১০০০ টাকা দিলেই মিলবে নতুন আধার কার্ড, ‘আমজনের স্বার্থেই’ নজর দোকানির!

Aadhar Card: চণ্ডীতলা ১ নম্বর ব্লকের ভগবতীপুর বাজার এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই একটি সংস্থা মোটা টাকার বিনিময়ে আধার সংশোধনের কাজ করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

১০০০ টাকা দিলেই মিলবে নতুন আধার কার্ড, 'আমজনের স্বার্থেই' নজর দোকানির!
অভিযুক্ত বুবাই রায়, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 23, 2021 | 7:53 PM

হুগলি: ‘ফেলো কড়ি, নাও আধার’। সরকারি আধার কার্ড (Aadhar Card) সংশোধন করতে বা নতুন আধার কার্ড করতে দিতে হবে ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা। টাকা দিলেই মিলবে কার্ড! হুগলির চণ্ডীতলায় স্থানীয় একটি দোকানে এমনই ভুয়ো আধার সংশোধন কেন্দ্র চালানোর অভিযোগ উঠল। দোকানের সামনে পোস্টার ও ব্যানার দিয়ে লেখা রয়েছে, ‘এখানে নতুন আধার কার্ড তৈরি ও সংশোধন করা হয়।’

চণ্ডীতলা ১ নম্বর ব্লকের ভগবতীপুর বাজার এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই একটি সংস্থা মোটা টাকার বিনিময়ে আধার (Aadhar Card) সংশোধনের কাজ করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এমনকী, টাকা দিলে নতুন আধার কার্ডও তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। কার্ড সংশোধন করতে গেলে নূন্যতম ৫০০ টাকা এবং নতুন বানাতে গেলে কমপক্ষে ১০০০ টাকা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “আমি আধার কার্ডের লিঙ্ক করাতে গিয়েছিলাম। আমায় বলা হল, ৫০০ টাকা দিতে হবে। শেষে ৪৫০ টাকায় রফা হয়। সরকারি নিয়মে ৫০ টাকাতেই কাজ হয়ে যাওয়ার কথা। সেখানে এত টাকা কেন বেশি নিচ্ছে, জানি না। বলেও লাভা হচ্ছে না। আর কোথাও এই কাজ চলছে না। তাই বাধ্য হয়েই ওই দোকান থেকেই এসব করাতে হচ্ছে।” অন্য আরেক এলাকাবাসী বলেন, “আমি যখন আধার কার্ড সংশোধন করাতে গিয়েছিলাম তখন, কোনও টাকাই লাগেনি। সরকারিভাবে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। সেখানে এত টাকা কীভাবে নিচ্ছে এটাই হল প্রশ্ন।”

যদিও, সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দোকানের মালিক বুবাই রায়। তাঁর দাবি, সাধারণ মানুষের সুবিধার্থেই তিনি এই আধার সংশোধনের (Aadhar Card) কাজ করছেন। এমনকী, মানুষ নিজে থেকে যে টাকা দিচ্ছে তাই গ্রহণ করছেন তিনি। কোনওভাবেই কোনও অবৈধ টাকা নেওয়া হচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন ওই দোকানের মালিক। তবে, যথাযথ সরকারি অনুমতি ছাড়া কী করে চলছে আধার সংশোধনের কাজ? সে প্রসঙ্গে যদিও সদুত্তর দিতে পারেননি অভিযুক্ত। দোকানের মালিক বুবাইয়ের সাফাই, “আমরা ইউডিআই অনুমতি নিয়েই কাজ করছি। তবে এই সম্পর্কিত কোনও নথি বা শংসাপত্র আমরা দেখাতে পারব না।”

উল্লেখ্য, আঁধার সংশোধন করার জন্য শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের কোন সরকারি কর্মীকে ইউনিক ডিভাইস আইডেন্টিফিকেশন (UDI) আইডি দেওয়া হয় যার মাধ্যমে আধার সংশোধন করতে পারেন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মী এবং তা সংশ্লিষ্ট দফতরে বসেই সম্ভব।  সূত্রের খবর, সেই ইউডিআই লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন সরকারি কর্মীরা। আবার কোনো কোনো ইউডিআই হ্যাক করেও আধার সংশোধন করার কাজ চলে হাটে বাজারে। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই চলে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণা। চণ্ডীতলাতেও এমন কোনও জালচক্র সক্রিয় হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনায় চণ্ডীতলার ১ নম্বর ব্লকের আধিকারিক নরোত্তম বিশ্বাস জানিয়েছেন,  এই ধরনের ঘটনা এই এলাকায় আগেও ঘটেছে। সেক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছিল। যদি ফের সেইরকমই কোনও চক্র সক্রিয় হয়, তবে কড়া প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক। আরও পড়ুন: ‘পুরো তালিবান ২’, অধিকারী পুত্রের নিশানায় ফের মমতা-সরকার!