SSC Verdict: ‘ভয় পাচ্ছেন বাবা-মা, যদি কিছু করে ফেলি…’, চাকরি হারিয়ে চোখ ছলছল চন্দননগরের শিক্ষকের
SSC Verdict: কার্তিকের কথায়, তালিকায় গোলমাল নিশ্চয়ই ছিল। আদালতের রায় নিয়ে কিছু বলারই নেই। কিন্তু তারপরও কিছু থেকে যায়। ছলছল চোখে কার্তিক ধাড়া বলেন, "যারা কিছু করেনি, তাদের কথা কোর্ট একবারও ভাবল না? আমার তো মাথাই কাজ করছে না, কী করব। এখন মনে হচ্ছে আগের চাকরিটা না ছাড়লে আজ আমার এরকম অবস্থা হতো না।"
কার্তিক ধাড়ার কথায়, “খুব বড় ধাক্কা। আমরা যারা যোগ্য, তাদের কাছে তো এই রায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো। সবাইকে বাতিল করে দিল, তাতে তো আমরাও খাদে পড়লাম। কী করব তো বুঝতেই পারছি না। এবার লোকজনও অন্য চোখে দেখবে আমাদের। কেউ তো বিশ্বাসই করবে না আমরা যে যোগ্য।”
বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা। বাবার সেলুন আছে। কার্তিক গ্র্যাজুয়েশন করার পর বাবা বলেছিলেন, এবার একটু কাজবাজের খোঁজ করতে। সেলুন চালিয়ে আর তিনি একা এতকিছু টানতে পারছেন না। কার্তিকের কথায়, “আমি সে সময় টিউশন করে পড়াশোনা করি। এরপর এম.কম করে প্রাথমিকের ফর্ম ফিলআপ করে হুগলির হরিপালে একটা স্কুলে চাকরিও পাই। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে জয়েন করি।”
কার্তিকের আক্ষেপ সেই চাকরি যদি চালিয়ে যেতেন, আজ এমন দিন দেখতে হতো না। তাঁর কথায়, “তালিকায় নিশ্চয়ই কিছু গোলমাল হয়েছে। তা নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু যারা কিছু করেনি, তাদের কথা কোর্ট একবারও ভাবল না। আমার তো মাথাই কাজ করছে না, কী করব। এখন মনে হচ্ছে আগের চাকরিটা না ছাড়লে আজ আমার এরকম অবস্থা হতো না।” পরিবারের চিন্তা, সঙ্গে আবার লোনও নিয়েছেন।
সোমবার আদালতের রায় শোনার পরই বারবার চন্দননগরের বাড়ি থেকে ফোন যাচ্ছে ছেলের কাছে। কার্তিক বুঝতে পারছেন, অসহায় বাবা-মা ভয় পাচ্ছেন। পাছে ছেলে কিছু করে বসেন। কার্তিক তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, ‘ভয়ের কিছু নেই’। সোমবার কোর্টরুমে কলমের খোঁচায় যে ভাগ্য লেখা হল, সেই ভাগ্যর সঙ্গে যুঝতে তিনি তৈরি হচ্ছেন।
কার্তিক বলেন, এম.কম করে প্রাথমিকে চাকরি করলেও পরে এডুকেশনে আবার এম.এ করেন। তাঁর কথায়,”কমার্সে আমি দু’বার নেট ক্লিয়ারও করি। ইচ্ছা ছিল কলেজেও পড়াব। বিভিন্ন পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপ করতাম। ২০১৬তে এসএসসির ফর্ম বেরোল। আমিও লিখিত পরীক্ষায় বসি। ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন, ভাইভা সবেতেই বসি। ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আমি প্রাথমিকের চাকরি ছেড়ে হাইস্কুলে যোগ দিই।”
কার্তিকের কথায়, তালিকায় গোলমাল নিশ্চয়ই ছিল। আদালতের রায় নিয়ে কিছু বলারই নেই। কিন্তু তারপরও কিছু থেকে যায়। ছলছল চোখে কার্তিক ধাড়া বলেন, “যারা কিছু করেনি, তাদের কথা কোর্ট একবারও ভাবল না? আমার তো মাথাই কাজ করছে না, কী করব। এখন মনে হচ্ছে আগের চাকরিটা না ছাড়লে আজ আমার এরকম অবস্থা হতো না।”