ডায়ারিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, বেড না পেয়ে ফিরছেন অনেকে
গতকাল থেকে প্রায় শতাধিক রোগী আক্রান্ত হয়েছে ডায়ারিয়ায়। দু'জনের মৃত্যুও হয়েছে। যদিও তাঁদের ডায়ারিয়ায় মৃত্যু হয়নি বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের।
কামারহাটি: ক্রমশ বাড়ছে ডায়ারিয়ার প্রকোপ। গতকালের পর আজও কামারহাটি এলাকার বহু মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আজ ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই নিয়ে ডায়ারিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৩। গতকালই দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। এ ছাড়া আজ সকালেই আরও ৩০ জন আক্রান্ত হাসপাতালে যান। তাঁদের মধ্যে অনেককেই বেড দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে কামারহাটিতে পৌঁছেছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে অনেককে ওষুধ দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবারই এই ঘটনার কথা প্রথম প্রকাশ্যে আসে। গতকালই কামারহাটি পুরসভা এলাকায় অন্তত ৬৮ জন একই উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে। প্রত্যেকেই মূলত বমি, পেটে ব্যাথায় ভুগছিলেন। কামারহাটি পুরসভা সূত্রে খবর, জল থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ১,২,৩, ৪, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুরসভার তরফে নল বাহিত জল খেতে নিষেধ করা হয়েছে পুরসভার তরফে। জলের নমুনা পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছে। যদিও এখনও সেই রিপোর্ট আসেনি। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে যাওয়ায়, সেই সম্ভাবনাই ক্রমশ প্রকট হচ্ছে।
এলাকাবাসীরা অনেকেই অভিযোগ করেছেন হাসপাতালে গিয়েও ফিরতে হচ্ছে তাঁদের। আজ মোট ১৮ জনকে সাগর দত্ত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কিছু ওষুধপত্র দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক রোগীকে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। পুরসভার কলের জল যাতে তাঁরা না খান, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে।
তবে গতকাল যে দু’জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল, তাঁদের ডায়ারিয়ায় মৃত্যু হয়নি বলে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে। দু’জনের ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে কিডনি কাজ না করায় মৃত্যু হয়েছে। বস্তুত ডায়ারিয়ার প্রকোপই মানতে নারাজ স্বাস্থ্য দফতর। এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিস্তর জলঘোলা। পরিবারের দাবি, ওই দু’জনের কিডনিজনিত কোনও সমস্যা আগে ছিল না। ডায়ারিয়ার উপসর্গ নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তাঁরা।
সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে আচমকাই ডায়ারিয়া সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় কামারহাটির ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। এলাকাবাসীর অনুমান, বর্ষা হলেই জল জমে যায় এলাকায়। তখন প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, প্রবল বৃষ্টিপাতে জল জমায় সেখান থেকে কোনওভাবে পানীয় জলেও ডায়ারিয়ার জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা জানিয়ে দ্বিতীয় বিবৃতি দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। তাতে বলা হচ্ছে, ল্যাবরেটরি ডায়াগনসিসের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে নাইসেড থেকে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগেই স্বাস্থ্য দফতর বিবৃতি দিয়ে দিল, ডায়ারিয়ায় মৃত্যু হয়নি ওঁদের কারোরই। কী ভাবে এতটা নিশ্চিত হওয়া গেল, সেখানেই উঠেছে প্রশ্ন। আরও পড়ুন: কেন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে বোমাবাজি? কারণ দর্শাল বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট