পায়ে ছোবল, মাছ ধরার ছিপ এক্কেবারে পেটে গেঁথে গোখরকে নিয়ে সটান হাসপাতালে প্রৌঢ়! তারপর…

Jalpaiguri: জলপাইগুড়ি পাঙ্গা সাহেববাড়ি এলাকার বাসিন্দা বছর বছর চুয়ান্নর গোপাল বর্মন।

পায়ে ছোবল, মাছ ধরার ছিপ এক্কেবারে পেটে গেঁথে গোখরকে নিয়ে সটান হাসপাতালে প্রৌঢ়! তারপর...
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 05, 2021 | 2:17 PM

জলপাইগুড়ি: ঘরের মধ্যে ঘাপটি মেরে পড়েছিল সে। অন্ধকারে এ-ঘর থেকে অন্য ঘরে যাওয়ার সময়ে তার ঘাড়ে উঠেছিল পা! ব্যস, এক্কেবারে ছোবল বসিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বাড়ির কর্তাও যে ছাড়বার পাত্র নয়। এক্কেবারে চিত্কারে ছুটে আসেন বাড়ির সদস্যরা। এক্কেবারে মাছ ধরার ছিপ দিয়ে গেঁথে সাপকে বস্তায় ভরে নিয়ে যায় হাসপাতালে। সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির কর্তাকেও। হাসপাতালে একই সঙ্গে চিকিত্সা পেলেন সাপ ও বছর চুয়ান্নর গোপাল বর্মন। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এক বিরল ঘটনা। সাপের ছোবলে আক্রান্ত ব্যক্তির পাশাপাশি চিকিত্সা হল গোখরোরও।

জলপাইগুড়ি পাঙ্গা সাহেববাড়ি এলাকার বাসিন্দা বছর বছর চুয়ান্নর গোপাল বর্মন। শনিবার রাতে তিনি তাঁর ঘরের একদিক থেকে অন্যদিকে যেতে গিয়ে আচমকাই তাঁর ঘরে লুকিয়ে থাকা একটি গোখরো সাপের গায়ে পা লেগে যায়। গোপালের পায়ে সাপ ছোবল মারে।

তাঁর চিতকার শুনে ছুটে আসেন বাড়ির লোকেরা। এরপর আলো জ্বালালে তাঁরা দেখতে পান, ঘরের কোণায় ফনা উঁচিয়ে আছে একটি গোখরো সাপ। এরপর সাপটিকে মাছ মারার কোচ দিয়ে আটকে নিয়ে বস্তায় ভরে রোগীর সঙ্গে সাপটিকে নিয়ে চলে আসেন জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।

গোপালের শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে আইসিসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয় বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে সেখানেই তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

অপরদিকে, বস্তাবন্দি বিষাক্ত গোখরো সাপ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্মী ও চিকিৎসকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তারা খবর দেন স্থানীয় পরিবেশ কর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরীকে। তিনি গিয়ে সাপটিকে মাছ মারার কোচ থেকে মুক্ত করেন। এরপর হাসপাতালেই তার ক্ষতস্থানে চিকিৎসা করে জঙ্গলে ছেড়ে দেন।

গোপালের ছেলে বলেন, “আমার বাবার পায়ে সাপটি ছোবল মারে। এরপর আমরা ঘরের ভেতর গোখরো সাপটিকে দেখতে পাই। পাছে ডাক্তারবাবু জিজ্ঞেস করেন কোন সাপ কামড়েছে তাই আমরা সাপটিকে মাছ মারার কোচ দিয়ে আটকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। বাবার চিকিৎসা চলছে।”

এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “আমরা তো ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সাপটা যেভাব ফণা তুলে ছিল। হাসপাতালে এমনিতেই অনেক লোক আসেন। সেখানে এইভাবে সাপ বস্তাবন্দি করে নিয়ে আসা ঠিক নয়। রোগীর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আরও কোনও দুর্ঘটনা ঘটতেই পারত। এইভাবে সাপ হাসপাতালে নিয়ে আসা ঠিক নয়। মানুষকে সচেতন হতে হবে।”

ঘটনায় পরিবেশ কর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী বলেন, “সাপ নিয়ে হাসপাতালে আসার দরকার নেই। তাতে সময় নষ্ট হয়। এতে যাঁকে সাপ ছোবল মেরেছে, তার চিকিত্সা শুরু হতে দেরি হয়। সাপটিকে মাছ মারার কোচ থেকে মুক্ত করে চিকিত্সা করে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। ” আরও পড়ুন: ‘ওঁরা তো গরু-ছাগল নন, যে বেঁধে রাখব…’, সৌমেনের তৃণমূল যোগে চরম কটাক্ষ দিলীপের