Teacher Beaten VIDEO: ছাত্রকে শাসন, দেখুন টিচার্স রুমে ঢুকে কীভাবে শিক্ষক পেটালেন অভিভাবক

Uluberia: স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, সোমবার ইংরাজির স্যর প্রসেনজিৎ বিশ্বাস দশম শ্রেণির ক বিভাগে ক্লাস নিচ্ছিলেন। এক ছাত্র অমনোযোগী হওয়ায় স্যর একটু বকেন। এরপরই ছেলেটি মামারবাড়িতে জানায়। অভিযোগ করে, তার কান থেকে রক্ত বেরোচ্ছে। স্কুল সূত্রে খবর, ওই ছাত্র তার মামারবাড়িতেই থাকে।

Teacher Beaten VIDEO: ছাত্রকে শাসন, দেখুন টিচার্স রুমে ঢুকে কীভাবে শিক্ষক পেটালেন অভিভাবক
এভাবেই মারা হচ্ছে শিক্ষককে। Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 12, 2023 | 12:18 PM

উলুবেড়িয়া: ক্লাসে অমনোযোগী ছাত্র। তাকে শাসন করেছিলেন শিক্ষক। বলেছিলেন কান ধরে ওঠবস করতে। তার জন্য এলাকার একদল এসে যে টিচার্স রুমে ঢুকে ‘গুন্ডাগিরি’ করে যাবে, এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না হাওড়ার শ্যামপুর নাওদা নয়নচন্দ্র বিদ্যাপীঠের ইংরাজির শিক্ষক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। শিক্ষক পিটিয়ে ‘বাহাদুরি’ দেখাতে গিয়ে ২ অভিভাবক গ্রেফতারও হন শ্যামপুর থানার পুলিশের হাতে। পলাতক আরও ২ জন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, সোমবার ইংরাজির স্যর প্রসেনজিৎ বিশ্বাস দশম শ্রেণির ক বিভাগে ক্লাস নিচ্ছিলেন। এক ছাত্র অমনোযোগী হওয়ায় স্যর একটু বকেন। এরপরই ছেলেটি মামারবাড়িতে জানায়। অভিযোগ করে, তার কান থেকে রক্ত বেরোচ্ছে। স্কুল সূত্রে খবর, ওই ছাত্র তার মামারবাড়িতেই থাকে। খবর পেয়েই মামার বাড়ির লোকজন আরও কয়েকজনকে নিয়ে স্কুলে এসে হাজির হয়। তখন টিফিন পিরিয়ড। সোজা টিচার্স রুমে ঢুকে পড়েন। কেউ কিছু বোঝার আগেই কিল, চড়, ঘুষি মারতে থাকেন প্রসেনজিৎবাবুকে।

ওই ছাত্রের সহপাঠীদের কথায়, “গ্রামারের ক্লাস নিচ্ছিলেন স্যর। বেশ কয়েকটা প্রশ্ন-উত্তর লেখান। কিন্তু ওই ছেলেটা ২টো মাত্র লিখেছিল। এরপরই স্যর ওকে কান ধরে ওঠবস করতে বলেন। কিন্তু ও স্যরের কথা শুনছিল না। এরপর স্যর ওর কানটা ধরে টানে। ও যদি প্রথমে ওঠবস করত, তাহলে কিন্তু স্যর মারতেন না। আমাদের সামনেই সবটা হয়েছে। একেবারেই ওর কান থেকে রক্ত বেরোয়নি। স্যরকে খারাপভাবে মারল। একেবারে মিথ্যা কথা বলে মারা হল স্যরকে।”

এত বড় সাহস ওই ছাত্রের বাড়ির লোকেরা পেলেন কীভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রাজনীতির ‘স্নেহছায়া’ নাকি স্রেফ ঔদ্ধত্যের জোরেই এভাবে সমাজ গড়ার কারিগরদের গায়ে হাত তোলার সাহস পেলেন ওই অভিভাবকরা? এই ঘটনার পর থেকে ত্রস্ত স্কুলের শিক্ষিকারা। আতঙ্কিত শিক্ষকরাও। সবথেকে চিন্তায় তাঁদের পরিবারের লোকজন।

প্রহৃত ইংরাজি শিক্ষক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন, “আমি শুনলাম ছেলেটি মামারবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে। হয় ওর মামা বা ওর মামার ছেলে মিলে চারজন এসেছিল। একজনই ভয়ঙ্করভাবে মারধর করতে থাকে। ওকে কেউ আটকাতে পারছিল না। শুধু আমাকে না, আরও চারজন শিক্ষক, একজন শিক্ষিকার গায়েও হাত তুলতে গিয়েছিল।” তাঁর কথায়, ওই যুবকদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা নেই, তবে একটা আতঙ্ক তো থাকছেই। একজন ছাত্রকে বকলে যদি শিক্ষকের এমন পরিনাম হয়, ক্লাস করাতেই ভয় করবে। ওই শিক্ষককে দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

অরুণাভ বাজানি এই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, ২২ বছর ধরে এই স্কুলে পড়াচ্ছেন, কখনও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কোনওদিনই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয়নি এর আগে। তাঁর কথায়, “বাইরে থেকে কেউ টিফিন পিরিয়ডে স্টাফ রুমে ঢুকে পড়বেন, এমনভাবে মারধর করবেন, আমাদের ভাবনাতেও ছিল না। আমাদের দেড় হাজারের উপর ছাত্রছাত্রী আছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা আছেন। কখনও এমন হয়নি।” তবে একইসঙ্গে তিনি জানান, ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব তাঁদের কাঁধে। যতই আক্রমণ হোক না কেন, তা তাঁরা কোনওভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না। তবে সোমবারের ঘটনায় শ্যামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।