সাত ঘণ্টা দোকান খুলেও বিক্রি নেই! মিষ্টি ফেলে প্রতিবাদ ব্যবসায়ীদের
সকাল সাতটা থেকে দশটা পর্যন্ত হাট-বাজার খোলার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু সে সময় মিষ্টির দোকান বন্ধ। আর যে সময় মিষ্টির দোকান খোলার অনুমতি রয়েছে তখন কার্যত হাট বাজার জনমানব শূন্য থাকে। শুধু মিষ্টি কেনার জন্য খুব একটা বাজারের দিকে কেউ পা বাড়ান না। ফলে দোকান খোলা থাকলেও বিক্রি নেই মিষ্টির।
ধূপগুড়ি: রাজ্য কার্যত লকডাউনে অন্যান্য দোকান তিন ঘণ্টার জন্য খোলার নির্দেশ থাকলেও মিষ্টি দোকানের ক্ষেত্রে সেটা সাত ঘণ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেই সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্তও বিক্রি নেই। প্রতিদিন বিপুল লোকসান হচ্ছে। এমনই অভিযোগ করে একের পর এক ট্রে থেকে মিষ্টি রাস্তায় ফেলে লকডাউনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন এক মিষ্টি ব্যবসায়ী।
টেকাটুলি বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী অমিত মোদক অনুযোগের সুরে বলেন, “প্রায় তিন হাজার টাকার মিষ্টি ফেলে দিলাম। এরকম প্রতিদিন ফেলে দিতে হয় আমাকে। আজকে থেকে তাই দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দোকানে দু’জন কর্মচারী আছেন। তাঁদের খরচ দিতে হয় নিজের পকেট থেকে। মিষ্টির বিক্রি একদম নেই। এই অবস্থায় সরকার একটু দৃষ্টি আকর্ষণ করুক এটাই দাবি জানাই।”
রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে জারি করা হয়েছে লকডাউন। ইতিমধ্যে দ্বিতীয়বার লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি হয়েছে। লকডাউন চলবে আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত। এই লকডাউনের মধ্যে মিষ্টি দোকান খোলার অনুমতি জারি করেছে সকাল দশটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত। কিন্তু দোকান খোলা থাকলেও বিক্রি একদম নেই বলে অভিযোগ মিষ্টি ব্যবসায়ীদের। তাঁদের দাবি, সকাল সাতটা থেকে দশটা পর্যন্ত হাট-বাজার খোলার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু সে সময় মিষ্টির দোকান বন্ধ। আর যে সময় মিষ্টির দোকান খোলার অনুমতি রয়েছে তখন কার্যত হাট বাজার জনমানব শূন্য থাকে। শুধু মিষ্টি কেনার জন্য খুব একটা বাজারের দিকে কেউ পা বাড়ান না। ফলে দোকান খোলা থাকলেও বিক্রি নেই মিষ্টির। এই অবস্থায় প্রতিদিন লোকসানের মুখ দেখছেন তাঁরা।
লকডাউনের জেরে রীতিমতো নাজেহাল মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। ক্রেতার অভাবে রোজ নষ্ট হচ্ছে তৈরি করা মিষ্টি। অন্যদিকে কর্মচারীদের বেতন দিতে হচ্ছে নিজের পকেট থেকে। এই অবস্থায় সোমবার নিজের দোকানের মিষ্টি ফেলে দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ময়নাগুড়ির টেকাটুলি বাজারের অমিত মোদকরা। কার্যত লকডাউনে তাঁদের প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের দাবি জানিয়েছেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা।
এক একটি মিষ্টির দোকানে অন্তত দু’জন কর্মী থাকেন। এই অবস্থায় তাঁদের পারিশ্রমিক যোগাতেও হিমশিম খাচ্ছেন দোকান মালিকরা। অভিযোগ এমনই। মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন কাঁচামাল হিসাবে কয়েক লিটার দুধ কিনে মিষ্টি বানাতে হয়। কিন্তু মিষ্টি বিক্রি না হওয়ায় প্রায় প্রতিদিন লোকসানের মুখে পড়তে হয় তাঁদের।
রাজকিশোর সিং নামে এক মিষ্টি ব্যবসায়ী বলেন, “দোকান খোলা রেখেও লাভ নেই। ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। যান চলাচল বন্ধ। যার ফলে বাইরে থেকে লোকজন শহরে আসছেন না। এমনকি নির্দিষ্ট সময়ের পরে টোটো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই গ্রামের লোকজনও শহরে আসা কমিয়ে দিয়েছেন। এর ফলে কেনা বেচা তেমন নেই। আ গের তুলনায় মাত্র ১০ শতাংশ কেনাবেচা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: টাকা-পয়সা নয়, কপালে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে বিদেশি মদ লুঠ করল দুষ্কৃতীরা
ধূপগুড়ি মিষ্টি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গৌতম ঘোষের কথায়, “একদিন পরপর মিষ্টি বানানো হচ্ছে। তারপরও ফেলে দিতে হচ্ছে। বিক্রিই নেই। মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সরকারের কাছে আবেদন আমাদের সরকারি ভাবে সাহায্য করা হোক।”