Dhaniakhali: সাহসী মেয়ে স্কুলে গিয়ে বলে দিল সবটা, এরপরই পুলিশ হাজির বাড়িতে…
Hoogly: পুলিশে প্রশাসনের বোঝানোর পর নিজের ভুল স্বীকার করে নেন নাবালিকার মা। তিনি জানান, তাঁদের অভাবের সংসার। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সে কারণেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছিলেন।
হুগলি: সবে এখন নবম শ্রেণি মেয়েটির। আরও কত পড়াশোনা করতে হবে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। অথচ বাড়ির লোক মেয়েকে পাত্রস্থ করে ফেলতে চায় এখনই। বাড়ির লোককে কোনওভাবেই বোঝাতে পারেনি সে। ছাত্রীর কথায়, মা শুনতে চায়নি কিছুই। এরপর স্কুলে জানায় সে। এরপরই প্রশাসনের সাহায্যে নিজের বিয়ে নিজেই ভাঙে সে। জানিয়ে দিল, পড়তে চায়। হুগলির ধনিয়াখালির কিশোরীর এই সাহসকে বাহবা জানিয়েছে সকলে। ছাত্রীর এমন সাহসিকতার জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করেছে স্কুল ও প্রশাসন। তারা চায়, এই কন্যাই যেন হয়ে ওঠে সকলের আদর্শ। জানা গিয়েছে, শনিবার স্কুলে গিয়েছিল ওই কিশোরী। একটি আবেদনপত্র জমা দেয় দিদিমণিকে। জানায়, বাড়ির লোকজন তার বিয়ে ঠিক করেছে। ১০ই ফাল্গুন বিয়ে। একইসঙ্গে সে বলে, তার এখনও বিয়ের বয়স হয়নি। সে আরও পড়াশোনা করতে চায়।
কিশোরী জানায়, তার অমতেই বিয়ে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই লোকজনকে জানাতেও শুরু করেছে বাড়ির লোকেরা। স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকারা সমস্ত কিছু জানতে পেরে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। ধনিয়াখালি থানা ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানান। স্কুলেই আসে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরা।
এরপরই পুলিশ ওই ছাত্রীকে নিয়ে তার বাড়ি যায়। জানিয়ে দেয়, বিয়ের বয়স না হওয়া পযন্ত কোনওভাবেই এই বিয়ে দেওয়া যাবে না। এ কথার অন্যথা হলে আইনের পথে তারা হাঁটবে বলেও জানিয়ে দেয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরস্বতী পুজোর দিনই বিয়ের কথা পাকা হয়। আগামী মাসেই বিয়ে। শেওড়াফুলির বছর ৩৫ এর এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ের ঠিক করে বাড়ির লোক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বিয়ের কথা শুরু হওয়ার পর থেকেই ওই কিশোরী নিজের অমতের কথা জানায়। পরিবারের লোকজন তার কথা শোনেনি। অবশেষে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দ্বারস্থ হয় সে। ১৮ বছরের নীচে কোনওভাবেই যেন মেয়ের বিয়ে দেওয়া না হয়, তা জানিয়ে দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে পুলিশের তরফ থেকে নাবালিকার এই সাহসিকতার জন্য বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
পুলিশে প্রশাসনের বোঝানোর পর নিজের ভুল স্বীকার করে নেন নাবালিকার মা। তিনি জানান, তাঁদের অভাবের সংসার। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সে কারণেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছিলেন। এখন তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছেন বলেও জানান। মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না বলেই জানান। ওই কিশোরী যে স্কুলে পড়ে, সেখানকার প্রধান শিক্ষক তার স্কুলের ছাত্রীর এই সাহসিকতার প্রশংসা করে পুরস্কারের কথাও ঘোষণা করেন।