদালত তাদের তা করার নির্দেশ দেয়।

এছাড়াও ২০০৯ সালে লালগড়ের সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাত খুনে ছত্রধর-সহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের ধারায় মামলা হয়। ২০১০ সালে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। সেই মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ছত্রধর। সূত্রের খবর, শনিবার রাতেই দিল্লির এনআইএ সদর দফতর থেকে নির্দেশ আসে ছত্রধর মাহাতকে গ্রেফতার করা হবে। রাজধানী এক্সপ্রেস আটকানোর ঘটনায় ছত্রধরের ষড়যন্ত্রের বেশ কিছু তথ্য উঠে আসে বলে সূত্রের খবর। এরপরই শনিবার কলকাতা এনআইএ-এর একটি টিম রওনা দেয় লালগড়ের পথে।

আরও পড়ুন: ভোটের সন্ধ্যায় ‘হামলা’, মেরে বিজেপি নেতার হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ