Jalpaiguri River: শীর্ণ কুমলাই এখন মরা গরু আর হাসপাতালের বর্জ্যের স্তূপ, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে জলপাইগুড়িতে এ কেমন ছবি
Jalpaiguri River:এবারের বিচার্য, প্রশাসন কি পারবে দূষণ রোধ করে নদীটিকে আবার আগের পর্যায়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে?সেটাই এখন প্রশ্ন।
জলপাইগুড়ি: বিশ্ব পরিবেশ দিবসেও দূষিত হল কুমলাই! ধূপগুড়ির লাইফ লাইন বলে পরিচিত এই কুমলাই নদী। কিন্তু এখন তার পরিচয় হারিয়ে নদী পরিণত হয়েছে নালায়, বেআইনিভাবে চলছে নদী দখল। প্রায় তিন বছর আগে ধূপগুড়ি শহরকে গ্রিন সিটি জোন ও প্লাস্টিক ফ্রি হিসেবে ঘোষণা করেছে পৌর – কতৃপক্ষ। অভিযোগ, তারপরও ধূপগুড়ির বুকের ওপর দিয়ে চলে যাওয়া শহরের লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত সেই কুমলাই নদীর দূষণ আটকাতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। কুমলাই দিয়ে অনেক জল বয়ে গেলেও অবস্থার কিন্তু পরিবর্তন ঘটেনি।
নদী যেন পরিণত হয়েছে নালাতে। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজও শহরের সমস্ত নোংরা আবর্জনা এনে ফেলে হয় সেই নদীতেই। অভিযোগ তেমনই। যার ফলে দূষণে জেরবার কুমলাই। ছড়াচ্ছে দূষণ। দূষিত হচ্ছে পরিবেশও।
যেখানে নদী সংরক্ষণের জন্য এর আগে একাধিকবার বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘জল ধর জল ভর’ প্রকল্পের মত ঘোষণাও করে ছিলেন। তারপরেও কিন্তু ধূপগুড়ি শহরের একমাত্র কুমলাই নদীর বেহাল অবস্থা।
৫ জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এই বিষয়টি আরও বেশি করে চোখে পড়ছে। এখানে শহরের বিভিন্ন নোংরা আবর্জনা, বিভিন্ন মেডিক্যাল সেন্টারের ইনজেকশন সিরিঞ্জ , প্লাটিক, মদের বোতল, মরা গরু, ছাগল, কুকুর সমস্তই ফেলা হয় এই কুমলাই নদীতে। এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। সেখান দিয়ে যাতায়াত করতে পচা দুর্গন্ধে মুখে রুমাল বা কাপড় চাপ দিয়ে যেতে হয় সাধারণ মানুষকে।
উল্লেখ্য,অতীতে এই কুমলাই নদীতে গরম পড়লে শহরবাসী স্নান করত, জামা কাপড় কাঁচত। সকাল বিকেল ছিপ দিয়ে ছোট বড় মাছ ধরত। বর্তমানে দূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে নানান প্রজাতির মাঝেই নদী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
কবে ফিরবে কুমলাই নদীর হাল!এর আগে নদীর দূষণ রুখতে নদীর পাড়ে একটি ধর্না মঞ্চ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন পরিবেশ প্রেমীরা। এমনকি বর্তমানে পৌরভোটে থাকা তৃণমূল নেতৃত্বও আগে কুমলাই নদীকে দূষণ মুক্ত করার দাবিতে ধর্নামঞ্চ করে বিক্ষোভ দেখান। তখন পৌর বোর্ডের ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। সময়ের সাথে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল, তবে নদীর কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি।
এবারের বিচার্য, প্রশাসন কি পারবে দূষণ রোধ করে নদীটিকে আবার আগের পর্যায়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে?সেটাই এখন প্রশ্ন।
স্থানীয় বাসিন্দা শেফালি দাস বলেন, “একটা সময় এই নদীটি ভালই ছিল। খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জল ছিল। এখন একদম নোংরা হয়ে গিয়েছে। নদীটির মধ্যে এখন বাজারের হোটেলের নোংরা আবর্জনা প্লাস্টিক মরা কুকুর ,ছাগল, ভেড়া অনেকসময় মরা গরুও ফেলে দেয়। নদী আর মনে হয় না দেখে। দেখলে মনে হয় নালা। আগে আমরা এই নদীর পাড়ে কাজ করলাম এখন পচা দুর্গন্ধে কাছে যেতে পারি না।”
পরিবেশ প্রেমী ডুয়ার্স নেচার অ্যান্ড স্নেক লাভার সংস্থার সদস্য মেহেবুব আলম বলেন, “বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে চারিদিকে গাছ লাগানো হচ্ছে, খুবই ভাল কথা। আমাদের ধূপগুড়ির ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া একমাত্র নদী কুমলাই। দীর্ঘদিন ধরেই সেটা একটা ডাম্পিং গ্রাউন্ড হিসেবে পরিণত হয়ে আসছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন এই নদীকে তার নাব্যতা ফিরিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু প্রতিনিয়ত এই নদীর উপর যে একটা অমানবিক অত্যাচার চলছে যেভাবে রোজ ডাম্পিং গ্রাউন্ড হিসাবে এই নদীকে ব্যবহার করা হচ্ছে।”