AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

ঘুটঘুটে কালো অন্ধকারের মধ্যে শুধু জ্বলত দুটো চোখ, আলো ফেলতেই ঝলসে যেত! ধরা পড়ল চা বাগানের বিভীষিকা

জলপাইগুড়ি: কয়েক দিন ধরে তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছিল। তখন গ্রাম থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছিল হাঁস-মুরগি। কখনও ভোরে বাড়ির দাওয়ায় দেখা যাচ্ছিল তার পায়ের ছাপ! আশঙ্কা একটা প্রকার দানা বেঁধে গিয়েছিল গ্রামবাসীদের মনে। অপেক্ষা ছিল শুধু হাতে নাতে প্রমাণের। তার দেখা অবশ্য ততক্ষণে মেলেনি। সেটাও হয়ে যায় কয়েক দিন আগে। চা বাগানের কর্মীদের মোবাইলে তোলা একটি […]

ঘুটঘুটে কালো অন্ধকারের মধ্যে শুধু জ্বলত দুটো চোখ, আলো ফেলতেই ঝলসে যেত! ধরা পড়ল চা বাগানের বিভীষিকা
নিজস্ব চিত্র
| Edited By: | Updated on: Sep 05, 2021 | 7:51 AM
Share

জলপাইগুড়ি: কয়েক দিন ধরে তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছিল। তখন গ্রাম থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছিল হাঁস-মুরগি। কখনও ভোরে বাড়ির দাওয়ায় দেখা যাচ্ছিল তার পায়ের ছাপ! আশঙ্কা একটা প্রকার দানা বেঁধে গিয়েছিল গ্রামবাসীদের মনে। অপেক্ষা ছিল শুধু হাতে নাতে প্রমাণের। তার দেখা অবশ্য ততক্ষণে মেলেনি। সেটাও হয়ে যায় কয়েক দিন আগে। চা বাগানের কর্মীদের মোবাইলে তোলা একটি ভিডিয়োতে ধরা পড়ে সে। আর তাতেই ভাইরাল! ঘুটঘুটে কালো অন্ধকারের বুক চিরে জ্বলছে শুধু দুটো চোখ! ফ্ল্যাশের আলোয়া তা ঝলসে গিয়েছে। ভয় ধরিয়েছিল গ্রামবাসীদের মনে। প্রাণহানির আশঙ্কা তাড়া করে বেড়াচ্ছিল। খবর যায় বনদফতরেও। তারপর থেকেই অভিযান। অবশেষে বনদফতরের পাতা খাঁচায় ধরা পরল পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ।

রবিবার গ্যান্দ্রাপাড়া চা বাগানের ২০ নং সেকশনে বন দফতরে পাতা খাঁচায় ধরা পরে পূর্নবয়স্ক স্ত্রী চিতা বাঘটি। কিছু দিন আগে গ্যান্দ্রাপাড়া চা বাগানে চিতা বাঘ টিকে ঘোরাফেরা করতে দেখতে পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। গুঞ্জন রটে যায় গোটা গ্রামে। আতঙ্ক তখন তড়তড়িয়ে বেড়েছে। তারপর চিতাবাঘ ধরা দেয় চা বাগানের কর্মীদের মোবাইলেও।

চিতা বাঘের সেই ভিডিয়ো ক্যামেরা বন্দি করেন তাঁরা। আর পরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাগান জুড়ে। এরপর এই বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের কাছে আবেদন জানানো হয়। চিতাবাঘ ধরার প্রস্তুতি শুরু হয়। খাঁচা পাতবার কথা চিন্তাভাবনা করা হয়।

বনদফতরের তরফে পাতা হয় খাঁচা। তাতে রাখা হয় একটি ছাগল। দূর থেকে অপেক্ষায় থাকেন বনকর্মীরা। প্রথম দিনটা এমনিতেই পেরিয়ে যায়। আসে না সে। শনিবার গভীর রাতে ছাগলের লোভে আসতেই ধরা পরে।

রাতে বাগানের শ্রমিকরা চিতা বাঘের ডাক শুনতে পান। এরপর বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। সকালে সেই খাঁচার কাছে গিয়ে দেখতে পাওয়া যায়, কার্যত বেরনোর জন্য ছটফট করছে পূর্ন বয়স্ক চিকতাবাঘটি। চিতাবাঘ টিকে উদ্ধার করে ভোররাতে পাঠানো হয় লাটাগুড়ি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে।

চা বাগানের এক শ্রমিকের কথায়, “আমরা তো ভয়েই ছিলাম। রাতে বেশি ভয় লাগতষ সন্ধ্যার পর আর ঘর থেকে বেরোতাম না। কখন হামলা করে। শেষ কয়েকদিনে ভয়টা বেড়েছিল। ওই ভিডিয়োটা দেখার পর। বনকর্মীরা দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। খাঁচা যখন পাতা হয়েছিল, তখনই বুঝেছিলাম, খিদের জ্বালায় তো অবশ্যই আসবে।”

খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ

বাগান কর্তৃপক্ষ বলেন, “এখানে ৬টা লেপার্ড ঢুকছে। কোনও কর্মীরই ক্ষতি হোক চাই না। ছয় সপ্তাহ ধরে চেষ্টা করছি। তারপরই বনকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। প্রথমে যেখানে বাঘটাকে দেখা যায়, সেখানে খাঁচা পাতা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে প্রথমে ধরা পড়েনি। আবার অন্য জায়গায় চেষ্টা করা হয়। শেষমেশ এদিন ধরা পড়ে।” আরও পড়ুন: ‘ঘোরের মধ্যে শুনলাম কারা যেন বলল টেনে বের করে আনতে হবে’, মধ্য রাতে কলকাতায় ভয়াবহ ঘটনা