Bonedi bari puja: ‘দশমীতে উপস্থিতি জানান দেন মা’, জাঁকজমক কমলেও আজও আকর্ষণের কেন্দ্রে সরকার বাড়ির ১৭৭ বছরের পুরনো পুজো

Bonedi bari puja: প্রতি বছর জন্মাষ্টমীর দিন খড়ের কাঠামোয় প্রথম মাটির প্রলেপ দেওয়া হয় । প্রতিমা তৈরির সময় আমিষ খাওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ। দেবী এখানে সিংহ বাহিনী। কিন্তু শান্ত। তাঁর দু'দিকে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ। ষষ্ঠীতে বোধন। তারপর চার দিন ধরে ভক্তিভরে চলে পুজো পাঠ। একটা সময় এই পুজোতে তিন দিনে চারটি পাঁঠা বলি হত। কিন্তু কোনও এক সময় নিখুঁত পাঁঠা না মেলায়, পরিবারের সদস্য নীলরতন সরকার পুরোহিতের পরামর্শে ছাগ বলি বন্ধ করে দেন।

Bonedi bari puja: 'দশমীতে উপস্থিতি জানান দেন মা', জাঁকজমক কমলেও আজও আকর্ষণের কেন্দ্রে সরকার বাড়ির ১৭৭ বছরের পুরনো পুজো
১৭৭ বছরে পা দিয়েছে চণ্ডীতলার আলিপুরের সরকার বাড়ির পুজো
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 11, 2024 | 12:14 PM

শুভজিৎ মিত্র

হুগলি: শুধু শহর কলকাতা নয়। থিমের ছোঁয়া আজ গ্রামগঞ্জেও। কলকাতার আশপাশের জেলার মানুষ যেমন শহরে ঠাকুর দেখতে আসেন। তেমনই এখন কলকাতার মানুষও বেরিয়ে পড়েন জেলার ঠাকুর দেখতে। জেলা কিংবা শহরে থিমের চাকচিক্যের মধ্যেও আচারে কিংবা সাবেকিয়ানায় আজও আলাদা নজর কাড়ে বনেদি বাড়ির পুজো। একেক বাড়িতে একেক রীতি। আর যাকে ঘিরে একেকরকম মিথ।

হুগলি জেলার প্রাচীন পুজোগুলোর মধ্যে অন্যতম শ্রীরামপুরের চণ্ডীতলা-১ ব্লকের আলিপুরের সরকার বাড়ির দুর্গাপুজো। দেশ স্বাধীন হওয়ার ১০০ বছর আগে ১৮৪৭ সালে এই পুজোর প্রচলন করেন রামলোচন সরকারের চতুর্থ পুত্র মাধবচন্দ্র সরকার। একটা সময় বছরের পর বছর ধরে জাঁকজমকভাবেই এই পুজো হত। আশপাশের গ্রাম থেকে প্রচুর মানুষের সমাগম হত।

এই খবরটিও পড়ুন

আজ কালের গর্ভে অবশ্য অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে। ১৯৫২ সালে সরকার পরিবারের জমিদারি প্রথা উঠে যাওয়ার পর জাঁকজমক অনেকটাই কমেছে। ম্রিয়মাণ হয়েছে সাঁঝবাতির আলো। কিন্তু পুজোর আচারে বড় কোনও পরিবর্তন হয়নি।

পুরনো আচার মেনেই পুজো হয় সরকার বাড়িতে

প্রতি বছর জন্মাষ্টমীর দিন খড়ের কাঠামোয় প্রথম মাটির প্রলেপ দেওয়া হয় । প্রতিমা তৈরির সময় আমিষ খাওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ। দেবী এখানে সিংহ বাহিনী। কিন্তু শান্ত। তাঁর দু’দিকে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ। ষষ্ঠীতে বোধন। তারপর চার দিন ধরে ভক্তিভরে চলে পুজো পাঠ। একটা সময় এই পুজোতে তিন দিনে চারটি পাঁঠা বলি হত। কিন্তু কোনও এক সময় নিখুঁত পাঁঠা না মেলায়, পরিবারের সদস্য নীলরতন সরকার পুরোহিতের পরামর্শে ছাগ বলি বন্ধ করে দেন। তার পরিবর্তে সপ্তমীতে চালকুমড়ো বলি হয়। অষ্টমীতে কোনও বলি হয় না। সন্ধি পুজোর সময় আবারও চাল কুমড়ো বলি হয়। নবমীতে মোট ৬টা বলি হয়। যার মধ্যে রয়েছে আখ, আদা, চাল কুমড়ো, বাতাবি লেবু এবং দুটি কলা। নবমীতে হয় কুমারী পুজো। ব্রাহ্মণ না হওয়ায় মাকে অন্ন ভোগ নিবেদন করতে পারেন না পরিবারের সদস্যরা। দশমীর দিন সরকার পরিবারের নিজস্ব পুকুরেই দেবীর নিরঞ্জন সম্পন্ন হয়। হাজির হন গোটা গ্রামের মানুষ। একটা নির্দিষ্ট সময় পরে খড়ের কাঠামো পুকুর থেকে নিয়ে এসে রাখা হয় ঠাকুর দালানে। বছর ভর সেখানেই থাকে।

১৭৭ বছরে পা দিয়ে সরকার পরিবারের পুজো। পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, দশমীর দিন দেবী তাঁর উপস্থিতি জানান দেন। মূর্তির হাত থেকে আচমকাই অস্ত্র পড়ে যাওয়া কিংবা দেবীর অলঙ্কার পড়ে যাওয়া। কিছু না কিছু প্রতিবছরই পরিলক্ষিত করেন তাঁরা। বুঝতে পারেন উমা কৈলাসে পাড়ি দিয়েছেন।