Trinamool Congress: দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে ‘আপন মতে’ চলা, ১২ জন তৃণমূল নেতাকে বহিষ্কারের পথে দল
Coochbehar: বিধানসভা ভোটের পর থেকেই ওকড়াবাড়ি এলাকায় তৃণমূলের (Trinamool Congress) অন্দরেই ভাগাভাগির অভিযোগ উঠছিল।
কোচবিহার: দলীয় নির্দেশ না মানার অভিযোগে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হল ১২ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে। কোচবিহারের দিনহাটায় বুধবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান কোচবিহার জেলার তৃণমূলের (Trinamool Congress) চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ। স্থানীয় ওকড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের এই ১২ জন সদস্যই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার ডাক দিয়েছিল। এরপরই বুধবার সন্ধ্যায় নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দল তাঁদের বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করে।
বুধবার দিনহাটার সুভাষ ভবনে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ, প্রাক্তন জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় একটি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন। সেখানেই জানান, দিনহাটার ওকড়াবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের যে সমস্ত সদস্য গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার ডাক দিয়েছেন, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। দলের অভ্যন্তরে একটা শৃঙ্খলা রয়েছে। তা সকলকেই মেনে চলতে হবে। সেখানে কোনও রকম আপোস মেনে নেওয়া হবে না বলেই দাবি করেন জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা উদয়ন গুহ।
বিধানসভা ভোটের পর থেকেই ওকড়াবাড়ি এলাকায় তৃণমূলের (Trinamool Congress) অন্দরেই ভাগাভাগির অভিযোগ উঠছিল। পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ সরব হতে শুরু করে। ওকড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান রেণুকা খাতুনকে পদ থেকে সরাতে অনাস্থারও ডাক দেন ১২ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে তৃণমূল জয়ী হওয়ার পর দিনহাটা-১ ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসা হয়। এর আগেও ওকড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তলবি সভা থেকে অনাস্থা বাতিল হয়ে যায়।
কারণ, জেলা (Coochbehar) নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছিল, কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনা যাবে না। মূলত কোভিড বিধির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তাতে রোখা যায়নি ওকড়াবাড়ির পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশকে। বারো জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অনাস্থার জন্য কলকাতা হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট রায় দেয় অনাস্থার পক্ষে। কিন্তু দলের নির্দেশ না মেনে কী ভাবে এই ঘটনা ঘটানো হল তা নিয়ে ক্ষুব্ধ নেতৃত্ব ১২ জনকেই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন।
এ প্রসঙ্গে উদয়ন গুহ বলেন, “গত ৪ তারিখে আমাদের সভাপতি-সহ জেলার নেতারা দিনহাটার তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের নিয়ে বৈঠক ডাকি। সেখানে আমরা পরিষ্কার ভাবে তিনটে গ্রাম পঞ্চায়েতে যাঁরা অনাস্থা আনার সঙ্গে জড়িত ছিল তাঁদের পরিষ্কার করে জানিয়ে দিই সোমবারের মধ্যে এই সমস্ত অনাস্থা প্রত্যাহার করতে হবে। এই পর্যন্ত আমরা যদিও বিতণ্ডা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে এখনও অনাস্থা আসেনি। নাজিরহাট-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে আমাদের নির্দেশ মেনে অনাস্থা প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু ওকড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে আমরা কোনও রকম সাড়া পাইনি। তাই দলের জেলার যাঁরা দায়িত্বে রয়েছেন, সকলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে ১২ জন পঞ্চায়েত সদস্য এই অনাস্থা ডাকার সঙ্গে জড়িত তাঁদের সকলকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। যদি তাঁরা দলের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখিয়ে এই অনাস্থা তলবি সভা থেকে বিরত থাকে তা হলে এই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেব। না হলে এটা বলবৎ থাকবে। বৃহস্পতিবার চিঠি দিয়েও তা জানিয়ে দেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দিনহাটা-১ ব্লকের ওকড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রেণুকা খাতুনের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থার তলবি সভা। অনাস্থাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ১৪৪ ধারা বলবৎ করা হয়েছে। এখন দেখার বহিষ্কারের পর ১২ জন পঞ্চায়েত সদস্য কোন পথে হাঁটেন। আরও পড়ুন: ডায়ারিয়া নয়, মৃত্যুর কারণ অন্য! কামারহাটির সংক্রমণ নিয়ে বিবৃতি স্বাস্থ্য দফতরের