BJP Protest: শর্তসাপেক্ষে বিজেপিকে সিঙ্গুরে ধরনায় বসার অনুমতি দিল পুলিশ
BJP: কৃষকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়াকে সামনে রেখে তিনদিন ব্যাপী ধরনায় বসছে বিজেপি।
হুগলি: শর্তসাপেক্ষে বিজেপিকে সিঙ্গুরে ধরনার অনুমতি দিল হুগলি জেলা পুলিশ। শর্ত হল, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ করে ধরনা-অবস্থান চলবে না। একইসঙ্গে বলা হয়েছে মঞ্চে ৫০ থেকে ৬০ জনের বেশি লোক থাকতে পারবে না। পুলিশি অনুমতি আসতেই জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে ধরনা মঞ্চ বাধার কাজে।
কৃষকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়াকে সামনে রেখে তিনদিন ব্যাপী ধরনায় বসছে বিজেপি। তাও আবার জমি আন্দোলনের প্রাণভূমি সিঙ্গুরে। ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ধরনা চলবে।
ভারতীয় জনতা কিষাণ মোর্চার ব্যানারে এই ধরনার ডাক দেওয়া হয়েছে। তবে মঙ্গলবার এই ধরনা মঞ্চে যাওয়ার কথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য নেতা রাহুল সিনহাদের। থাকার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও।
তবে এই কর্মসূচি ঘিরে রবিবার থেকেই জটিলতা শুরু হয়। সেদিন বিজেপির স্থানীয় কর্মীরা ধরনামঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু করতে গেলে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই সেখানে পৌঁছন সায়ন্তন বসু। সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনের ধাত্রীভূমিতে দাঁড়িয়েই সায়ন্তন হুঁশিয়ারি দেন, সিঙ্গুরে পুলিশ রুখলে কুরুক্ষেত্র হবে। সোমবারও একটি প্রস্তুতি সভায় সায়ন্তন বলেন, পুলিশ এখানে ধরনায় বসতে না দিলে পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে গিয়ে বিজেপির কিষাণ মোর্চার সদস্যরা অবস্থান করবেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিজেপির এই কর্মসূচি ঘিরে তৎপরতা রয়েছে হুগলি পুলিশের। সিঙ্গুর থানার পুলিশ, হুগলি গ্রামীণ পুলিশ জেলার যাঁরা আধিকারিক রয়েছেন তাঁরা এখানে তৎপর রয়েছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় তৎপর তাঁরা। পুলিশের পক্ষ থেকে দুর্গাপুর রোড এর পাশে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে, যাতে দুর্গাপুর রোড দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে। যদিও সকাল ১০টা অবধি সে অর্থে বিজেপি কর্মীদের ভিড় ধরনাস্থলে দেখা যায়নি। যদিও বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব জানিয়েছে, সকাল ১১টা থেকে তারা এই কর্মসূচি শুরু করতে পারবে।
যে ইস্যুগুলিকে মূলত হাতিয়ার করে বিজেপি ধরনায় বসছে সেগুলি কৃষকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সারের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি কালোবাজারির অভিযোগ তুলেছেন কৃষকরা। এদিনের ধরনা মঞ্চ থেকে বিজেপি সেই অভিযোগ নিয়ে সরব হবে। দ্বিতীয়, বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হওয়ার কারণে ক্ষতিপূরণ কিংবা বিমা দেওয়া। সেচের জন্য বিদ্যুতের যে খরচ হয়, তা নিয়েও তিনদিনের কর্মসূচিতে রাজ্যের বিরুদ্ধে বার্তা দেবে বিজেপি।
এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষের সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করব, বিরোধী দল হিসাবে এটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। সিঙ্গুর নিয়ে গত ১০-১৫ বছর ধরে যে রাজনীতি চলছে, যা কেন্দ্র করে সরকার পরিবর্তন হল, অথচ সেখানকার চাষিরা কিছুই পেলেন না। তাঁদের দাবি নিয়ে কেউ ভাবছে না। আমরা তাঁদের জন্যই আন্দোলনে নামছি।”
এদিনের ধরনায় রাজ্য বিজেপির একাধিক মুখ থাকলেও থাকছেন না সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। যিনি হুগলির সাংসদ। এ প্রসঙ্গে অবশ্য দিলীপ ঘোষের দাবি, “লকেট চট্টোপাধ্যায়কে দিল্লি থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উত্তরাখণ্ডের। তিনি একমাস ধরে সেখানেই আছেন। যেহেতু ওখানে ভোট আছে। সংসদে আমার সঙ্গে দেখাও হয়েছে মাঝে। আবার চলে গিয়েছেন। দল দায়িত্ব দিয়েছেন ওখানেই আছেন। সিঙ্গুরে রাজ্য সভাপতি যাবেন, বিরোধী দলনেতা যাবেন। আমরা যাচ্ছি সবাই। তাই লকেটের খুব দরকার আছে এরকম নয়। তিনি থাকলে নিশ্চয়ই আসতেন।”
আরও পড়ুন: Laketown Police: কলকাতায় ঢুকছিল লরি ভর্তি বেগুন-মূলো-পটল! পুলিশের হাত পড়তেই বেরিয়ে এল আসল জিনিস…