North Bengal Medical College: শুধু সোহম নন, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নম্বর বেড়েছিল আরও দু’জনের, প্রকাশ্যে এল নাম
North Bengal Medical College: অধ্যাপকেরা লকারের চাবি পাঠান এক পিজিটি ছাত্রের কাছে। সেই পিজিটি আবার সুমন ভার্মাকে দিয়ে ট্যাবুলেশন শিট পাঠিয়ে দেন৷ সুমন এমবিবিএস পরীক্ষার ট্যাবুলেশন শিট নিয়ে এগোতেই তাঁকে ঘিরে ধরেন শাহিন সরকার, সাহিনুল ইসলাম, ঋতুরম্ভ সরকার। এরা তিন জনেই হাউজস্টাফ।
শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ‘থ্রেট কালচারে’ মূল অভিযুক্ত সোহম মণ্ডলের নম্বর বাড়িয়েছিল কে? তাঁকেই খুঁজে বের করল Tv9 বাংলা। Tv9 বাংলার ক্যামেরায় কী বললেন তিনি? শুধু সোহম মণ্ডল নয়, Tv9 বাংলার হাতে এসেছে বিস্ফোরক নথি। সেই নথি বলছে মোট তিন জনের নম্বর বেড়েছিল পরীক্ষায়। তাঁরা হলেন সোহম মণ্ডল, প্রান্তিক মণ্ডল ও সুদীপ্তা নন্দী।
প্রাক্তন টিএমসিপি ইউনিট সভাপতি সাহিন সরকার তখন হাউজস্টাফ হিসাবে সার্জারি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। আর যাঁর নম্বর বেড়েছিল, সেই সোহম মণ্ডল তখন ছিলেন টিএমসিপি ইউনিট সভাপতি। পরীক্ষায় খাতায় নম্বর বাড়ানোর চেষ্টা করেও সফল না হয়ে ট্যাবুলেশনে প্রাপ্ত নম্বর মুছে দিয়ে লেটার মার্কস পাইয়ে দেওয়া হয় সোহমকে।
কিন্তু কীভাবে?
পিজিটি সুমন ভার্মা বাড়িয়েছিলেন সোহমের নম্বর। আজ তিনি জানান, এই সার্জারি ডিপার্টমেন্টেই হাউজস্টাফ শাহিন। ফলে তিনি অবাধেই ঢুকতেন বিভাগীয় প্রধানের ঘরে। সেই দিন, বিভাগীয় প্রধান ও অন্য অধ্যাপকরা ছুটিতে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই ঊর্ধ্বতন কর্তাদের তরফে চেয়ে পাঠানো হয় ট্যাবুলেশন শিট।
অধ্যাপকেরা লকারের চাবি পাঠান এক পিজিটি ছাত্রের কাছে। সেই পিজিটি আবার সুমন ভার্মাকে দিয়ে ট্যাবুলেশন শিট পাঠিয়ে দেন৷ সুমন এমবিবিএস পরীক্ষার ট্যাবুলেশন শিট নিয়ে এগোতেই তাঁকে ঘিরে ধরেন শাহিন সরকার, সাহিনুল ইসলাম, ঋতুরম্ভ সরকার। এরা তিন জনেই হাউজস্টাফ।
টিভি৯ বাংলায় সুমন বলেন, “আমায় ঘিরে নিয়েছিল ওরা। অকথ্য গালাগালি করা হয়। প্রণনাশের হুমকি দিয়েছিল।” কারা? সে প্রশ্নের উত্তরে সুমন বলেন, “লিখিতভাবে সব জানিয়েছি।”
সুমন ভার্মা যে লিখিত অভিযোগ করেছেন, তাতে থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত সাহিন, সাহিনুলরা। কলেজ কাউন্সিল মোট তিন হাউজস্টাফ, ৫ ডাক্তারি পড়ুয়া এবং সোহমকে টারমিনেট করেছে।
সার্জারির বিভাগীয় প্রধান নীশিথ রঞ্জন মল্লিক বলেন, “পরীক্ষা শেষের পর আমরা ছুটিতে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। হঠাৎ ট্যাবুলেশন শিট চেয়ে পাঠানো হয়। লকারের চাবি পাঠাই দায়িত্বশীল পিজিটির কাছে। সেই পিজিটি সুমনকে ট্যাবুলেশন দিয়ে তা ঊর্ধ্বতন কর্তাদের কাছে পাঠান। সেই সময়েই কার্যত শিট ছিনিয়ে নিয়ে এসব করা হয়। লেটার মার্কস পেয়ে যান সোহম।”
সুমন আপাতত এই সার্জারি বিভাগেরই ইনটার্ন। তাঁকে সাসপেন্ড করার পাশাপাশি তাঁর খাতা পুনর্মুল্যায়ন করা এবং তার রেজিস্ট্রেশন থাকবে কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মেডিক্যাল কাউন্সিলকে অনুরোধ করেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ।
সুমনের অভিযোগের ভিত্তিতেই, ডিন, সহকারি ডিন-সহ এক আরএমও’র পদত্যাগ করেছেন। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধেও এই চক্রে সামিল থাকার অভিযোগ করেছেন সুমন। অধ্যক্ষ বলেন, “আমার বিরুদ্ধে তদন্তের সুপারিশ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে চিঠি দিয়েছি।”