National Aquatic Animal : রূপনারায়ণের জলে ভেসে এল শুশুকের দেহ, কোন উদাসীনতার বলি জাতীয় জলজ প্রাণী ?

National Aquatic Animal : প্রকৃতি প্রেমিকদের সংগঠনগুলির দীর্ঘ দিনের অভিযোগ- দূষণে জেরবার গঙ্গা সহ তার শাখা নদী ও উপনদীগুলির জল। যার মারাত্মক ফল প্রতিনিয়ত ভোগ করছে জলজ প্রাণীকুল। বেলাগাম ও যথেচ্ছভাবে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার জন্য রূপনারায়ণে জাল ফেলছে আর তাতে শুশুক আটকে মৃত্যুর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

National Aquatic Animal : রূপনারায়ণের জলে ভেসে এল শুশুকের দেহ, কোন উদাসীনতার বলি জাতীয় জলজ প্রাণী ?
গাদিয়াড়া ফেরিঘাটের কাছে রূপনারায়ণ নদে ভেসে আসে শুশুকের দেহটি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 13, 2022 | 8:57 PM

নন্দন পাল

তারা অত্যন্ত বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। তাদের সংরক্ষণে একাধিক পদক্ষেপ করেছে সরকার। আর গত ২ মাসে সেই অত্যন্ত বিপন্ন প্রজাতির দুটি শুশুকের মৃতদেহ পাওয়া গেল হাওড়ার রূপনারায়ণ নদের অববাহিকা অঞ্চলে। মঙ্গলবার গাদিয়াড়া ফেরিঘাটের কাছে রূপনারায়ণ নদে ভেসে আসে একটি জাতীয় জলজ প্রাণীর (National Aquatic Animal) দেহ। এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি মারা যায় আরও একটি শুশুক বা গ্যাঞ্জেটিক রিভার ডলফিন (Gangetic River Dolphin)।

বনদফতর সূত্রে জানা যায়, ১২ এপ্রিল সকালে এলাকাবাসীদের কাছ থেকে বনদফতর খবর পায় গ্রামীণ হাওড়ার গাদিয়াড়া লঞ্চ ঘাটের কাছে রূপনারায়ণ নদের পাড়ে পড়ে রয়েছে একটি মৃত শুশুকের দেহ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন হাওড়া বনবিভাগের উলুবেড়িয়া বিভাগের বনকর্মী ও পদাধিকারিরা। মৃত জাতীয় জলজ প্রাণীটির দেহ উদ্ধার করে গড়চুমুক প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্রে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় বনদফতর। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর কারণ নির্দিষ্ট করে জানা যাবে বলে জানা গিয়েছে বনবিভাগ সূত্রে।

অন্যদিকে ওই এলাকার জীব বৈচিত্র্য ও পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করে আসা প্রকৃতি প্রেমিকদের সংগঠনগুলির দীর্ঘ দিনের অভিযোগ- দূষণে জেরবার গঙ্গা সহ তার শাখা নদী ও উপনদীগুলির জল। যার মারাত্মক ফল প্রতিনিয়ত ভোগ করছে জলজ প্রাণীকুল। বেলাগাম ও যথেচ্ছভাবে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার জন্য রূপনারায়ণে জাল ফেলছে আর তাতে শুশুক আটকে মৃত্যুর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় দুই পরিবেশ কর্মী অর্পণ দাস ও তপন সামন্ত বলছেন, “প্রথমত রূপনারায়ণে চর পড়ছে। ফলে আবাসের সমস্যা হচ্ছে ডলফিনদের। দ্বিতীয়ত জেলেদের লাগামহীন জাল দেওয়া। তৃতীয়ত ওই এলাকায় নিয়মিত স্টিমার চলে। স্টিমারের ধাক্কা থেকেও এই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।”

শুশুক, দাঁত বিশিষ্ট তিমি প্রজাতির একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। গঙ্গার জলে ভারত ছাড়াও নেপাল আর বাংলাদেশে এদের দেখা যায়। ২০১৭ সালে এদের সংখ্যার ওপরে চালানো একটি গবেষণায় দেখা যায় সাড়ে ৩ হাজারেরও কম শুশুক সেই সময়ে পৃথিবীর বুকে বেঁচে ছিল। এই মুহূর্তে শুশুক বা গ্যাঞ্জেটিক রিভার ডলফিন আইইউসিএন (International Union for Conservation of Nature) তালিকায় লাল তালিকা ভুক্ত, “বিপন্ন” প্রজাতির আওতায়। ২০২০ সালের ১৫ অগস্ট দেশের ৭৪ তম স্বাধীনতা দিবসে ভারতের কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক (Indian Ministry of Environment, Forest and Climate Change) নদী ও সামুদ্রিক ডলফিনদের সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রজেক্ট ডলফিন (Project Dolphin) চালু করে।

দেবী গঙ্গার বাহন হিসাবে পূজিত হয় যে মকর তা আসলে শুশুকেরই কল্প ছবি- মত অনেক লোকসংস্কৃতি গবেষকেরই। অথচ আমাদের প্রকৃতির উপর দখলদারি এবং মানুষের অধিকার কায়েমের একচেটিয়া মনোভাবে প্রতিদিন তিলে তিলে নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদগুলো। গঙ্গার জল দূষণই কেবল নয়, মা গঙ্গার বাহনও রেহাই পায় না সেই সর্বগ্রাসী নাগরিক আগ্রাসন থেকে।

আরও পড়ুনMekliganj Chaos: গরু প্রতি ৩০০০ টাকা তোলা, তাও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর নাম করে!