Arambag: কাগজ আছে, ৯ বছর কাটলেও জমি, শাসকদলকেই কাঠগড়ায় তুলল বিরোধীরা
Arambag: সালটা ২০১৪ থেকে ২০১৫। গোঘাট ২ বিডিও অফিস থেকে দিন আনা দিন খাওয়া ভূমিহীন মানুষদের হাতে সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে পাট্টার কাগজ তুলে দেওয়া হয়েছিল।
আরামবাগ (হুগলি): সরকারি পাট্টার কাগজ আছে। তবে আট-ন’বছর হয়ে গেলেও জোটেনি জমি। আর জমি না থাকায় আবাস যোজনার তালিকাতেও ওঠেনি নাম। ফলত, অসহায়রা অসহায়ই রয়ে গেল। যার জেরে সরব বিরোধীরা। কিন্তু কাগজ থাকা সত্ত্বেও কেন জমি পাচ্ছেন না প্রাপকরা?
সালটা ২০১৪ থেকে ২০১৫। গোঘাট ২ বিডিও অফিস থেকে দিন আনা দিন খাওয়া ভূমিহীন মানুষদের হাতে সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে পাট্টার কাগজ তুলে দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ ৮-৯ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও পাট্টার জমি পাননি প্রাপকরা। রাস্তার ধারে কোনক্রমে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। এমনই ছবি উঠে এল টিভি৯ বাংলার ক্যামেরায়। অভিযোগ, কোথাও জমি দখল হয়ে আছে তো কোথাও জমি দেখাতে পারেনি প্রশাসন। সরকারি জমি প্রশাসনিকভাবে “নিজ ভূমি নিজ গৃহ” প্রকল্পে ভূমিহীনদের পাট্টা দিয়েছিল ভূমি দফতর। কিন্তু সেই পাট্টার কাগজ হাতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেরিয়েছেন প্রাপকরা। জোটেনি সরকারি পাট্টার জমি। পাট্টা প্রাপকরা বাধ্য হয়েই ‘নিজ ভূমি নিজ গৃহ’ প্রকল্পের দেওয়া পাট্টার কাগজ সযত্নে তুলে রেখেছেন।
পাট্টা প্রাপকদের মধ্যেই কয়েকজনের অভিযোগ, সরকারি জমির উপর বাড়ির ৬০০ টাকায় ভাড়া হিসাবে থাকেন। এইসব মানুষদের মধ্যে কেউ হোটেলে কাজ করেন, কেউ আবার কাগজ কুড়ানোর কাজ করেন। কেউ ট্রাক ডাইভার তো কেউ দিনমজুরের কাজ করেন। আর এই সমস্ত পরিবারগুলি পিডব্লিউডি রোডসের জায়গায় কোনক্রমে ত্রিপলের ছাউনির নিচে বসবাস।
তবে সরকারি পাট্টার জমি গেল কোথায় ? এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ২০১৪-১৫ বর্ষে গোঘাট ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৎকালীন সভাপতি ও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ছিলেন বর্তমান কামারপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তপন মণ্ডল বলেন যে, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। সরকারি জায়গা বেচাকেনা বিষয় নিয়ে কিছুই জানেন না। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই খতিয়ে দেখবেন। এই নিয়ে সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ভাস্কর রায় বলেন, “পাট্টা জমি বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব সরকারি দফতরের। পাট্টা জমি আমিন নিয়ে গিয়ে দাগ নম্বর ধরে জমি বুঝিয়ে দিতে হয়। এটা সরকারি নিয়ম। এখানে যারা পাট্টা পেয়েছে অথচ জায়গা পাচ্ছে না সেটা তো বীরভূমের লোক জানে না। তাঁরা দেখছে এত লোক পাট্টা পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী খুব দরদী। এই ভাবেই উনি রাজ্যটা চালাচ্ছেন। সব জায়গা তৃণমূলীরা ভাড়া দিয়ে দিয়েছে। সরকারকেই উত্তর দিতে হবে। সরকারি জায়গায় যদি ঘরের ভাড়া দিতে হয় সেই ভাড়াটা কে নিচ্ছে তাদের পরিচয় কি এটা জানতে হবে।”
বিজেপির ৪৪ নম্বর জেডপির মণ্ডল সভাপতি দোলন দাস এই প্রসঙ্গে বলেন, “বিগত ৮-৯ বছর ধরে তারা কাগজ বয়ে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন দফতরের সেই কাগজে সই আছে। এই অফিস থেকে ওই অফিস গিয়ে ওই মানুষগুলোর জুতা ছিড়ে যাচ্ছে। আসলে সব জায়গা তৃণমূল নেতাদের পকেটে গিয়েছে। জায়গার কাগজ আছে কিন্তু জায়গা নেই। পুরোটাই ভাওতা। নাটক চলছে।”
যদিও,গোঘাট ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরুণ কেওড়া বলেন, “আমি আপনাদের কাছেই শুনলাম। যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে আইন আইনের পথেই চলবে। আমি কয়েক মাস ব্লক সভাপতি দায়িত্ব পেয়েছি। সবকিছু খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। ”
অপরদিকে, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক আনন্দ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে টিভি ৯ বাংলার ক্যামেরায় তিনি কিছু জানাননি। তবে বিডিও দেবাশীস মণ্ডলের বক্তব্য, “এই ধরনের অভিযোগ আমি প্রথম শুনলাম। অভিযোগ জানাতে আসেনি কেউই। যাতে চট জলদি সমাধান করা যায় সেটা দেখব।”