Lataguri Deforestation: লাটাগুড়িতে জঙ্গল কেটে আবাসন? কীভাবে চলছে? উত্তরের আঁচ ছড়াল বিধানসভায়
Lataguri: লাটাগুড়ির জঙ্গল কাটার এই অভিযোগ নিয়ে এর আগেও সরব হয়েছে বিজেপি। ৬ মার্চ উত্তরবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ প্রথম বিধানসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন। গত শনিবার বিষয়টি আবারও তিনি উত্থাপন করেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে শুধু বিধানসভার অন্দরে প্রশ্ন তুলেই থেমে থাকছে না বিজেপি শিবির।
কলকাতা ও লাটাগুড়ি: লাটাগুড়িতে জঙ্গল কেটে আবাসন প্রকল্পের পরিকল্পনা কেন? প্রশ্ন তুলে সোমবার বিধানসভা চত্বরে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। জঙ্গল এলাকায় কীভাবে টাউনশিপ? প্রকল্পের কি আইনি বৈধতা আছে? এই সব প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কর ঘোষরা। বিধানসভায় আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে এদিন এই ইস্যুতে বিক্ষোভে সামিল হন বিজেপি বিধায়করা। জলপাইগুড়ির জেলা শাসককে চিঠি দিয়েছে বিষয়টি জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তথ্য জানার অধিকার আইনেও বিষয়টি জানতে চেয়েছেন তিনি। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা মিটে গেলে এই নিয়ে উত্তরবঙ্গে বৃহত্তর আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারিও দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।
উল্লেখ্য, লাটাগুড়ির জঙ্গল কাটার এই অভিযোগ নিয়ে এর আগেও সরব হয়েছে বিজেপি। ৬ মার্চ উত্তরবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ প্রথম বিধানসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন। গত শনিবার বিষয়টি আবারও তিনি উত্থাপন করেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে শুধু বিধানসভার অন্দরে প্রশ্ন তুলেই থেমে থাকছে না বিজেপি শিবির। সোমবার বিধানসভা চত্বরে বি আর আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিজেপি বিধায়করা।
শঙ্কর ঘোষ জানাচ্ছেন, ‘উত্তরবঙ্গের অস্তিত্ব সঙ্কটে। আমি বলেছি, অরণ্য – চা বাগান – পরিবেশ আক্রান্ত। উত্তরবঙ্গে যদি অরণ্য, চা বাগান, পরিবেশ না থাকে, তাহলে উত্তরবঙ্গে থাকল কী? আমি আরটিআই করেছি, পরবর্তীতে গ্রিন ট্রাইবুনালে যাব। প্রয়োজনে জনস্বার্থ মামলা করা হবে।’ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলছেন, ‘কোনও জঙ্গলে আর কাঠ নেই। শেষ করে দিয়েছে। এসব মেনে নেওয়া যাবে না। এমনিতেই উত্তরবঙ্গ অবহেলিত, এখন অরণ্যটাকেও খাচ্ছে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলেই আমরা উত্তরবঙ্গ রক্ষা করার অভিযান শুরু করব।’
এই ইস্যুতে অবশ্য পাল্টা বক্তব্য রয়েছে রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকেরও। তিনি জানাচ্ছেন, ওই জমি বন দফতরের নয়। প্রাইভেট জমি। ওই জমি বন দফতরের রেঞ্জের মধ্যে নয়। বনমন্ত্রী বলেন, ‘ওই জায়গাটি লাটাগুড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে। আর গরুমারা জাতীয় উদ্যান থেকে ৩.২ কিলোমিটার দূরে। অর্থাৎ কোনও ক্ষেত্রেও ওটি আমাদের জায়গার মধ্যে নয়।’
এদিকে এলাকাবাসীরা বলছেন, জঙ্গলঘেরা এলাকায় কীভাবে এত বড় নির্মাণকাজ হচ্ছেন? এই এলাকায় সবসময়ই হাতি, বাইসন, গণ্ডারের মতো বন্যপ্রাণী দেখা যায়। কিন্তু এখানে বিল্ডিং তৈরি হলে বড় ক্ষতি হবে। এই বিল্ডিং হওয়ার অনুমতি পাওয়া গেলে কীভাবে? এদিকে ইতিমধ্যেও ওই এলাকায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
বনমন্ত্রী দায় এড়াতে চাইলেও একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। লাটাগুড়ি রিজার্ভ ফরেস্টের গা ঘেষে ২০ মিটার দূরত্বের মধ্যেই এই নির্মাণ চলছে। ব্যক্তিগত জমি হলেও, জঙ্গলের গা ঘেষে কি এত বড় নির্মাণ সম্ভব? টিভি নাইন বাংলার খবর দেখে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন রাজ্য ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডের সদস্য রাজেশ লাকড়া। তিনি বলছেন, ‘তদন্ত করতে হবে। সেখানে আমরা অফিসিয়ালভাবে ভিসিটে যাচ্ছি।’
রাজনৈতিক তরজা তো চলবে। কিন্তু, লাটাগুড়ির সবুজ ধ্বংস কি আদৌ আটকানো যাবে? পরিবেশপ্রেমীরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, নির্মাণ বন্ধ না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। এখন দেখার পরবর্তীতে এই ঘটনা পরম্পরা কোন দিকে মোড় নেয়।