Jalpaiguri: এবার থেকে জলপাইগুড়িতেই মিলবে ট্রপিক্যাল অর্কিড, বিনামূল্যে তা পেয়ে যাবেন ফুলচাষিরা

Jalpaiguri: উত্তরবঙ্গে গতানুগতিক কৃষি জাত দ্রব্যের পাশাপাশি এবার বানিজ্যিক ভাবে ফুল ও ফলের চাষ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গের জলবায়ুতে ভাল ভাবে বেড়ে উঠতে পারে এমন ফল ও ফুলের চাষকে আকর্ষণীয় করতে একটি ফার্মের সঙ্গে পিপিপি মডেলে ১০ একর জমির উপর ফার্ম হাউস এবং অত্যাধুনিক পলি হাউস গড়ে তোলা হয়েছে।

Jalpaiguri: এবার থেকে জলপাইগুড়িতেই মিলবে ট্রপিক্যাল অর্কিড, বিনামূল্যে তা পেয়ে যাবেন ফুলচাষিরা
জলপাইগুড়িতেই ফুটবে অর্কিড (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 20, 2023 | 9:42 AM

জলপাইগুড়ি: ট্রপিক্যাল অর্কিড পাওয়া যাবে জলপাইগুড়িতে। সম্পূর্ণভাবে সরকারি নজরদারিতে জলপাইগুড়ির জলবায়ুতেই এবার ফোটানো হবে বিশ্বজুড়ে আকর্ষণীয় এই অর্কিড। একইসঙ্গে এই অর্কিড গাছগুলি বিনামূল্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে গোটা উত্তরবঙ্গের কৃষকদের মধ্যে। তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ি মোহিত নগরে।

উত্তরবঙ্গে গতানুগতিক কৃষি জাত দ্রব্যের পাশাপাশি এবার বানিজ্যিক ভাবে ফুল ও ফলের চাষ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গের জলবায়ুতে ভাল ভাবে বেড়ে উঠতে পারে এমন ফল ও ফুলের চাষকে আকর্ষণীয় করতে একটি ফার্মের সঙ্গে পিপিপি মডেলে ১০ একর জমির উপর ফার্ম হাউস এবং অত্যাধুনিক পলি হাউস গড়ে তোলা হয়েছে। এই ফার্ম হাউসে ইতিমধ্যে ড্রাগন ফল,মালটা,আপেল কুল,আম,পেয়ারা এর পাশাপাশি সিডলেস লেবু সহ অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের লেবুর চারা উৎপাদন করা শুরু হয়েছে। যেই চারাগুলি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন ব্লক থেকে চাষিদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা শুরু হয়েছে।

এবার এখানেই তৈরি করা হয়েছে অত্যাধুনিক পলি হাউস। যেখানে মাস খানেকের মধ্যেই এসে পৌঁছবে ট্রপিক্যাল অর্কিড। বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে সেই অর্কিড থেকে চারা তৈরি করে কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

৩১ নং জাতীয় সড়কের পাশে এই এলাকা অবস্থিত হওয়ায় এখানে গড়ে তোলা হবে ক্যাফেটেরিয়া। এখান স্থায়ী ভাবে অর্কিড প্রদর্শন করা হবে। এরফলে উৎসাহী মানুষ একদিকে যেমন এই বাহারি ফুল ও ফল দেখতে পাবেন। পাশাপাশি সরকারি মূল্যে সঠিক গাছগুলিকে তাঁরা কিনতেও পারবেন বলে জানাগিয়েছে।

ট্রপিক্যাল অর্কিডের জন্য কেমন পরিকাঠামোর কাজ চলছে তা সরজমিন খতিয়ে দেখতে জলপাইগুড়িতে মোহিতনগর ফার্ম পরিদর্শন করেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও উদ্যান পালন বিভাগ) ডক্টর সুব্রত গুপ্ত। সঙ্গে দল নিয়ে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। প্রস্তুতি দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

ফার্মের পার্টনার উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ১০ একর জায়গা পড়েছিল। সরকার আমাকে এই জায়গা ব্যাবহার করতে দেওয়ায় আমি ধন্য। আমরা এখানে গতবছর প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ চারা গাছ উৎপাদন করতে পেরেছি। যা পুরোটাই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এখান থেকে আমরা ৬২ লক্ষ টাকা রেভিনিউ সরকারকে দিতে পেরেছি। চলতি বছরে আমাদের টার্গেট দ্বিগুণ। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। এবার আমরা এখানে ট্রপিক্যাল অর্কিড চাষ করব। উত্তরপূর্ব ভারতে এই অর্কিডগুলির ফুল ও গাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই চাষের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের চাষিরা খুব লাভবান হতে পারবেন।”

অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও উদ্যান পালন বিভাগ) ডক্টর সুব্রত গুপ্ত বলেন,”গতানুগতিক চাষের পাশাপাশি সরকার উদ্যোগ নিয়েছে উত্তরবঙ্গে ট্রপিক্যাল অর্কিড, ফুল ও ফল চাষে। এখানকার কৃষকরাও ফুল চাষে বেশ উৎসাহি। ইতিমধ্যে জারবেরা ফুল চাষে উৎসাহ দেখা গিয়েছে। সেই উৎসাহের কথা মাথায় রেখে এবার ট্রপিক্যাল অর্কিড চাষ করব। যা ফুলের বাজারে অন্যতম দামি ফুল। এরজন্য থাইল্যান্ড থেকে খুব ছোট আকারের চারা আনা হবে। সেই গাছ এখানে বড় করে তোলার জন্য বিশেষ পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সেগুলো বড় করা হবে। তারপর সেগুলো কৃষকদের মধ্যে সরবরাহ করা হবে। এতে এখানকার কৃষকরা আগামী দিনে আরও লাভবান হবেন। এছাড়াও ভালো জাতের বিভিন্ন ফলের গাছ যেমন মালটা,ড্রাগন ফল,লেবু,আম যা গত বছর থেকে এখানে পিপিপি মডেলে উৎপাদন হচ্ছে। মেঘালয় থেকে আনা একটি হলুদও চাষ হচ্ছে। নিজেদের প্রয়োজনীয় গাছের চারা আমরা এইভাবে উৎপাদন করার ফলে আমরা বাজার থেকে প্রায় ২০-২৫ শতাংশ কম দামে উন্নত প্রজাতির চারা পাচ্ছি। এরফলে সরকার লাভবান হচ্ছে।”