Corona Death: প্রথম ডোজ়ের একমাস পর করোনা কেড়েছিল বৃদ্ধার প্রাণ, আটমাস পর এল তাঁর দ্বিতীয় টিকার শংসাপত্র!
Dankuni: "এটা কী করে হল? তাহলে করোনা টিকা ঠিক করে হচ্ছে কিনা কী করে বুঝব আমরা? আমার মা কি বেঁচে আছেন? যদি বেঁচে থাকেন তাহলে সরকারের কাছে আবেদন মাকে ফিরিয়ে দিন''।
হুগলি: করোনা টিকার (Corona Vaccine) প্রথম ডোজ নেওয়ার একমাস পর করোনা আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছিল বৃদ্ধার।মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে আট মাস। তার পর এলো তাঁর দ্বিতীয় টিকা পাওয়ার শংসাপত্র! তা হলে টিকা নিল কে? এ নিয়ে ডানকুনিতে শুরু হল বিজেপি ও তৃণমূলের চাপানউতোর। টিকা ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন স্থানীয়রাও।
ডানকুনি পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড সুভাষ পল্লীর বাসিন্দা ছিলেন সরস্বতী দাস (৬২)। চলতি বছরের ২৩ মার্চ করোনার প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এপ্রিল মাসেই জ্বরে পড়েন তিনি। জানা যায় কোভিড হয়েছে। এর পর ২৯ তারিখে করোনা আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। কিন্তু ২০ নভেম্বর গত হওয়া বৃদ্ধার ছেলের কাছে মেসেজ আসে সরস্বতী দাসের দ্বিতীয় ডোজ সম্পূর্ণ হয়েছে! সরকারি স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে শংসাপত্র সংগ্রহ করে নিতে বলা হয়। এমন মেসেজ পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই বিস্মিত বৃদ্ধার ছেলে বিরাজ দাস।
বিরাজ জানান, মার্চ মাসে কোভিশিল্ড টিকা দেওয়া হয় তাঁর মা-কে। পরের মাসেই অসুস্থ হয়ে উত্তরপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়ে মায়ের। তার পর তিনি মারাও যান। মায়ের ফোনের সিম কার্ডটা বিরাজ বাবু ব্যবহার করেন এখন। সেই নম্বরে শনিবার মেসেজ আসে যে দ্বিতীয় টিকা হয়ে গিয়েছে সরস্বতী দাসের। বিষয়টিতে বিস্মিত হন তিনি। ব্যাপারটা কী?
এর পর শংসাপত্র ডাউনলোড করে ছেলে দেখেন, মায়ের নাম আধার নম্বর মোবাইল নম্বর সব রয়েছে সেখানে। প্রথম ডোজ় হয়েছিল ২৩ মার্চ দ্বিতীয় ডোজ না নেওয়া সত্ত্বেও আট মাস পর শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে। তাঁর প্রশ্ন, “এটা কী করে হল? তাহলে করোনা টিকা ঠিক করে হচ্ছে কিনা কী করে বুঝব আমরা? আমার মা কি বেঁচে আছেন? যদি বেঁচে থাকেন তাহলে সরকারের কাছে আবেদন মাকে ফিরিয়ে দিন”।
এ নিয়ে বিজেপি ডানকুনি মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক গুঞ্জন চক্রবর্তীর অভিযোগ, প্রশাসনের যাঁরা টিকাকরণের দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের গাফিলতিতেই এসব হচ্ছে। তিনি বলেন, “কোভিশিল্ড দ্বিতীয় ডোজ সাধারণত ৮৪ দিন পর দেওয়া হয়। আর এখানে আটমাস পর দেওয়া হচ্ছে, তাও একজন মৃত ব্যাক্তিকে। এর পিছনে দুর্নীতি আছে। একজন মৃত ব্যাক্তির নামে ভ্যাকসিন ইস্যু হচ্ছে।”
অন্যদিকে ডানকুনি পুরসভার পুর প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য তথা তৃণমূল শহর যুব সভাপতি শম্ভু সাউ বলেন, “এটা সম্পূর্ণ যান্ত্রিক ত্রুটি বা ভুলবশত হয়েছে। আধার আর মোবাইল নম্বর নিয়ে ডেটা এন্ট্রি করার সময় ভুল হয়ে থাকতে পারে। বিজেপি অনেক কিছুই বলবে। ওরা তো পশ্চিমবঙ্গকে ভ্যাকসিনই দিতে চায়নি।”
আর চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ তনুজ দাসের বক্তব্য, “এরকম ত্রুটি এর আগেও দেখা গিয়েছে। এটা যান্ত্রিক ত্রুটি। অ্যাপে ডেটা এন্ট্রির ক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ায় এটা হচ্ছে। এর জন্য আমরা হাসপাতালে হেল্প ডেস্ক করেছি ত্রুটি সংশোধন করতে।”