Balurghat Cock Fight: মোরগ তুমি কার? রহস্যের কিনারা করতে না পেরে রাতভর পাহারা দিল পুলিশ
Balurghat: আর সেই মোরগের নজর রাখবে পুলিশ। মোরগ যার বাড়িতে স্ব-ইচ্ছায় যাবে মোরগ তার বলেই ধরে নেওয়া হবে।
বালুরঘাট: এক মোরগের দাবিদার দুই মালিক। বাড়ি থেকে শুরু হয় মোরগ কার তার লড়াই। শেষমেশ সেই লড়াই পৌঁছায় বালুরঘাট থানায়। রাতভরের পরও মেলেনি কোনও সমাধান সূত্র। দু’পক্ষকে নিয়ে বসেও মেটেনি দ্বন্দ্ব। এ দিকে ভোর রাত থেকে থানায় মোরগের চিৎকারে কান ঝালাপালা পুলিশ কর্মীদের। অবশেষে বালুরঘাট থানার পুলিশ সিদ্ধান্ত নেয় ওই মোড়গকে ছেড়ে দেওয়া হবে ওই পাড়ায়। আর সেই মোরগের নজর রাখবে পুলিশ। মোরগ যার বাড়িতে স্ব-ইচ্ছায় যাবে মোরগ তার বলেই ধরে নেওয়া হবে।
শুক্রবার রাতে অদ্ভুত ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহর সংলগ্ন চকভৃগু ভৈরবীতলায়। এখানেই একই মোরগের মালিকানার দাবি জানায় দুই পাড়ার দু’জন। এক মালিকের দাবি, সম্প্রতি সে মোরগটিকে কিনে এনে মানুষ করছে। আর এক মালিকের দাবি, সে ছোট থেকেই বাড়িতে মানুষ করছে ওই মোরগটিকে। যা নিয়ে তুমুল গণ্ডগোল দুই মালিকের। আর তার জল গড়ালো থানা পর্যন্ত। অবশেষে সেই মোরগ নিয়ে এক মালিক সরাসরি বালুরঘাট থানার পুলিশের কাছে দ্বারস্থ হয়।
এরপর মোরগের আসল মালিক কে? তা জানতে শুক্রবার রাতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় বালুরঘাট থানার পুলিশ অফিসারদের। দুই মালিককে নিয়ে থানায় বসে পুলিশ। কিন্তু সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। ততক্ষণে ওই মোরগের চিৎকারে গোটা থানার পুলিশ কার্যত তিতিবিরক্ত হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টার বিচারে আসল মালিক খুঁজে বের করতে পারেনি পুলিশ। অবশেষে শনিবার মোরগটিকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বালুরঘাট থানার আধিকারিকরা। স্ব-ইচ্ছায় ঘুরতে ঘুরতে মোরগ যে বাড়িতে প্রবেশ করবে, সেই হবে মোরগের মালিক।
জানা গিয়েছে, বালুরঘাট শহর সংলগ্ন ভৈরবীতলা এলাকার বাসিন্দা চুমকি সরকার। সে গ্রামে গ্রামে ঘুরে আইস্ক্রিম বিক্রি করে। সেই মহিলার দাবি, সে গত মঙ্গলবারই স্থানীয় চকভৃগুর এক মুরগীর দোকান থেকে একটি মোরগ কিনে এনেছেন। সে নিজের বাড়িতেই পালন করবে বলে মনস্থির করেছিল। কিন্তু ওই মহিলার অভিযোগ, ওই মোরগটি ঘুরতে ঘুরতে পাশের পাড়াতে চলে যেতেই এক ব্যক্তি আটক করে নেয়। যা নিয়ে দু’দিন ধরে ঝামেলা শুরু হয়।
এ বিষয়ে ওই মহিলা চুমকি সরকার বলেন, ‘আমি ওই মোরগটি ৬০০ টাকা দিয়ে এক দোকান থেকে কিনে এনেছি। কিন্তু ওই ব্যক্তি আমার মোরগটি নিয়ে যায়। গতকাল থানাতেও গিয়েছিলাম। কিন্তু এই সমস্যার সমাধান হয়নি। আমি চাই আমার মোরগ আমার কাছেই থাকুক।’
অন্যদিকে, পাশের পাড়ারই বাসিন্দা দেবাশীস বিশ্বাস। সে টোটোচালক। তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরেই বাড়িতে মুরগি পালন করি। ওই মোরগটি আমার বাড়িতে ছোট থেকেই মানুষ হচ্ছে। কিন্তু ওই মোরগটি মহিলার বাড়ির কাছে চলে গেলে সে নিজের বলে দাবি করছে। তাই কোনও উপায় না পেয়ে থানায় মোরগ নিয়ে গেছিলাম। পুলিশ ছেড়ে দিতে বলেছে। কিন্তু আজকে ওই মহিলা জোর করে বেঁধে রেখেছে।’
এ বিষয়ে বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা বলেন, ‘ওই ঘটনায় রাতে অভিযোগ জানাতে দু’পক্ষই এসেছিল। ওই মোরগটির আসল মালিক খুঁজতে ছেড়ে দিতে বলেছি। যার বাড়িতে সন্ধ্যায় ঢুকবে সেই আসল মালিক হবে।’