Hooghly Crime: পাতানোর দিদির বাড়িতে জন্মদিনের পার্টিতে মদ-মাদকের আসর, সেখান থেকেই বিক্রি হয়ে গেল ৬ মাসের শিশুপুত্র

Hooghly Crime: পুলিশের কাছে পিঙ্কি স্বীকার করেন,দেড় লক্ষ টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করা হয় চন্দননগরে রমেন দেবনাথের কাছে। টাকার ভাগ পান পিঙ্কি ও তাঁর সঙ্গীরা। শিশুটিকে প্রথমে স্কুটারে চাপিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে পিঙ্কির নাবালক ছেলে।

Hooghly Crime: পাতানোর দিদির বাড়িতে জন্মদিনের পার্টিতে মদ-মাদকের আসর, সেখান থেকেই বিক্রি হয়ে গেল ৬ মাসের শিশুপুত্র
শিশুপুত্রকে বিক্রি করার অভিযোগImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 30, 2023 | 3:53 PM

হুগলি: এলাকার পূর্ব পরিচিত। রক্তের সম্পর্ক নেই, পাতানো দিদি। সেই দিদির বাড়িতেই ছ’মাসের ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিলেন মহিলা। পার্টিতে চলে মদ-মাদকের আসর। রাতে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু সন্তানকে নিয়ে সেই দিদির বাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন যুবতী। সেখান থেকেই বিক্রি হয়ে গেল ৬ মাসের শিশুপুত্র। ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চন্দননগরে। যদিও থানায় অভিযোগের পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই শিশুপুত্রটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, শিশুটিকে দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন মহিলার পাতানো দিদিই। তাঁকে ছাড়াও ঘটনায় আরও চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগের পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই চন্দননগর থেকে উদ্ধার হয় বিক্রি হওয়া শিশু।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চুঁচুড়া বড় বাজার বিবির বাগান এলাকায় থাকেন মামন ওঁরাওয়ের পাতানো দিদি পিঙ্কি গুপ্তা। তাঁর বাড়িতে বৃহস্পতিবার দুপুরে জন্মদিনের খাওয়া দাওয়ায় ছ’মাসের ছেলেকে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন মা বাবা। সেখানে মদ ও মাদকের পার্টি হয়। শিশুটির মায়ের বক্তব্য, খাওয়া দাওয়ার পর শিশুর বাবা চলে যান। মামন পিঙ্কির বাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়েন। বিকালে ঘুম ভাঙতে দেখেন, তাঁর পুত্র সন্তান পাশে নেই। পিঙ্কিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, বাবা এসে বাচ্চাটিকে বাড়ি নিয়ে গিয়েছে।

শিশুটির মায়ের সন্দেহ হয়। তিনি ফোন করে খোঁজ করেন। পরে বিষয়টি জানতে পেরে চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতেই তড়িঘড়ি তদন্তে নামে পুলিশ। চুঁচুড়া কপিডাঙায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন শিশুর মা বাবা। সেখান থেকে শিশুর বাবা ভীম ওঁরাওকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ভীম জানান, তিনি তাঁর ছেলেকে বাড়ি নিয়েই যাননি। এরপর পিঙ্কি ও তাঁর বাড়িতে যাঁরা সেসময় উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের জেরা শুরু করে পুলিশ। পুলিশ চুঁচুড়া বড় বাজার ও জোরাঘাট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করে। দেখা যায়, একটি স্কুটারে শিশুকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপরই পিঙ্কিকে চেপে ধরতে জেরায় ভেঙে পড়ে সে।

পুলিশের কাছে পিঙ্কি স্বীকার করেন,দেড় লক্ষ টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করা হয় চন্দননগরে রমেন দেবনাথের কাছে। টাকার ভাগ পান পিঙ্কি ও তাঁর সঙ্গীরা। শিশুটিকে প্রথমে স্কুটারে চাপিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে পিঙ্কির নাবালক ছেলে। পরে অটো করে চন্দননগর বিবিটহাটে রমেনের বাড়ি পৌঁছ দেওয়া হয়। চুঁচুড়া থানার আই সি অনুপম চক্রবর্তীর নেতৃত্ব একটি টিম চন্দননগরে অভিযান চালায়। অভিযুক্তের বাড়ি থেকে শিশুকে উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় মোট পাঁচ জনকে।

হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার ২১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিতা চট্টোপাধ্যায় খবর পেয়ে সকালে থানায় যান। এই চক্রের মাথাকে খুঁজে বার করার চেষ্টা করুক পুলিশ। পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে বাচ্চাটাকে খুঁজে বার করেছে পুলিশ, তার জন্য অনেক ধন্যবাদ। চন্দননগর পুলিশের ডিসিপি বিদিত রাজ বুন্দেশ বলেন, দেড় লক্ষ টাকায় শিশু বিক্রি কেনা বেচা হয়েছে বলে অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে। এই চক্রে আর কারা যুক্ত,যে শিশুটিকে কিনেছিলেন তাঁরও এক সন্তান রয়েছে। অনেক সময়ে দেখা যায়, সন্তান না থাকার কারণে শিশু এইভাবে কেনেন অনেকে। এক্ষেত্রে কেন শিশুটিকে কিনতে গেলেন, আদৌ তিনি কোনও পাচার চক্রের পাণ্ডা কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।