Singur Tata Project: কোটি কোটি টাকার মাল স্রেফ উবে গেল! ন্যানোর ভাঙা কারখানায় দেদার ‘লুঠ’?

Singur Tata Scrap: টাটা গোষ্ঠীর নির্মীয়মাণ ন্যানো কারখানা ডিনামাইট দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় কারখানার কাজের বিভিন্ন সামগ্রী সিঙ্গুরের ওই মাঠেই পড়েছিল। যেমন লোহার রড, টিনের শেড, ক্যানেল পাইপ কিংবা কারখানার কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য বিভিন্ন সামগ্রী। কিন্তু সেসব এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না ওই মাঠে।

Singur Tata Project: কোটি কোটি টাকার মাল স্রেফ উবে গেল! ন্যানোর ভাঙা কারখানায় দেদার ‘লুঠ’?
সিঙ্গুরের টাটা প্রজেক্টের ভাঙা কারখানা (ফাইল ছবি)Image Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 01, 2023 | 4:23 PM

সিঙ্গুর: ন্যানোর ধাক্কায় বেসামাল রাজ্য। আরবিটাল ট্রাইবুনালের রায় গিয়েছে টাটা মোটরসের পক্ষে। তারপর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে কাঁটা-ছেঁড়া। দায় ঠেলাঠেলি। বাংলায় এক ব্যাপক শিল্প সম্ভাবনা দুরমুশ হয়ে গিয়েছিল ২০০৮ সালে। কৃষকদের আন্দোলনের মুখে পড়ে পিছু হটেছিল টাটা গোষ্ঠী। নির্মীয়মাণ কারখানার কাজ মাঝপথে ফেলে রেখেই পাততাড়ি গুটিয়েছিল টাটা। পরে ২০১৬ সালে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, ওই জমি চাষবাসের উপযোগী করে কৃষকদের ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই নির্দেশের পর টাটা গোষ্ঠীর নির্মীয়মাণ ন্যানো কারখানা ডিনামাইট দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সেই সময় কারখানার কাজের বিভিন্ন সামগ্রী সিঙ্গুরের ওই মাঠেই পড়েছিল। যেমন লোহার রড, টিনের শেড, ক্যানেল পাইপ কিংবা কারখানার কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য বিভিন্ন সামগ্রী। কিন্তু সেসব এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না ওই মাঠে। এখন শুধু মাঠজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বালি-সিমেন্ট দিয়ে তৈরি পাথরের মতো শক্ত ড্যালা। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কোথায় গেল এই যে গাদা গাদা লোহার রড, টিনের শেড, পাইপ? সব কি কর্পূরের মতো উবে গেল নাকি! স্থানীয় সূত্রে খবর, যে পরিমাণ সামগ্রী এই মাঠে পড়ে ছিল, তার বাজারদর আনুমানিক প্রায় কয়েক কোটি টাকা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, সিঙ্গুরের এই জমি থেকে কোটি কোটি টাকার এই সব সামগ্রী দেদার লুঠ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। সিঙ্গুর আন্দোলনে তৃণমূল যে অনুঘটকের মতো কাজ করেছিল, তাতে অনেকটাই ভূমিকা ছিল সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের। সিঙ্গুর আন্দোলন ও তৃণমূলের প্রসঙ্গ উঠলে, একইসঙ্গে উঠে আসে মাস্টারমশাইয়ের কথাও। তিনি অবশ্য এখন খাতায় কলমে বিজেপির লোক, তবে সক্রিয় রাজনীতিতে এখন আর সেভাবে দেখা যায় না বর্ষীয়ান মাস্টারমশাইকে। সেই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যও এক বাক্যে স্বীকার করে নিচ্ছেন, সিঙ্গুরের এই জমি থেকে খুলে আম লুঠ হয়েছে কারখানার সামগ্রী।

সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই বলছেন, “বিপুল পরিমাণ চুরি হয়েছে। কারা চুরি করেছে সেটা এখনও জানা যায়নি। স্থানীয় লোকেরাই হোক বা বাইরের ব্যবসায়ী হোক… প্রচুর পরিমাণে জিনিস চুরি করে নিয়ে পালিয়েছে। বমাল চুরি ধরেও আমরা প্রতিকার চেয়েছিলাম, তখন আমি মন্ত্রীও ছিলাম… কিন্তু কোনও প্রতিকার হয়নি।”

স্থানীয় সূত্রে খবর, এই এলাকায় চুরির উপদ্রব ঠেকাতে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে পদক্ষেপও করা হয়েছিল। সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল এলাকায়। কিন্তু তারপরও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলেই অভিযোগ। হুগলি সাংগঠনিক জেলার বিজেপির যুব মোর্চার সদস্য সৌমিত্র পাখিরা এই নিয়ে রাজ্যকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, “এখানে যখন শিল্প তৈরি হয়, সেই সময় চুরি হয়। শিল্প চলাকালীন শ্রম চুরি হয়। আর শিল্প যখন পাততাড়ি গুটিয়ে নেয়, তখন রড-ইট-পাথর-কাঠ সব চুরি হয়।”

যদিও বর্তমানে সেখানকার তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য দায় ঠেলছে বাম জমানার দিকেই। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা কৃষক আন্দোলনের অন্যতম নেতা দুধ কুমার ধারা বলছেন, “যদি চুরি হয়ে থাকে, তাহলে যে সময়ের ঘটনা তখন তো এখানে সিপিএম ছিল।”