কে খাবে ডিম-ভাত! তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসেই ধুন্ধুমার

TMC Clash: জানা গিয়েছে, আহত আর্য অধিকারী নামের এক ছাত্র টিএমসিপি তথা অল ইন্ডিয়া তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সক্রিয় সদস্য।

কে খাবে ডিম-ভাত! তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসেই ধুন্ধুমার
আক্রান্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 28, 2021 | 5:42 PM

দক্ষিণ দিনাজপুর: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসেই অনুষ্ঠান পালনকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য়ে শাসক শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল। শনিবার দুপুরে ডিমভাত খাওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বালুরঘাট পৌরসভা এলাকা। সংঘর্ষে জখম একাধিক। মাথা ফেটে গিয়েছে কয়েকজনের। আহতদের ইতিমধ্যেই বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, আহত আর্য অধিকারী নামের এক ছাত্র টিএমসিপি তথা অল ইন্ডিয়া তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সক্রিয় সদস্য। সৃজনী সংঘের বাসিন্দা আর্য এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আচমকাই তাঁর উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। আক্রমণের জেরে মাথায় গুরুতর চোট পেয়েছেন আর্য। আপাতত তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, তিনি বালুরঘাট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

এদিন, বালুরঘাট কলেজের তৃণমূলের ছাত্র পরিষদ প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের পর ডিম-ভাত খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথমে বচসা, পরে হাতাহাতি শুরু হয় বলে অভিযোগ। দলীয় সূত্রে খবর, মূলত, তৃণমূল নেতা শঙ্কর চক্রবর্তী ও  মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের গোষ্ঠীবিরোধ থেকেই এই হামলা। আক্রমণের ঘটনায়, গুরুতর আহত হয়েছেন একাধিক। আক্রান্ত এক পড়ুয়ার কথায়, “আমরা অনুষ্ঠানের পর খেতে বসেছিলাম। তখন আমাদের মেরে তুলে দেওয়া হয়। ওরা সব বিপ্লব মিত্রের লোক ছিল। যদিও আমরা বলি, যে আমরাও ছাত্র পরিষদের সদস্য। কিন্তু, আমাদের কথা না শুনেই লাঠি বাঁশ দিয়ে মারধর শুরু করে ওরা।”

পাল্টা বিপ্লব মিত্র অনুগামী সদস্যদের  অভিযোগ, যাঁরা সংঘর্ষের সৃষ্টি করেছে তাঁরা তৃণমূলের কোনও দলীয় কর্মী বা সমর্থক নন। সকলেই অন্য রাজনৈতিক  দলের সদস্য। কলেজের অনুষ্ঠানে আচমকা এসে ওই দুষ্কৃতীরা ছাত্রীদের কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। সেখান থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। যদিও, দলের অন্দরে গুঞ্জন, ছাত্র পরিষদের কোনও প্রভাবশালী নেতৃত্বের অনুপস্থিতিকে ঘিরেই দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় বালুরঘাটের বিশাল পুলিশ বাহিনী।  ঘটনায়, বালুরঘাট টাউন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি বলেন, “আমি ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমাদেরই এক ছাত্রবন্ধু আহত। আপাতত তাকে দেখতেই হাসপাতালে এসেছি। গোটা ঘটনা তদন্তসাপেক্ষ।”

প্রসঙ্গত, বালুরঘাটে জেলা তৃণমূলের (TMC) দলীয় কোন্দল কেবল সর্বজনবিদিত নয়, দীর্ঘদিনেরও। শঙ্কর চক্রবর্তীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিবাদ প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের। কারণ, দলে যোগদানের পর তাঁকে কোনও বড় পদ দেওয়া হয়নি দলের তরফ থেকে। তৃণমূলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় শঙ্করকে সরিয়ে বিপ্লবকে চেয়ারম্যানের পদ দেন। অন্যদিকে বিপ্লবের হাত ধরে তৃণমূলে (TMC) আসা কংগ্রেস বিধায়ক গৌতম দাসকে জেলা সভাপতি করা হয়। যা নিয়ে দীর্ঘদিন ‘ঠান্ডা লড়াই’ চলেছে দুইপক্ষে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতির পদ থেকে অপসারিত হন সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। নির্বাচন মিটলেও বিরোধ মেটেনি। শনিবার সেই বিরোধের ছবিই ফের স্পষ্ট হয়ে উঠল। যদিও, এ বিষয়ে এখনও নীরব জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

শনিবার, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যেই  ভার্চুয়ালি বক্তব্য রেখেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালেই, শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছিলেন মমতা ও অভিষেক।

টুইটে মুখ্য়মন্ত্রী লেখেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে আমি সকল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানাই। আমি আপনাদের আন্তরিক নিষ্ঠা ও যোগদানে গর্বিত।  আজ, সকল পড়ুয়াদের কাছে  অনুরোধ গণতন্ত্রের শোষণকারী শক্তির বিরুদ্ধে এগিয়ে আসুন। আসুন সকলে মিলে লড়াই করি।”

টুইট করেছেন অভিষেকও। তিনি লিখেছেন, “আমাদের ছাত্র সদস্য়দের অদম্য উত্‍সাহকে কুর্নিশ। আমার বিশ্বাস আপনারা সকলেই আপনাদের ঈপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন।” আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে রাজ্যে প্রথম আটক, সিবিআই-এর জালে নদিয়ার ২