Siliguri Land Smuggling Case: শিলিগুড়িতে জমি মাফিয়াচক্রে নাম জীবেশ সরকারের! অভিযোগ মানতে চাইছে না খোদ তৃণমূলের একাংশ

Siliguri Land Smuggling Case: সিপিএমের বক্তব্য, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে তাঁদের দলের নেতাদের। পুলিশ কোনও তদন্ত না করেই কীভাবে একটি রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে নিল?

Siliguri Land Smuggling Case: শিলিগুড়িতে জমি মাফিয়াচক্রে নাম জীবেশ সরকারের!  অভিযোগ মানতে চাইছে না খোদ তৃণমূলের একাংশ
জীবেশ সরকারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 03, 2022 | 5:33 PM

শিলিগুড়ি: শিলিগুড়িতে জমি মাফিয়াদের ধড়পাকড়। এই তালিকায় নাম জড়াল প্রবীণ সিপিএম নেতা জীবেশ সরকারের। জমি মাফিয়ারাজের অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে দুই সিপিএম নেতাকে। এই ঘটনায় বড়সড় চক্রান্তের অভিযোগ তুলছে সিপিএম। জীবেশ সরকারকে গ্রেফতার করলে বড় ধরনের আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বাম নেতৃত্ব। রাজনৈতিক শোরগোল শিলিগুড়িতে।

জমি আসলে নদীর চর! এ অভিযোগে আগেই সরগরম হয়েছিল শিলিগুড়ি। মহানন্দা নদীর চরই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকায়। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই জমি মাফিয়াদের ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছে। নদীর চরেই তৈরি হচ্ছে বেআইনি সেতু। কিছু দিন আগেই স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করেছিল TV9বাংলা। প্রাথমিক পর্যায়ে ছানবিন করতে গিয়ে জানা যায়, নদীর চর লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফে বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে আসে। প্রতিবাদ করলে মাফিয়াদের তরফে হুমকি মিলছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। তাহলে প্রশ্ন, মাফিয়ারা এত সাহস কোথা থেকে পায়? অবৈধ কারবারের পিছনে নিশ্চয় কোনও বড় মাথার মদত রয়েছে, গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল স্থানীয় মহলে।

শুধু তাই নয়, ক্রেতাদের জন্য বোল্ডার ফেলে ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করে লোহার সেচুও তৈরি করে ফেলেছিল মাফিয়ারা। সে ক্ষেত্রে অবশ্য তাঁরা ঢাল বানিয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের চাহিদাকেই। কিন্তু এই নির্মাণ যে অবৈধ, অভিযোগ ওঠে স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফেই। সেতু তৈরির খবর যায় খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে।

মাফিয়াদের পর্দা ফাঁস করতেই নড়েচড়ে বসে শিলিগুড়ি প্রশাসন। গত কয়েকদিনে ৪০ জন জমির কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিলিগুড়ির রাজনৈতিক মহলে তুমুল চর্চা চলছিলই। এরই মধ্যে দিন দুয়েক আগে অংশুমান বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি নিজেকে পৌর নিগমের ইঞ্জিনিয়ার পরিচয় দিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি থানায় ব্যক্তিগতভাবে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর বক্তব্য, মহানন্দার চর দখল হচ্ছে। সেই ঘটনায় কারা কারা জড়িত, একটি নামের তালিকাও তিনি থানায় জমা দেন। সেই তালিকাতেই শেষ নাম ছিল জীবেশ সরকারের।

এবার প্রশ্ন কে এই অংশুমান বিশ্বাস? জানা যাচ্ছে, বাম থেকে তৃণমূলে যাওয়া কাউন্সিলর তাপস চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অংশুমান পৌরনিগমের এক আধিকারিক। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে সিপিএম নেতাদের নামে জমি মাফিয়ায় যুক্ত থাকার অভিযোগ এনেছেন। তাতেই প্রাক্তন জেলা সম্পাদক ও বর্তমানে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বর্ষীয়ান বাম নেতা জীবেশ সরকারের নাম রয়েছে।

সিপিএমের বক্তব্য, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে তাঁদের দলের নেতাদের। পুলিশ কোনও তদন্ত না করেই কীভাবে একটি রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে নিল? ইতিমধ্যেই পুলিশ কমিশনারকে স্মারকলিপি দিয়েছেন স্থানীয় বাম নেতৃত্ব। ঘটনায় মঙ্গলবার বিকালে শিলিগুড়িতে মহা মিছিলের ডাক দিয়েছে বামেরা। রাস্তায় নেমে আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে অভিযোগকারী অংশুমান বিশ্বাসকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

প্রশ্ন হচ্ছে, তবে কি সত্যিই এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে? এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অলোক চক্রবর্তী অবশ্য বলছেন অন্য কথা। তাঁরও বক্তব্য, “অংশুমান বিশ্বাস দলের কেউ নন। জীবেশবাবুকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতেই পারে। তবে এই ধরনের অভিযোগকে মান্যতা দিই না। অংশুমানকে চিনি না, পুলিশ তদন্ত করুক কী বিষয়টা হয়েছে।”