AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

অভিষেকের প্রশংসা, মমতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, এবার কি তা হলে প্রবীর ঘোষালও?

গত ৩০ জানুয়ারি বিশেষ চার্টার্ড বিমানে দিল্লিতে শাহি-দরবারে হাজির হয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গী ছিলেন প্রবীর ঘোষালও (Prabir Ghoshal)।

অভিষেকের প্রশংসা, মমতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, এবার কি তা হলে প্রবীর ঘোষালও?
ফাইল চিত্র।
| Edited By: | Updated on: Jun 05, 2021 | 3:23 PM
Share

হুগলি: পুরনো দলের প্রতি এবার আবেগের সুর উত্তরপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক (MLA) প্রবীর ঘোষালের গলায়। ভোটে হেরে আপাতত ‘রাজনীতি বিমুখ’ তিনি। তবে সম্প্রতি মা প্রয়াত হওয়ার পর বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে কোনও রকম খোঁজ খবর না নেওয়ায় কিছুটা খারাপই লেগেছে তাঁর। উল্টে মন ছুঁয়েছে রাজনীতির ময়দানে প্রতিপক্ষ হলেও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের সৌজন্য। খোঁজ নিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু রাজ্য বিজেপির তরফে কেউ সমবেদনাটুকু জানাননি।

বিধানসভা ভোটের আগে যে ছবি দেখা গিয়েছিল রাজ্যজুড়ে, ভোটের পর্ব মিটতে ঠিক তার উলট পুরাণ। কেউ বলেছিলেন, দলে থেকে কাজ করা যাচ্ছে না। কেউ বলেছিলেন, দলে দম বন্ধ হয়ে আসছে। এরপর সারি বেধে ঘাসফুল শিবির ছেড়ে পদ্মমহলে গিয়ে ভিড়েছিলেন তৃণমূলত্যাগী নেতারা। কোনও আশা ভরসা থেকেই হয়ত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। তবে সে গুড়ে যে আপাতত বালি, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। বিজেপিতে গিয়ে ফের তৃণমূলের জন্য নরম সুর শোনা যাচ্ছে তাঁদের গলায়।

এ তালিকায় সোনালী গুহ, অমল আচার্য, দীপেন্দু বিশ্বাস, সরলা মুর্মু, শুভ্রাংশু রায়ের পর এবার উত্তরপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের নামও। সম্প্রতি প্রবীর ঘোষালের মাতৃবিয়োগ হয়েছে। তারপরই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক ও উত্তরপাড়ার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁর খোঁজ নেন। বাড়িতেও গিয়েছেন পুরনো সতীর্থরা। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীও সমবেদনা জানিয়েছেন। সেখানে বিজেপির স্থানীয় কয়েকজন নেতৃত্ব ছাড়া আর কেউ খোঁজটুকু নেননি প্রবীর ঘোষালের। তাতেই আঁতে ঘা লেগেছে বর্ষীয়ান এই বিজেপি নেতার।

আরও পড়ুন: দেবের গ্রামে বিরোধীদের সামাজিক বয়কটের লিফলেট, টুইটারে নিন্দা নির্মলা সীতারামনের

শুক্রবার দিলীপ ঘোষ জেলায় সাংগঠনিক বৈঠক করতে এসেছিলেন। কিন্তু সেখানে দেখা যায়নি প্রবীর ঘোষালকে। সম্প্রতি মুকুল রায়ের স্ত্রীকে হাসপাতালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখতে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে প্রবীর ঘোষাল বলেন, “অভিষেক যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ফোন করলেন, দিলীপ ঘোষ গেলেন। অথচ তার অনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নিয়েছেন।” যে প্রবীর ঘোষাল মাস ছয়েক আগেও অভিযোগ তুলেছিলেন, বার বার বলা সত্ত্বেও তাঁকে দলীয় কর্মসূচিতে তৃণমূল ডাকে না, সেই বিজেপির প্রবীরের গলায় এবার অন্য সুর।

৩০ জানুয়ারি বিশেষ চার্টার্ড বিমানে দিল্লিতে শাহি-দরবারে হাজির হয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন প্রবীর ঘোষাল, রথীন চক্রবর্তী, বৈশালী ডালমিয়ারা। কিন্তু সে যাত্রা খুব একটা সুখকর বোধহয় হল না। ভোটে হারতেই বদলে গেল রাজনীতির রসায়নটাও।

প্রবীর ঘোষাল বলেন, “আমার মাতৃ বিয়োগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমার সঙ্গে এলাকার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক যোগাযোগ করেছিলেন। সমবেদনা জানিয়েছেন। উত্তরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের কর্মকর্তারা বাড়িতে এসেছেন, শ্মশানে গিয়েছেন। এমনকী শীর্ষ নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও খবর পাওয়ার পর শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। বিজেপির যাঁরা সহানুভূতি জানিয়েছেন সকলে আমার এলাকারই। এর বাইরে কেউ নয়। অথচ ৩০ বছর আগে যখন বাবাকে হারিয়েছিলাম তপন শিকদাররা আমার বাড়িতে এসেছিলেন। তৃণমূল আমার তো এখন দল নয়। ওই দলে ছিলাম। কিন্তু তারা যা করল মর্মস্পর্শী।”

যদিও এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “যে দলের আদর্শ মেনে নিয়োজিত সৈনিক হিসাবে কাজ করবেন তাঁর ব্যক্তিগত পরিসরের ব্যাপার এবং দলের ব্যাপার মিলে যাচ্ছে কি না, তা আলাদা রাখা দরকার কি না, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। আমার জানা নেই।” তবে বঙ্গ বিজেপির নেতারা বলতে পারুন আর নাই পারুন, সুর বদলের চোরা স্রোত কিন্তু ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে বইছে।