Mamata Banerjee: ‘উত্তরবঙ্গের সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক, দু’মাসে একবার আসি’, বিজয়া সম্মিলনীতে বললেন মমতা

CM Mamata in North Bengal: বুধবার শিলিগুড়ির কাওখালি গ্রাউন্ডে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়ে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Mamata Banerjee: 'উত্তরবঙ্গের সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক, দু'মাসে একবার আসি', বিজয়া সম্মিলনীতে বললেন মমতা
ছবি: নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 19, 2022 | 4:15 PM

শিলিগুড়ি: সোমবার একাধিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তরবঙ্গে পৌঁছেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দুর্গাপুজোর বিসর্জনের সময়ে মাল নদীতে হড়পা বানে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি সরকারি সভা থেকে নিহতদের পরিবারকে অর্থসাহায্য তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার শিলিগুড়ির কাওখালি গ্রাউন্ডে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়ে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়িতে ঠিক কোন কোন বিষয় মমতার বক্তব্যে উঠে এসেছে, তা এক নজরে দেখে নেওয়া যাক…

  1. সকলে শুভ বিজয়া, নবি দিবস ও কালীপুজোর আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজের বক্তব্য শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্গাপুজোর ইউনেস্কো স্বীকৃতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে মমতা বলেন, “উত্তরবঙ্গে খুব ভাল দুর্গাপুজো হয়েছে। উত্তরবঙ্গের ৮টি জেলার মধ্যে প্রত্যেকটি থেকে ৯৬টি করে পুজো কমিটিতে বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান দেওয়া পাশাপাশি মোট ৬ হাজার ক্লাবকে ৬০ হাজার টাকা করে অর্থ সাহায্য করা হয়েছে। আমরা এখনও পুজোর মধ্যেই রয়েছি।”
  2. স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বাংলা বক্তব্য রাখতে রাখতে হিন্দিতে মমতা বলেন, “দীপাবলি, কালীপুজো আমাদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ছট পুজোও আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ছট পুজো, কালীপুজোর জন্য আমরা ২দিন করে ছুটি দিই। চা বাগানে আমার যেসব ভাইবোনরা কষ্ট করে কাজ করেন, তাদের আমি সম্মান জানাই।”
  3. মুখ্যমন্ত্রীর মুখে হড়পা বান ও তাঁকে মৃতদের পরিবার নিয়ে মন্তব্য শোনা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মালবাজারে হড়পা বানে মৃতদের বাড়িতে আমি গিয়েছিলাম। সবাইকে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ও চাকরির বন্দোবস্ত করা হয়েছে এবং যাঁরা উদ্ধার কাজে সাহায্য করেছেন, তাদের ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ওই সময় বিসর্জনের জন্য সবাই ব্যস্ত ছিল, কিন্তু আমার ভাইবোনদের মৃত্যুতে আমি শোকাহত। আমি সরকারের মন্ত্রী থেকে শুরু করে আমাদের সকলকে সেখানে পাঠিয়েছিলাম। সবাই সাধ্যমতো সেখানো ভাল কাজ করেছে। আমি তাদেরও ধন্যবাদ জানাই।” আসন্ন কালীপুজো, ছটপুজোতে উত্তরবঙ্গের বাসিন্দাদের সাহায্য চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
  4. বিভিন্ন মহল থেকে উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবি উঠেছে। কৌশলে সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গের মানুষকে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, “উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ হলেও আমরা সবাই পশ্চিমবঙ্গে থাকি এবং এখানকারই বাসিন্দা। আমি উত্তরবঙ্গে সবথেকে বেশি আসি। দু’মাসে অন্তত একবার উত্তরবঙ্গে আসি। দক্ষিণবঙ্গের মতো উত্তরবঙ্গের মানুষদের সঙ্গেও আমার অত্যন্ত সুসম্পর্ক। উত্তরবঙ্গে আমরা অনেক উন্নয়নের কাজ করেছি। ব্রিজ, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে, পর্যটনের উন্নতি হয়েছে। আমরা চাই, উত্তরবঙ্গ নিজের পায়ে দাঁড়াক। দরকার হলে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের মতো উত্তরবঙ্গে বাণিজ্য সম্মলেন আয়োজন করা যেতে পারে।”
  5. প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও থানার পুলিশ আধিকারিকদের মমতার নির্দেশ, মানুষের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে নজর করে রাখতে হবে এবং কোনও অভিযোগ পেলে যেন তা খতিয়ে দেখা হয়। পর্যটনের ওপরও বাড়তি নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
  6. মমতার মুখে এদিন সিঙ্গুর থেকে টাটা বিদায়ের প্রসঙ্গ শোনা গিয়েছে এবং এই নিয়ে সিপিএমকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কেউ কেউ বাজে কথা রটিয়ে বেড়াচ্ছে যে টাটাকে আমি তাড়িয়েছি। টাটাকে আমি না, সিপিএম তাড়িয়েছি। জোর করে লোকের জমি নেওয়া হয়েছিল, এত জমি থাকতে এমনটা কেন হবে? আমরা কখনও অন্য কারও জমি কেড়ে নিইনি। আমরা শিল্পপতিদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ করি না। আমরা চাই সব শিল্পপতি এখানে বিনিয়োগ করুক এবং কর্মসংস্থান হোক। হাসিমারাতে আমারা বিমানবন্দর তৈরির চেষ্টা করছি। বাগডোগরার পাশাপাশি আরও ৩-৪টে বিমানবন্দর তৈরি হবে। আমি ঢেলে কর্মসংস্থান চাই। কেউ চাইছে না, তাই কর্মসংস্থানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা কারও চাকরি খাইনা, চাকরি খাবও না।”