Mamata Banerjee and Ananta Maharaj: মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘিরে বাড়ছে জল্পনা, তৃণমূলের দিকে ঝুঁকছেন অনন্ত মহারাজ?

Mamata Banerjee and Ananta Maharaj: চব্বিশের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর সভায় অনন্ত মহারাজকে দেখা গেলেও ভোট রাজনীতিতে তেমনভাবে সক্রিয় ছিলেন না। এমনকি, নির্বাচনের আগে একাধিকবার বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। তার ফলে অনন্ত গোষ্ঠী একটা অংশ ভোট তৃণমূলের দিকে গিয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।

Mamata Banerjee and Ananta Maharaj: মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘিরে বাড়ছে জল্পনা, তৃণমূলের দিকে ঝুঁকছেন অনন্ত মহারাজ?
অনন্ত মহারাজের বাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 18, 2024 | 8:53 PM

কোচবিহার: তিনি রাজবংশী নেতা। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। মঙ্গলবার তাঁর বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে। তবে কি তৃণমূলের দিকে ঝুঁকছেন বিজেপি সাংসদ নগেন্দ্র রায়? এলাকায় অবশ্য তিনি অনন্ত মহারাজ বলেই পরিচিত। মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের পর গ্রেটার কোচবিহারকে পৃথক রাজ্য কিংবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি নিয়ে ফের মুখ খুললেন। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে নতুন করে জল্পনা বেড়েছে।

গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা অনন্ত মহারাজ গতবছর বিজেপির টিকিটে রাজ্য়সভার সাংসদ হন। গত বছরের ১৯ অগস্ট বাংলা থেকে তাঁকে রাজ্যসভার সদস্য করে পাঠায় গেরুয়া শিবির। বাংলা থেকে রাজ্যসভায় বিজেপির প্রথম সাংসদ তিনি। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, রাজবংশী ভোটের দিকে নজর রেখেই অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠায় বিজেপি।

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে ২ কোটি ১৪ লক্ষ তফসিলি জাতির বাসিন্দা বাস করেন। তার মধ্যে ১৮ শতাংশের বেশি রাজবংশী সম্প্রদায়ের। উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলার ২০টি বিধানসভায় রাজবংশী ভোটারদের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। ওই পাঁচটি জেলার মধ্যে অন্যতম কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার। কোচবিহারে রাজবংশী মানুষের সংখ্যা ৩২ শতাংশ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এই আসনগুলিতে ভাল ফল করেছিল বিজেপি।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার থেকে জিতেছিলেন নিশীথ প্রামাণিক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীও হন। তিনিও রাজবংশী নেতা। চব্বিশের নির্বাচনে সেই কোচবিহার আসনেই প্রার্থী হয়েছিলেন নিশীথ। তবে এবার তৃণমূলের জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার কাছে হেরে গিয়েছেন।

তাই, লোকসভার ফল ঘোষণার কয়েকদিন পর অনন্ত মহারাজের সঙ্গে মমতার সাক্ষাৎ নিয়ে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত পাচ্ছেন অনেকে। সোমবার উত্তরবঙ্গে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ট্রেন দুর্ঘটনার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকালে কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই যান অনন্ত মহারাজের বাড়িতে।

রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, লোকসভার ফলের পর অনন্ত মহারাজের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। উত্তরবঙ্গে রাজবংশী মানুষ রয়েছেন ৮ শতাংশ। তৃণমূলের কাছে রাজবংশী ভোট পাখির চোখ। রাজ্যের শাসকদলের বিচারে, রাজবংশী ভোট তাদের দিকে পড়ায় কোচবিহার হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। তাই অনন্ত মহারাজের সমর্থকদের নিজেদের দিকে টানতে চেষ্টার কোনও কসুর করেননি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে রাজবংশীদের একাধিক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রসঙ্গে টেনে অনেকে বলছেন, উনিশের ভোটে উত্তরবঙ্গজুড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা হলুদ পতাকায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন অনন্ত মহারাজ গোষ্ঠীর সমর্থকরা। তারপর থেকেই গ্রেটার কোচবিহার সমর্থকরা বিজেপির সঙ্গে সখ্যতা বজায় রেখে চলছিলেন। তবে চব্বিশের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর সভায় অনন্ত মহারাজকে দেখা গেলেও ভোট রাজনীতিতে তেমনভাবে সক্রিয় ছিলেন না। এমনকি, নির্বাচনের আগে একাধিকবার বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। তার ফলে অনন্ত গোষ্ঠী একটা অংশ ভোট তৃণমূলের দিকে গিয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।

মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে বিজেপি কৈফিয়ত চাইলে কী বলবেন? মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে অনন্ত মহারাজের বক্তব্য, “আমি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। আর উনি এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আইন-শৃঙ্খলা তাঁর হাতে। উনি যদি সাক্ষাৎ করতে চান আমি কী বলব। গৃহস্থের ধর্ম মেনে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি।” তিনি মুখে যাই বলুন, মমতার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনা কমছে না।