ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে রাজ্যে প্রথম আটক, সিবিআই-এর জালে নদিয়ার ২

Post Poll Violence: গত ১৪ মে হৃদয়পুরে নিজের বাড়িতেই খুন হন ধর্ম মণ্ডল। অভিযোগ তীর ছিল তৃণমূলের দিকে। বাড়িতে ঢুকে ওই বিজেপি কর্মীর উপরে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা।

ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে রাজ্যে প্রথম আটক, সিবিআই-এর জালে নদিয়ার ২
সিবিআই
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 28, 2021 | 2:47 PM

নদিয়া: ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস (Post Poll Violence) মামলায় শুক্রবারই নদিয়ায় স্পট ভিজিট সেরেছিলেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। শনিবারই, হৃদয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে নিহত বিজেপি কর্মী ধর্ম মণ্ডলের মৃত্যুমামলায় সিবিআইয়ের জালে আটক দুই। আটক হওয়া অসীমা ঘোষ ও বিজয় ঘোষকে চাপড়া থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় এই প্রথম রাজ্য় আটক ২।

গত ১৪ মে হৃদয়পুরে নিজের বাড়িতেই খুন হন ধর্ম মণ্ডল। অভিযোগ তীর ছিল তৃণমূলের দিকে। বাড়িতে ঢুকে ওই বিজেপি কর্মীর উপরে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। তারপর তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে। সেখানেই গত ১৬ মে মৃত্যু হয় ধর্মের।

পারিবারিক অভিযোগের  ভিত্তিতে পুলিশ প্রাথমিকভাবে গ্রেফতার করে ৭ জনকে। তবে পরিবারের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য কালু শেখের নেতৃত্বে ওই হামলা হলেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। এছাড়াও, অসীমা ঘোষ ও বিজয় ঘোষও এই খুনের ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ করেছিল মৃতের পরিবারের। এ নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছিলেন তাঁরা।

বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যের একাধিক জেলায় বিজেপি কর্মীদের খুনের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে বিজেপি কর্মীরা নিজেদের ঘরে ফিরতে পারছেন না, মহিলা বিজেপি কর্মীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। একাধিক জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছে। এর পরই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে।

গত ১৪ মে ধর্ম মণ্ডল-সহ চার বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ধর্ম মণ্ডলের বাড়িতে শুক্রবারই গিয়েছিলেন সিবিআইয়ের প্রতিনিধিরা। ফের শনিবার সেখানে যান তাঁরা। গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে ঢোকে সিবিআই। অভিযোগ, সেখানে তখন ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের ডাটা এন্ট্রির কাজ করছিল এক কর্মী ও নৈশ রক্ষী। সিবিআই সেখানে ঢুকে বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরা সে খবর জানার পরই গ্রামপঞ্চায়েত অফিসের সামনে জমায়েত করেন। সিবিআইয়ের গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় চাপড়া থানার পুলিশ বাহিনী। এরপরেই, অসীমা ঘোষ ও বিজয় ঘোষকে আটক করে  সিবিআই।

ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস (Post Poll Violence) মামলায় চার জোনে ক্যাম্প করে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। একটি ক্যাম্প দুর্গাপুরে। সেখান থেকে মূলত বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ কয়েকটি পশ্চিমের জেলার ভোট পরবর্তী মামলার তদন্ত করা হবে। একটু ক্যাম্প হচ্ছে উত্তরবঙ্গের জন্য। সেই ক্যাম্পের প্রস্তুতি কোচবিহারে। এই জেলা থেকে সব থেকে বেশি ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ এসেছে। কলকাতা থেকে ওত দূরে গিয়ে আক্রান্ত ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা সময় সাপেক্ষ। সে কথা মাথায় রেখেই তদন্তকারীরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাকি দুটি ক্যাম্প চলবে কলকাতাকে কেন্দ্র করে। কলকাতা সংলগ্ন কয়েকটি জেলার ভোট পরবর্তী মামলার তদন্ত করবে এই দুটি ক্যাম্প।

নদিয়ায় চাপড়ার হৃদয়পুর ছাড়াও ভোট পরবর্তী হিংসায় (Post Poll Violence) মৃত্যু হয় নদিয়ার কোতোয়ালি থানা এলাকার বিজেপি কর্মী পলাশ মণ্ডলের। অভিযোগ, গত ১৪ জুন পলাশ মণ্ডলকে বাড়িতে গুলি করে বোমা মেরে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় শুক্রবার নিহতের বাড়ির দেওয়ালে বোমা ও গুলি চিহ্ন থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। পলাশের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় দিল্লিতে সিবিআই-এর সদর দফতরে ৯টি এফআইআর রুজু করা হয়েছে। অর্থাত্‍ ৯টি এফআইআর-এর ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। আরও পড়ুন: নিহত বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশের মৃত্যু-মামলায় ‘অর্জুন গড়ে’ সিবিআই