21 February: ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে সাইকেলেই চন্দননগর থেকে বাংলাদেশে পাড়ি মহুয়াদের
Hooghly News: পাঁচদিনের এই যাত্রা শুরু হল মঙ্গলবার। রানাঘাট, গেদে, চুঁয়াডাঙা হয়ে ঢুকবে বাংলাদেশ।
হুগলি: ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীকে আরও সুদৃঢ় করতে সাইকেলে ঢাকার পথে পাড়ি দিল সাইক্লিস্টদের একটি দল। চন্দননগর থেকে ঢাকা যাত্রা শুরু করল তারা। ২১ ফেব্রুয়ারির আগে ওপার বাংলায় পৌঁছবে। আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে (International Mother Language Day) ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাবে তারা। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। গোটা পৃথিবীতে পালিত হয় এই দিন। তবে ঢাকায় এদিনটির উদযাপন একটু অন্য মাত্রার। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়া মাতৃভাষার জন্য আন্দোলনের ডাক দেয়। পাকিস্তানি পুলিশ তাঁদের রুখতে এলে বাধে ‘লড়াই’। পুলিশের তরফে চলে গুলি। ঝাঁঝরা হয়ে যায় কতগুলো টাটকা প্রাণ। এরপর গোটা বাংলাদেশ পথে। দাবি একটাই, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। সে ঘটনা গড়ায় বহু দূর। ভাষার আন্দোলন যে কখন মুক্তিযুদ্ধে মিশে গেল। ‘৭১-এ স্বাধীন হল বাংলাদেশ। এর বহু পরে অবশ্য ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে।
সেই উদযাপনে এবার অংশ নেবেন এপার বাংলার একদল সাইক্লিস্টও। সিঙ্গুর মহামায়া স্কুলের শিক্ষক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় ট্রেকিং করতে ভালোবাসেন। সময় পেলেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তাঁরা। এবার তাঁদের সঙ্গে প্রণবকুমার মাজি, শ্রীকান্ত মণ্ডল, প্রসেনজিৎ সরকার, রমজান আলি, সত্যব্রত ভাণ্ডারি, অঞ্জনকুমার দাসও ঢাকার পথে সওয়ারি।
মঙ্গলবার চন্দননগর স্ট্র্যান্ডে ভাষা শহিদ স্মারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সাইকেল যাত্রা শুরু করেন তাঁরা। পাঁচদিন সাইকেল চালিয়ে রানাঘাট, গেদে, চুঁয়াডাঙা হয়ে ঢুকবেন বাংলাদেশে। কুষ্টিয়া, পাবনা, কাশীনাথপুর, মানিকগঞ্জ হয়ে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা পৌঁছবেন। শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশের ঢাকায় শহিদ মিনারে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো এবং দুই বাংলার মানুষের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দেওয়াই এই সাইকেল যাত্রার মূল উদ্দেশ্য।
সাইক্লিস্ট দলের একমাত্র মহিলা সদস্য মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এত দূর সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা নিয়মিত সাইকেল চালানো অভ্যাস করেছি। গত এক মাস ধরে প্রতিদিন ২৫-৩০ কিলোমিটার করে সাইকেল চালিয়েছি। ঠিকঠাকভাবে যদি আমরা যেতে পারি তাহলে ছ’দিনের মধ্যে আমরা ঢাকায় পৌঁছে যাব।”
এদিন তাঁদের এই রওনাপর্বে উপস্থিত ছিলেন এভারেস্ট জয়ী পিয়ালি বসাক, পায়ে হেঁটে কলকাতা থেকে লাদাখ গিয়েছিলেন সিঙ্গুরের যে যুবক, সেই মিলন মাজি। পিয়ালি বসাক বলেন, “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চন্দননগর থেকে সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছেন আটজন। দু’ দেশের মধ্যে মৈত্রী এবং সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে ওনারা যাচ্ছেন। ওনাদের দলে একজন মহিলাও আছেন। আসলে মহিলারা কোনও ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই। পুরুষদের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যেতে পারেন তাঁরাও।”