Chinsurah fraud case: আঙুলের ছাপ নকল করে অভিনব কায়দায় চলত ব্যাঙ্ক প্রতারণা, বাংলায় সক্রিয় উত্তরপ্রদেশের গ্যাং
Chinsurah: জানা গিয়েছে, সারাদিন ঘর থেকে তাঁরা বেরোত না বেশির ভাগ সময় শুধু রাতেই তাদের দেখা যেত। এবং তারা ভিন রাজ্য থেকে এসেছে।
চুচুঁড়া: প্রথমে নানা অছিলায় চলত নথিপত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ। তারপর সেই একবার তথ্য হাতে পেলেই হল। গ্রাহক বুঝতেই পারত না তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কখনও চলে যাচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এক অভিনব করে দলিলে থাকা আঙুলের ছাপ নকল করে নিত তারা। আর গোটা ঘটনার পিছনে রয়েছে উত্তরপ্রদেশের গ্যাং এবং ব্যাঙ্ক প্রতারণা চক্র। শেষমেশ গোটা ঘটনা ধরা পড়ল চুঁচুড়া থানার হাতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের সরকারের জমি বাড়ি বিক্রির একটি নিজস্ব ওয়েব সাইট (upigrs.gov.in) রয়েছে। সেখানে গ্রাহত চাইলে জমি-বাড়ি বিক্রি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পেয়ে থাকেন এবং দিয়েও থাকেন। জানা গিয়েছে, সেখান থেকেই তথ্য সংগ্রহ করত প্রতারকরা। ওই ওয়েবসাইট থেকে প্যান নম্বর, আধার নম্বর, আঙুলের ছাপ নিয়ে নিত তারা। তারপর সেগুলিকে ফটোশপে নকল বানিয়ে ‘পে ওয়ার্ল্ড নামে একটি অ্যাপে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে গ্রাহকদের ব্যাঙ্কের সমস্ত তথ্য সংযোগ করে নিয়ে নিত।
একজন গ্রাহকের কতগুলি অ্যাকাউন্ট আছে, তাতে কত টাকা আছে, তা জেনে নিয়ে সেই টাকা নিজেদের ফেক অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিত। এরপর এটিএম এর মাধ্যমে সেই টাকা তুলে নিত। এমনকী মৃত ব্যক্তির নামে অ্যাকাউন্ট তৈরি করত ওই প্রতারকরা।
এরপর চুঁচুড়া থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায়, চারজন লোক একটি বাড়িতে ভাড়া এসেছে সম্প্রতি।তাঁদের আচরণ সন্দেহ জনক। জানা গিয়েছে, সারাদিন ঘর থেকে তাঁরা বেরোত না বেশির ভাগ সময় শুধু রাতেই তাদের দেখা যেত। এবং তারা ভিন রাজ্য থেকে এসেছে। এলাকার লোকজনের থেকেও পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্তরা ব্যান্ডেল চার্চ সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন এটিএম থেকে টাকা তুলত। এই সব সন্দেহ হওয়ার পর রবিবার সকালে পুলিশ সেই বাড়িতে তল্লাশী চালায়।অভিযুক্তদের নাম প্রদীপ সাহানী, সদানন্দ শ্রীবাস্তব(মনু),মনোজ কুমার, ও শিবম গুপ্তা। এরা উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর ও কুশিনগর জেলার বাসিন্দা। ধৃতদের আজ চুঁচুড়া আদালতে পাঠানো হয়।
এলাকার বাসিন্দা তারক বিশ্বাস বলেন, “গত ১০ ফেব্রুয়ারী ব্যান্ডেল ডন বসকো স্কুলের বিপরীতে একটি বাড়ি ভাড়া নেয় ছয় হাজার টাকায়। তারা জানায় অনলাইন ব্যবসা করেন। পুলিশ জানতে পেরে রেড করে। ওদের ঘর থেকে টাকা, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। এর পাশাপাশি অনেকেরই অ্যাকাউন্টের ডিটেলস, দলিলের তথ্য পায় পুলিশ। বেশ কিছু নকল পরিচয় পত্র, নকল আঙুলের ছাপের রবার মোহর, এটিএম কার্ড, পাশবইও উদ্ধার হয়। গত কয়েকদিনে চার লাখ টাকা প্রতারণা করে অভিযুক্তরা। যা তথ্য উদ্ধার হয়েছে তা থেকে পুলিশের অনুমান তিনমাসে দু’কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা ছিল গ্যাংটির।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ,মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয় রয়েছে এই গ্যাং।