Jalpaiguri: থেকেও ‘নেই’ শিক্ষক, আসে না পড়ুয়ারাও! অভিযোগ পেয়ে স্কুলে ঢুকে যা করলেন বিডিও…
Jalpaiguri: সম্প্রতি বিডিওর কাছে একটা অভিযোগ আসে। তাতেই বলা হয়, রাজগঞ্জের ন্যাংটাগছ স্পেশাল ক্যাডার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা সঠিক সময়ে স্কুলে আসেন না। স্কুলে পঠনপাঠনের হাল অত্যন্ত খারাপ। ছাত্ররাও স্কুলে আসে না। ছাত্রদের স্কুলমুখী করতে উদ্যোগ নেন না শিক্ষকেরা।
রাজগঞ্জ: আসি যাই মাইনে পাই। ছাত্র এল কি না এল তা নিয়ে পরোয়া নাই। স্কুলের অবস্থা দেখে এমনটা মনে হওয়া কিন্তু অস্বাভাবিক নয়। এদিন রাজগঞ্জের পানিকৌড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের ন্যাংটাগছ বিদ্যালয়ে আচমকাই পরিদর্শনে যান বিডিও। আর তাতেই যেন উঠে এল স্কুলের বেহাল দশার ছবি। দেখা গেল, স্কুলে ৭৬ জন পড়ুয়ার মধ্যে সবাই অনুপস্থিত। ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে উপস্থিত মাত্র ১ জন। পরিস্থিতি দেখে ক্ষুব্ধ সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক হাজিরা খাতাই সিল করে দিলেন।
রাজগঞ্জের বর্তমান বিডিও প্রশান্ত বর্মন। সম্প্রতি তিনি বিডিও হিসেবে রাজগঞ্জ ব্লকে যোগ দিয়েছেন। যোগ দেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে কখনও গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে, কখনও হাসপাতালে, কখনও আবার হোটেল কিংবা রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়েছেন। কখনও আবার তিনি লোকের বাড়ি গিয়ে কাস্ট সার্টিফিকেট পৌঁছে দিয়েছেন। বিডিও পদে চাকরি পাওয়ার আগে তিনি ছিলেন স্কুল শিক্ষক। তাই স্কুল সংক্রান্ত যে কোনও বিষয় সমাধান করতে প্রায়শই কিছু না কিছু বিশেষ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিডিওর কাছে একটা অভিযোগ আসে। তাতেই বলা হয় রাজগঞ্জের ন্যাংটাগছ স্পেশাল ক্যাডার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা সঠিক সময়ে স্কুলে আসেন না। স্কুলে পঠনপাঠনের হাল অত্যন্ত খারাপ। ছাত্ররাও স্কুলে আসে না। ছাত্রদের স্কুলমুখী করতে উদ্যোগ নেন না শিক্ষকেরা। অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার আচমকাই স্কুলে উপস্থিত হন বিডিও। সেখানে গিয়ে দেখতে পান বিদ্যালয়ে একটিও পড়ুয়া নেই। চারজন শিক্ষকের মধ্যে উপস্থিত রয়েছে মাত্র এক জন। দৃশ্য দেখে কার্যত চোখ কপালে উঠে যায় তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রেজিস্ট্রার খাতা বের করে আনতে বলেন। খাতা দেখে বাকি শিক্ষকদের অনুপস্থিত লিখে খাতায় সিল মেরে দেন।
বিডিও স্কুল থেকে বের হতে না হতেই তার কাছে ছুটে আসেন স্কুলের অভিভাবকেরা। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে থাকেন। অভিভাবকদের অভিযোগ শুনে তাঁদের আশ্বস্তও করেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ সরকার জানান, স্কুলের শিক্ষকরা সময় মত আসে না। স্কুলে পড়াশোনা তো হয়ই না। স্কুলে তাড়াতাড়ি মিড ডে মিল খাইয়ে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। আজ বিডিও সাহেবকে কাছে পেয়ে সব খুলে বলেছি।
ক্ষোভ উগরে দেন বিডিও প্রশান্ত বর্মনও। বলেন, এই দৃশ্য দেখে খুব খারাপ লাগল। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসলে বিডিও হওয়ার আগে আমি নিজেই স্কুল শিক্ষক ছিলাম। সরকার আমাদের পেছনে এত টাকা খরচ করছে। তারপরেও স্কুলের এই হাল মেনে নেওয়া যায় না। এলাকার মানুষের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ পেলাম। সবটাই খতিয়ে দেখা হবে।
জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্য মোহন রায় সাফ বলছেন, কাউকে রেয়াত করা হবে না। আইন আইনের পথে চলবে। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে জেলার নিচুতলায় বিভিন্ন পদাধিকারী রয়েছেন। বাচ্চাদের স্কুলমুখী করতে তাঁরা কী করছেন সেটাও একবার খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।