ভোটপর্ব মিটতেই ‘ঘরওয়াপসির’ হিড়িক, পুরনো দলে ফিরতে চান ইটাহারের প্রাক্তন বিধায়ক

এদিন, বিধায়ক আরও বলেন, তাঁর পুরনো দল ও 'দিদির' প্রশংসা করে আরও বলেন, "আমার পরিবার জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। আমার কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা আদর্শ। আমি তো দেখছি, এই করোনায় দিদি কীভাবে কাজ করছেন। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জন্যও সতর্ক পদক্ষেপ করেছেন। আমি বরাবরই অনুপ্রাণিত হই দিদিকে দেখে। যে ভুল করেছি তার জন্য ক্ষমা চাইছি।"

ভোটপর্ব মিটতেই 'ঘরওয়াপসির' হিড়িক, পুরনো দলে ফিরতে চান ইটাহারের প্রাক্তন বিধায়ক
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: May 23, 2021 | 6:59 PM

উত্তর দিনাজপুর: ভোটপর্ব মিটতেই ‘ঘরওয়াপসির’ ঢেউ! নির্বাচন (West Bengal Assembly Election 2021) আবহে কেউ টিকিট না পেয়ে কেউ বা টিকিট পাওয়ার আশায় অন্য দলে গিয়েছিলেন। একুশের বঙ্গ ভোটে বাংলা জুড়ে সবুজ ঝড়ের পর এ বার পুরনো ঘরেই ফিরতে চাইছেন অনেকে। গত শনিবারই দলে ফিরতে চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন পোস্ট লিখেছিলেন সাঁতরাগাছির প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সোনালী গুহ। ভোটের সময় বিধায়কের টিকিট না পেয়েই বিজেপিতে (BJP) গিয়েছিলেন তিনি। ভোটপর্ব মিটতেই এ বার ‘ঘরে ফেরার পালা’। সেই ‘ফেরার পালা’তেই যোগ দিলেন ইটাহারের প্রাক্তন বিধায়ক অমল আচার্য্য। নির্বাচন আবহে তিনিও দল ছেড়েছিলেন। এ বার ফের সেই পুরনো দলেই ফিরতে চাইছেন অমল।

এদিন, ইটাহারের প্রাক্তন বিধায়ক বলেন, “এই দলটার সঙ্গে আজ থেকে নয়,  ২০১৬-র আগে থেকে আমি তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলাম। ২০১৬তে  তৃণমূল যখন শক্তিশালী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে তখনও আমি তৃণমূলের সঙ্গী। কিন্তু, ২০২১-এ কী হল জানিনা, আমি বিধায়ক পদপ্রার্থীর তালিকায় ছিলাম না। ভারাক্রান্ত মনে সেদিন বসেছিলাম। সেদিন, দিদির কাছে সুবিচার চেয়েছিলাম। দিদি বলেছিলেন জানাবেন। কিন্তু উত্তর আসেনি। শেষে , কিছু নেতা কর্মী বন্ধুদের উৎসাহে আমি বিজেপিতে যোগদান করি। কিন্তু তা আসলে আমার ভুল ছিল। আমার সেই ভুল ভেঙেছে। আমি দিদির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।”

এদিন, বিধায়ক তাঁর পুরনো দল ও ‘দিদির’ প্রশংসা করে আরও বলেন, “আমার পরিবার জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। আমার কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা আদর্শ। আমি তো দেখছি, এই করোনায় দিদি কীভাবে কাজ করছেন। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জন্যও সতর্ক পদক্ষেপ করেছেন। আমি বরাবরই অনুপ্রাণিত হই দিদিকে দেখে। যে ভুল করেছি তার জন্য ক্ষমা চাইছি। আমি ইতিমধ্যেই দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে জানিয়েছি। তাঁরা আমায় কাজ করার অবকাশ দিলে আমি নিশ্চই দলের হয়ে কাজ করব।” যদিও, বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেছেন, “এখনও দলত্যাগের কথা অমলবাবু কিছু বলেননি। যদি উনি দলত্যাগ করেন তবে তা আগে দলকে জানাতে হবে। এ বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা দলই নেবে। ”

উল্লেখ্য, দলবদলু নেতাকর্মীদের নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি (BJP)। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের আশঙ্কা এভাবে দলবদলুদের ‘ঘরওয়াপসির’ ফল ভুগতে হবে বিজেপিকে। দলে একবার ফাটল ধরা শুরু করলে তার প্রভাব পড়বে নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে। বস্তুত, বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর বিজেপির একমাত্র টার্গেট তৃৃণমূলস্তরীয় কর্মীদের ঘাসফুলে যাওয়া আটকানো। সেখানে একের পর এক দলবদলুর এভাবে ‘বেসুরো’ বাজা ভালভাবে নিচ্ছেন না রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ।

এহেন দলত্যাগীদের অবশ্য আর গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল (TMC)। তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছেন, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যারা গেছেন তাঁরা অন্তত ছ’মাসের আগে আর দলে আসতে পারবেন না। তাঁর কথায়, “এক্ষুনি যদি তাঁদের দলে নেওয়া হয়, তাহলে যাঁরা বিজেপির সঙ্গে লড়াই করে ভোটে জিতিয়েছেন, সেই দলীয় কর্মীরা হতাশ হবেন। দলকেও তাই বলব ছয় মাসের আগে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যেন জায়গা না দেওয়া হয় এঁদের।”

আরও পড়ুন: ‘রক্তচোষা রাজ্যপাল, গণতন্ত্রের কসাই’, ধনখড়কে কড়া আক্রমণ কল্যাণের