Potato Farming: ডিভিসির ছাড়া জলে বিপদ! সব খুইয়ে মাথায় হাত আলুচাষিদের

Hooghly: ডিভিসির ছাড়া জল  নদী হয়ে খালের জল উপচে খানাকুলের ধাড়াশিমুল, চব্বিশপুর, বলাইচক-সহ বেশকয়েকটি এলাকার কৃষকরা ক্ষতির সম্মূখীন হলেন।

Potato Farming: ডিভিসির ছাড়া জলে বিপদ! সব খুইয়ে মাথায় হাত আলুচাষিদের
জলে ডুবেছে খেত, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 17, 2022 | 1:50 PM

হুগলি: ফের জল যন্ত্রণায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখীন হলেন হাজার হাজার আলু চাষি (Potato Farmers)। মুণ্ডেশ্বরী নদীর খালের জল উপচে বিস্তীর্ণ এলাকার আলুজমি প্লাবিত হয়ে পড়ল। আর জমি থেকে আলু তোলার মুখেই ফের সেচের জলেই প্লাবিত হয়ে চরম বিপাকে পড়ে গেলেন চাষিরা। ডিভিসির (DVC) ছাড়া জল  নদী হয়ে খালের জল উপচে খানাকুলের ধাড়াশিমুল, চব্বিশপুর, বলাইচক-সহ বেশকয়েকটি এলাকার কৃষকরা ক্ষতির সম্মূখীন হলেন। বার বার ফসলে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে তাঁরা বেশ কয়েকবার বিডিও অফিসের সামনেও ধর্না দেন। কিন্তু, ক্ষতিপূরণ কীভাবে হবে তা জানা নেই! স্থানীয় কৃষকদের দাবি,এখানকার মুণ্ডেশ্বরী  নদীর রামপুর খালের সঠিক সংস্কার না হলে এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার কোনো রাস্তা নেই তাঁদের কাছে। অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দফতরে ঘুরেও কোনো সুরাহা হয়নি। হঠাৎ করে জল ছাড়ায় একেবারে আলু জমি ডুবে গিয়ে পচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আলুও বড় হয়ে গেছে। এবার তোলার সময়। কিন্তু যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তাতে করে আর আলু উঠবে কিনা সেই চিন্তায় চাষিরা।

বস্তুত, এ বছর বঙ্গে শীত যেন ‘ডুমুরের ফুল’! বারবার ঝঞ্ঝা কাঁটায় বৃষ্টিপাতের জেরে ক্ষতির মুখে পড়েছে আরামবাগের আলুচাষিরা। আগেই, পরপর দুইবারের আলুচাষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি আরামবাগের চাষীরাও। প্রথমবার জমিতে আলুর চাষ করার পর পুরোটাই নষ্ট হয়েছিল তাঁদের। এবার আবারও জমিতে আলু বুনেছিলেন চাষীরা। তাদের আশঙ্কা ছিল শীতকালের পরপর অকাল বৃষ্টিপাত এবং ঘন কুয়াশায় এবার আলুর ফলন অনেকটাই কমে যাবে। তা সত্ত্বেও এবারের সদ্য পোঁতা আলুর চারাগুলি বাঁচাতে তৎপর ছিলেন আরামবাগের চাষীরা। কিন্তু, তাতেও লাভ হয়নি। এ বার ফের নতুন করে ডিভিসি জল ছাড়ায় কার্যত ভেসে গিয়েছে সমস্ত জমি।

কেউ সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছেন, কেউ  বা মহাজনী প্রথায় চড়া সুদে ঋণ নিয়ে বীজ কিনেছেন। এখন, ফলন নষ্ট হলে ঋণশোধ তো দূরের কথা, বীজের দামটুকুও পাবেন না তাঁরা। গোঘাটের এক আলুচাষির কথায়, “সমবায় থেকে ধার করেছিলাম, চাষের জন্য। সেই টাকা সুদ সমেত কেটে নিল। এখন শুনছি সে টাকা নাকি কোম্পানির ঘরে গিয়েই পৌঁছয়নি। বৃষ্টির বিপদ তো ছিলই। এ বার এসে জুড়ল এই নতুন বিপদ।”

ইতিমধ্যেই জমি থেকে জল বের করতে উঠে পড়ে লেগেছেন চাষিরা। কিন্তু, তাতেও কি ফলন বাঁচানো সম্ভব হবে? কৃষকদের একাংশ যদিও বলছেন, যতটুকু বাঁচানো যায়, ততটুকুই লাভ।

কৃষকের ক্ষতিপূরণের প্রসঙ্গে আবার কোনও কোনও মহল থেকে বলা হচ্ছে ফসল বিমার কথা। এই পরিস্থিতিতে বাংলার কৃষকেরা বলছেন, মুখে দরদ দেখালেও, আসলে কোনও সরকারই তাদের পাশে নেই। এলাকার আলু চাষিদের দাবি, সরকার তাঁদের আলু বীজ ও রাসায়নিক সার দিয়ে সহযোগিতা করুক। তাহলে তাঁরা নতুন করে আলু চাষ করতে পারবেন। এই সব দাবিদাওয়ার মাঝেই নতুন করে বৃষ্টিতে অশনী সঙ্কেত দেখছেন চাষিরা।

একদিকে ফলনের ক্ষতি, অন্যদিকে বীজের চড়া দাম, সারের কালোবাজারি, কোনদিকে যাবেন আলুচাষিরা? কৃষকদের অভিযোগ, সারের বস্তায় যে দাম লেখা রয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি দামে সেই সার কিনতে হয়েছে তাঁদের। ভেবেছিলেন আলুর ফলন ভাল হবে, সে চাপে নিস্তার মিলবে। কিন্তু অকাল বৃষ্টি সবকিছুই কেড়ে নিল। পরিস্থিতি এমনই যে, এ বার অনেক আলুচাষিরাই ভাবছেন চাষ থেকেই সরে আসবেন।

প্রশ্ন উঠছে, চাষিরা যদি আলু চাষ কমিয়ে দেয় তাহলে ফলন হবে কীভাবে? আর তা যদি না হয় তা হলে ফের আলুর বাজার অগ্নিমূল্য হবে। আলুটুকুও যদি মধ্যবিত্তের পাতে তুলতে ছ্যাঁকা খেতে হয়, তা হলে হেঁশেল চলবে কী করে! রাজ্যে প্রতি মাসে পাঁচ লক্ষ টন আলু লাগে। ভিন্‌ রাজ্যে যায় প্রায় এক লক্ষ টন। নতুন আলু এখনও ওঠেনি। অন্তর্বর্তী সময়ে রাজ্যের মানুষের জন্য ওই আলু প্রয়োজন। ফলে, আলু যত দ্রুত ফলে তত ভাল। নয়ত পড়ে যোগানের অভাব দেখা দিতে পারে। তার প্রভাব সরাসরি পড়বে বাজারে এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

আরও পড়ুন: Firhad Hakim in Malda: ‘মমতাদিকে দিল্লির দিকে এক পা করে এগিয়ে দিতে হবে’, মালদা থেকে ‘ডাক’ ফিরহাদের