Panchayat Elections 2023: ‘রক্ত ঘাম ফেলে তৃণমূলটা করতাম’, কী এমন শান্তনু চেয়েছিল, যে বাপ্পাদিত্য দল ছাড়লেন?
Bengal Panchayat Election: বাপ্পাদিত্যর কথায়, "রক্ত ঘাম ফেলে তৃণমূলটা করতাম। ২০১১ সালে দল ক্ষমতায় আসার পর শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় হাত ধরে রাজনীতি করি। বলাগড় থেকে এখানে এসে কারও দাদা, কারও ভাই, কারও গুরু হয়েছিলেন।"
হুগলি: পঞ্চায়েত ভোটের আবহে হুগলিতে বারবার ঘুরে ফিরে আসছে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন শান্তনু। নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে যিনি আপাতত বিচারাধীন বন্দি। বিরোধীরা প্রচারে নেমে বারবার শান্তনুর ‘কীর্তি’কেই ঢাল করছে। তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন জেলা পরিষদের বিজেপি প্রার্থী বাপ্পাদিত্য ঘোড়ুই। ২০১৮ সালের ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীর তকমা রয়েছে শান্তনুর। বাপ্পাদিত্যর দাবি, নিজের একচ্ছত্র ক্ষমতা কায়েম রাখতে শান্তনু দলের লোকজনকেও কোণঠাসা করতে দু’বার ভাবেননি।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৪ নম্বর জেলা পরিষদ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার যিনি সেখানে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন, সেই বাপ্পাদিত্য শান্তনুরই অনুগামী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। পরে যদিও তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। আসন সংখ্যা বাড়ায় এবার জেলা পরিষদের ৩৬ নম্বর থেকে প্রার্থী তিনি।
বাপ্পাদিত্যর দাবি, শান্তনুর সঙ্গে থেকেই একটা সময় তৃণমূল করতেন তিনি। ঘাসফুলের পতাকা কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন দীর্ঘদিন। তবে ২০১৬ সালে শান্তনু হুগলি জেলা তৃণমূলের যুব সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই শান্তনুর হাবভাবে বদল আসা শুরু হয়। ক্ষমতার দাপট ক্রমেই শান্তনুকে আগ্রাসী করে তোলে বলে অভিযোগ। জেলায় দাপট বাড়তে শুরু করে তৎকালীন যুব তৃণমূল নেতা শান্তনুর।
বাপ্পাদিত্যর অভিযোগ, একবার তাঁর এক বন্ধুর চাকরির জন্য শান্তনুর দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। পাল্টা শান্তনু তাঁর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন বলে দাবি বাপ্পাদিত্যর। এরপরই তৃণমূল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন বাপ্পাদিত্য।
বাপ্পাদিত্যর কথায়, “রক্ত ঘাম ফেলে তৃণমূলটা করতাম। ২০১১ সালে দল ক্ষমতায় আসার পর শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় হাত ধরে রাজনীতি করি। বলাগড় থেকে এখানে এসে কারও দাদা, কারও ভাই, কারও গুরু হয়েছিলেন। ধীরে ধীরে বুঝলাম শান্তনু নিজের একটা লবির দিতে ঝুঁকছেন। ২০১৮ সালে জেলা পরিষদে জেতার পর গ্রুপ সির জন্য আমি একটা কাজের কথা বলেছিলাম। আমাকে ৫ লাখ টাকা দিতে বলে। এরপরই ভাবি এ দল করা যাবে না।”
যদিও এ প্রসঙ্গে আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় বলেন, “আইন আইনের পথে চলে। কেউ বলে দিল যে অমুক দোষী, তা তো নয়। আদালত বিচার করবে। কারণ, বিষয়টা বিচারাধীন আছে। বহু মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে বিচারাধীন। তাঁদের তো অপরাধী বলা যায় না। আর আমাদের দল থেকে সে টিকিট পেয়ে জিতেছিল যেমন, আমাদের দল তাঁকে সাসপেন্ডও করে দিয়েছে।” অন্যদিকে বাপ্পাদিত্যর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “২০০৭ থেকে আমি পার্টি করছি। আমি তাঁকে কোনওদিন সক্রিয়ভাবে তৃণমূলে দেখিনি। কে কোথায় কী করত আমার জানা নেই।”