Jalpaiguri Commerce College: ‘চাকরি না দিলে তো বার ডান্সার হতেন’, বিতর্কিত সেই অধ্যক্ষ এবার আদালতে যাচ্ছেন…
Jalpaiguri Commerce College: সিদ্ধার্থ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে প্রথমে সরব হন এই কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপিকা মৌমিতা সেনগুপ্ত।
জলপাইগুড়ি: ‘বার ডান্সার’ বিতর্ক এবার আদালতের অলিন্দ অবধি গড়াতে চলেছে। শুক্রবার স্পষ্ট করে সে কথা জানিয়ে দিলেন জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজ অব কমার্সের অধ্যক্ষ। কলেজের অধ্যাপিকাদের বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। অভিযোগ, আনন্দচন্দ্র কলেজ অব কমার্সের অধ্যক্ষ সিদ্ধার্থ সরকার তাঁরই কলেজের এক অধ্যাপিকাকে বলেন, ” আমি তোমাদের চাকরি দিয়েছি। চাকরি না দিলে তোমরা বার ডান্সার হতে।” স্বভাবতই এই অভিযোগ হইচই ফেলে দেয়। গত মঙ্গলবারই কলেজের অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, অন্যান্য কর্মীদের একাংশ এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজে বিক্ষোভ দেখান। গত কয়েকদিনে এই ঘটনা ঘিরে একটা অস্বস্তির পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে কলেজ ক্যাম্পাসে। এবার আইনি পথে পরিস্থিতি মোকাবিলার কথা জানালেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ।
শুক্রবারই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিদ্ধার্থ সরকার বলেন, “আমি আইনি পথে এগোচ্ছি। ক্রমেই আপনারা তা জানতে পারবেন। আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তার কোনও প্রমাণ নেই। তাই আইন যা বলবে, সেভাবেই আমি এগোব। আইন বলবে কে ঠিক, কে ভুল। আমাকে তো কলেজটা চালাতে হবে।” একইসঙ্গে তিনি পাল্টা অভিযোগ তোলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে, কাজের জায়গায় তাঁকে মানসিকভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। বিষয়টি তিনি পুলিশসুপারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে চিঠি দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও।
সিদ্ধার্থ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে প্রথমে সরব হন এই কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপিকা মৌমিতা সেনগুপ্ত। মৌমিতা সেনগুপ্তের অভিযোগ ছিল, তিনি এবং তাঁর সঙ্গে কয়েকজন ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি প্রফেসরস অ্যাসোসিয়েশন বা ওয়েবকুপা (WBCUPA) করতে চেয়েছিলেন। তাতেই চটে যান অধ্যক্ষ। মৌমিতা সেনগুপ্তের অভিযোগ, “অধ্যক্ষ মাস কয়েক আগে আমাদের সব মহিলাকে বলেছেন আমি তোমাদের এই কলেজে চাকরি দিয়েছি। আমি চাকরি না দিলে তোমরা বারে গিয়ে ডান্স করতে। তাই আমার কথা শুনে চলতে হবে।” এই অভিযোগ, ভালভাবে নেননি কলেজের ছাত্রী থেকে তাঁদের অভিভাবকরাও। নানা গুঞ্জন ক্যাম্পাসে শোনা যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতির সমাধান চেয়ে শুক্রবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এক সাংবাদিক বৈঠক করে। টাউন ব্লক কমিটির সভাপতি শুভব্রত চৌধুরী বলেন, “কলেজের ভিতর নজিরবিহীনভাবে অধ্যাপক-সহ অন্যান্যদের আন্দোলনকে কোনওভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থন করে না। যিনি এই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যর অভিযোগ করেছেন তাঁর কাছে আদৌও কোনও প্রমান আছে কি? আমরা চাই উভয়পক্ষ আলোচনায় বসুক। কলেজে স্বস্তি ফিরুক। আলোচনার মাধ্যমে সব সমাধান করা সম্ভব।”
অন্যদিকে অধ্যক্ষের আদালতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কলেজের হেড ক্লার্ক রাজীব চৌধুরী বলেন, “উনি আদালতে যেতেই পারেন। আমরা যাঁরা এই আন্দোলনে রয়েছি, তাঁদের সকলের তরফে প্রশাসনের যে সমস্ত বিভাগে জানানোর কথা, জানিয়েছি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু-সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। উনি যে ব্যবহার আমাদের সঙ্গে করেছেন, তার সাক্ষী তো আমরাই। অধ্যক্ষ যেভাবে অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের কটূক্তি করেছেন, তা এখন তিনি অস্বীকার করতেই পারেন। আইনি ব্যবস্থাও নিতে পারেন। তাঁর সে ক্ষমতা আছে।”