Group D: ৭ লক্ষ ‘ঘুষ’ দিয়েও চাকরি গিয়েছে স্বামীর, মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী শিক্ষিকা স্ত্রী
Teacher Suicide: স্থানীয় সূত্রে খবর, বলাগড়ের সীজা কামালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌড়নই গ্রামের বাসিন্দা প্রতাপ ঘোষ। তাঁর স্ত্রী মৌমিতা ঘোষ (৩২)। ২০১৮ সালে গ্রুপ ডি পদে চাকরি পান প্রতাপ।
বলাগড়: স্বামীর গ্রুপ ডি (Group D) চাকরি বাতিল হয়েছে। যার জেরে নিত্যদিন সংসারে অশান্তি চলছিল। সেই অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছতেই মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নিলেন স্ত্রী। গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন তিনি। রবিবার সকালের এই ঘটনায় রীতিমত শোকের ছায়া নেমে এসে হুগলির বলাগড়ে। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলাগড় থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বলাগড়ের সীজা কামালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌড়নই গ্রামের বাসিন্দা প্রতাপ ঘোষ। তাঁর স্ত্রী মৌমিতা ঘোষ (৩২)। ২০১৮ সালে গ্রুপ ডি পদে চাকরি পান প্রতাপ। ডুমুরদহ ধ্রুবানন্দ হাইস্কুলে চাকরি করছিলেন। তবে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শুরু হতেই ফেঁসাদে পড়েন প্রতাপ ঘোষ। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে ১ হাজার ৯১১ জন অযোগ্য গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি চলে যায়। সেই তালিকায় ছিলেন প্রতাপও। এরপর চাকরি চলে যেতেই সংসারে নিত্যদিন শুরু হয় অশান্তি। মৃতের ছেলে জানায় তাঁর বাবার চাকরি চলে যেতেই মা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এরপর আজ সকালে স্বামী মাঠে গেলে ঘরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন মৌমিতা।
পরিবার সূত্রে খবর, মৌমিতাদেবী নিজেও ভান্ডারকুরির একটি বেসরকারি কলেজে ডিএলএড পড়াচ্ছিলেন। প্রাথমিক স্কুলে চাকরির জন্য নিজেও চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। মৃতের ছেলে প্রণব ঘোষ বলেন, “চাকরির জন্য ৭ লক্ষ টাকা দিয়েছিল বাবা। মা আশি হাজার টাকা দিয়েছিলেন এক দালালকে। এরপর সেই চাকরি বাতিল হতেই মানসিক অবসাদ এবং সাংসারিক অশান্তি শুরু হয় বিভিন্ন কারণে।ধারদেনাও হতে থাকে।” অপরদিকে, মৃতের পরিবারের দাবি, জামাইয়ের চাকরির জন্য জমি জমা বেচে টাকা দিয়েছিলেন তাঁরা। চাকরি পাওয়ার পর সেই টাকা মেয়ের কাছ থেকে ফেরত চান। সেই মতো মৌমিতা বারংবার প্রতাপকে জানিয়েছিলেন টাকা ফেরতের জন্য যা নিয়ে নিত্যদিন অশান্ত লেগে থাকতে। পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে।
বিজেপি হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, “এই মৃত্যুর জন্য তৃণমূল দায়ী। কারণ তাঁরা শুধু চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেননি। যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিল সেই মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।”
সিজা কামালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান অরিজিৎ দাস বলেন, “বলাগড়ে কয়েকটা বাড়িতে ইডি-সিবিআই রেড করেছে। তাই চাকরি দুর্নীতি নিয়ে কথা উঠবে। তবে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হিসেবে এটা জানি যে ওই মহিলা এর আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।বিরোধীরা তাদের অভিযোগ করবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ বলাগড়ে চাকরি দুর্নীতি নিয়ে যেটা হয়েছে অস্বীকার করা যাবে না। যারা বিজেপিতে গেল তারা ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে পরিষ্কার হয়ে গেল আর যারা তৃণমূল করছে তারা দুর্নীতিগ্রস্ত এটা বলা ঠিক নয়।এই ঘটনার জন্য দলকে দায়ী করাও ঠিক নয়।”