Chandannagar lights: চন্দননগরে খুলল মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করা ‘আলো হাব’, ১৪ জন বাদে বাকি শিল্পীদের দেখাই মিলল না
Chandannagar lights: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৭ সালে ১ জুন তারকেশ্বরে প্রশাসনিক সভা থেকে আলো হাব তৈরি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন।
চন্দননগর: প্রায় দেড় বছর আগে চন্দননগরে (Chandannagar) আলো হাবের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এতদিন পরও ঘরের টেন্ডারের জন্য উৎসাহী নন আলোক শিল্পীরা। সোমবার চন্দননগর জ্যোতিরিন্দ্রনাথ সভা গৃহে ঘটা করে হাবের ঘর বিতরণ অনুষ্ঠান করেন রাজ্যের মন্ত্রী ও আধিকারিকরা। হাতেগোনা কয়েকজন আলোক শিল্পী থাকলেও অধিকাংশ আলোক শিল্পীই হাজির ছিলেন না এদিন। চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে আলোক শিল্পীর সংখ্যা প্রায় ২৫০ জন। আলোক শিল্পী সংগঠনের সদস্যের সংখ্যা ১১০ জন। কিন্তু এদিন দেখা গেল মাত্র ১৪ জন আলোক শিল্পীকে। তাঁর মধ্যে দুজন শিল্পী চন্দননগরের বাইরের বলে জানা গিয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ, আলোক শিল্পীদের জন্য আলো হাব করা হচ্ছে। তাহলে কেন এই অবস্থা? সরকারি আধিকারিক ও মন্ত্রীদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে বলেই দাবি করেছেন তাঁরা। যদিও মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের দাবি, এটা বাংলার আলোকশিল্পীদের জন্য।কয়েকদিনের মধ্যে সব ঘর ভরে যাবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৭ সালে ১ জুন তারকেশ্বরে প্রশাসনিক সভা থেকে আলো হাব তৈরি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই মতো ২০১৮ সালে চন্দননগরে কেএমডিএ পার্কের ভিতরে কাজ শুরু হয় আলো হাবের। কাজ শেষ হয় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ওই মাসের ৮ তারিখে আলো হাবের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আলোক শিল্পের উন্নতির জন্যই এই চিন্তা ভাবনা। প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যায়ে এই আলো হাব তৈরি করে রাজ্য সরকার। অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা জমা দেওয়া কথা বলা হয়েছিল, সেই অনুযায়ী ৩০২ স্কোয়ার ফুটের দোকান ঘর দেওয়ার কথা ছিল। মাসে মোট আড়াই হাজার টাকা করে দিতে হত আলোক শিল্পীদের, যার মধ্যে ১৮০০ টাকা ভাড়া, ৭০০ টাকা রক্ষণাবেক্ষণের খরচ। বিদ্যুতের বিল আলাদা দিতে হবে। সেই কারণে শিল্পীরা অনেকেই পিছিয়ে গিয়েছেন। এত টাকা কীভাবে পাবেন তাঁরা?
অন্যদিকে, আলোক শিল্পের কারিগরি শিক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, তা জানতেন না মন্ত্রী সহ জনপ্রতিনিধিরা। এই নিয়েও মন্ত্রী ও চন্দননগরের বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন প্রশ্ন তোলেন, প্রশিক্ষণের প্রচার নেই কেন? আলো হাবে আলোক শিল্পের জন্য দুটি তল ব্যবহার করা হবে। তিন তলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মানুষ কেউ জানে না।
এ বিষয়ে বিজেপি নেতা দীপাঞ্জন গুহ বলেন, ‘আলো হাব যেখানে করা হয়েছে, তা ব্যবসার মূল কেন্দ্রবিন্দু থেকে অনেকটাই দূরে। একে তো আয়ের উপায় নেই, তার ওপর গরিব আলো শিল্পীদের ওপর টাকার বোঝা চাপানো হয়েছে। চন্দননগর আলোর জন্য বিখ্যাত। সেখানে সরকারের সাবসিডি নিয়ে ভাবা উচিত ছিল। শুধুমাত্র গিমিক করা হয়েছে।’
পুরনিগমের সিপিআইএম কাউন্সিলর অশোক গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, ‘মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন নিজেই বলেছেন কারিগরি শিক্ষার ট্রেনিং হয়েছে, তিনি জানেন না। সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। আমার মনে হয় আলোক শিল্পীরা এই হাব থেকে বঞ্চিত হলেন।’
দোকান ঘর প্রাপক এক আলোক শিল্পী অসীম দে বলেন, অনেকে হয়ত উৎসাহী নয়।কিন্তু ভবিষ্যতে অনেকেই যাবেন। অনেকে টেন্ডার ফুলফিল করতে পারেননি, পরবর্তী সময়ে তাঁরাও পাবেন। আগামিদিনে একটা ভাল পরিবেশ তৈরি হবে।
ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ১৪ জন আলোক শিল্পীর হাতে ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হল। বাকি ৪৬ টারও টেন্ডার করা হবে। আলোকশিল্পীদের পরবর্তী প্রজন্ম এই প্রশিক্ষণ নিয়ে উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যার মাধ্যমে আলোক শিল্পের উন্নতি ঘটাবে।