School in Jalpaiguri: স্কুল ছুট রুখতে চা বাগানের পড়ুয়াদের নিয়ে গাছের তলায় ক্লাস শিক্ষকদের!

Jalpaiguri: বাগানের মধ্যেই গাছের নীচে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। খুশি অভিভাবকরাও।

School in Jalpaiguri: স্কুল ছুট রুখতে চা বাগানের পড়ুয়াদের নিয়ে গাছের তলায় ক্লাস শিক্ষকদের!
মাঠের মধ্যেই চলছে পঠন-পাঠন (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 23, 2022 | 1:09 PM

জলপাইগুড়ি: করোনার বাড়-বাড়ন্ত রুখতে বন্ধ পঠন-পাঠন। তবে একাধিক জায়গায় সরকারি নির্দেশিকা উপেক্ষ করেই খোলা রয়েছে স্কুল অন্তত এমনটাই খবরে এসেছে। এর মধ্যে জলপাইগুড়ি চা বাগানে দেখা গেল অন্য ছবি। সেখানে বাগানের মধ্যেই গাছের নীচে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। খুশি অভিভাবকরাও।

করোনার জেরে দীর্ঘ প্রায় ২ বছর পঠন পাঠন বন্ধ রয়েছে স্কুলে ! কিছুদিনের জন্য দশম শ্রেণীর ক্লাস হলেও ওমিক্রনের দাপটে ফের তাদের ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি অফলাইন মোডে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দুটি বোর্ড পরীক্ষাই হবে বলে উভয় বোর্ডের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধের ফলে জলপাইগুড়ি জেলার চা বাগান এলাকায় বাড়ছিল স্কুল ছুটের সংখ্যা। ‘গাইডেন্সের’ অভাবে অধ্যয়নের বয়সে পড়া ছেড়ে স্বল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়ে মা-বাবাদের মত বাগানের অনেক পড়ুয়াই পা বাড়িয়েছিল শ্রমিক হওয়ার দিকে।

চা বাগানের ওই ছোট্ট চার দেওয়ালের ঘরে শিক্ষার আলো নেই বলেলেই চলে। ফলে শিক্ষার অভাবে পড়াশনা প্রায় ভুলেই গিয়েছিল জলপাইগুড়ি জেলার গয়েরকাটা চা বাগানের খুদে (সপ্তম শ্রেণী) পড়ুয়া অনুস্কা, রোহিত, আলিশারা। ঠিক এই সময়েই প্রয়োজন ছিল এমন কিছু মানুষের যাঁরা ওদের সঠিক পথ চেনাবে।

ডুয়ার্সের আংরাভাসা বংশীবদন উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজেদের উদ্যোগে সেই কাজটি করে দেখালেন। চা বাগানের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য প্রতিদিন নিয়ম করে গাছের তোলায় ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। সেখানে পঞ্চম থেকে নবম তো বটেই, তার পাশাপাশি দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা সামনে থাকায় তাঁরাও এসে ক্লাস করছে। দীর্ঘদিন বাদে অনেকটা স্কুলের মত পরিবেশ পেয়ে ও শিক্ষকদের সান্নিধ্যে চওড়া হাসি ছাত্রছাত্রীদের। স্কুলের এহেন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন অভিভাবক মহল থেকে শুরু করে জেলার শিক্ষা আধিকারিকরাও।

মূলত গয়েরকাটা চা বাগান এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই গাছের তলায় ভিন্ন ভিন্ন ক্লাস অনুযায়ী চলছে পড়াশোনা। কিছুদিন আগে স্কুলে পঠন-পাঠন বন্ধের সরকারি ঘোষণার পর স্কুলের শিক্ষকেরা নিজেরাই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এখানে বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, অঙ্কের পাশাপাশি বাচ্চাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার লক্ষ্যে শারীর শিক্ষার ক্লাসও চলছে। গয়েরকাটা চা বাগান ছাড়া আরও ৩টি পিছিয়ে পড়া এলাকায় ক্যাম্প করে চলছে এই ক্লাস গুলি।

স্কুলের সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া অনুস্কা কেরকেট্টা ও ষষ্ঠ শ্রেণীর পড়ুয়া আলিশা খালকো জানায়, “এতদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় আমাদের বাড়িতে একদমই ভালো লাগত না। আমাদের অনেক বন্ধুরাই এখন আর পড়াশোনা করে না। তবে কিছুদিন হল বাড়ির কাছে ক্লাস চালু হওয়ায় আমাদের বেশ আনন্দ হচ্ছে। আমরা ফের স্কুল খুলক যাতে আমরা সব বন্ধুদের সাথে একসঙ্গে পড়াশোনা করতে পারি।” অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শুক্লা রাউত এবং এক প্রবীন শিক্ষক রতন চন্দ্র রায় জানান, “দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় চা বাগান এলাকা গুলিতে স্কুল ছুটের সংখ্যা দিন দিন যে বাড়ছিল তা আমরা লক্ষ্য করেছিলাম। সেই কারণে এই উদ্যোগ।”

আরও পড়ুন: Percel Blast: ১০ টাকার বিনিময়ে ‘অজান্তেই’ সরবরাহ পার্সেল বোমা, ধরা পড়তেই দাবি টোটোচালকের পরিবারের!