Jalpaiguri: শিশুর শরীরে রক্তে চুষে খাচ্ছিল পিলে, রক্তশূন্য হয়ে পড়ছিল শিশু, অতঃপর

Jalpaiguri: প্রায় প্রতি মাসে রক্ত দিতে হচ্ছিল জলপাইগুড়ি মোহিতনগর এলাকার মহম্মদ সাকিব নামে আট বছরের শিশুটিকে।

Jalpaiguri: শিশুর শরীরে রক্তে চুষে খাচ্ছিল পিলে, রক্তশূন্য হয়ে পড়ছিল শিশু, অতঃপর
শিশুর জটিল অস্ত্রোপচার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 23, 2022 | 9:37 AM

জলপাইগুড়ি: শিশুর শরীরের সব রক্ত চুষে নিচ্ছিল পিলে ( SPLEEN)। ফলে ঘন ঘন রক্ত শূন্য হয়ে পড়ছিল আক্রান্ত আট বছরের শিশু পুত্র। রক্তশূন্যতার হাত থেকে পরিত্রাণ দিতে “স্প্লিনেকটমি” করে তার পিলে কেটে বাদ দিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক। এখন শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিরল অস্ত্রোপচার। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর শরীর থেকে প্লিহা বাদ দিলেন চিকিৎসকরা। প্লিহা বড় হয়ে যাওয়া এবং থ্যালাসেমিয়ার এই দুইয়ের কারণে ঘন ঘন রক্ত শূন্যতা তৈরি হচ্ছিল শরীরে। প্রায় প্রতি মাসে রক্ত দিতে হচ্ছিল জলপাইগুড়ি মোহিতনগর এলাকার মহম্মদ সাকিব নামে আট বছরের শিশুটিকে।

জানা গিয়েছে, রক্তের রিজার্ভার হিসেবে কাজ করা প্লিহা বড় হয়ে ওঠায় রক্তাল্পতা-সহ একাধিক সমস্যায় ভুগছিল শিশুটি। খিদে কমে আসছিল। শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া শিশুকে নিয়ে কোথায় যাবেন, ভেবে পাচ্ছিল না দিন মজুর পরিবার।

এই অবস্থায় শিশুটির পরিবার জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের দারস্থ হন। চিকিৎসকরা তাঁকে দেখবার পর হাসপাতালে ভর্তি করে নেন। এরপর মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়ে সিদ্ধান্ত নেন ” স্প্লিনেকটমি ” করে তার প্লিহা বাদ দেওয়া হবে। অবশেষে বৃহস্পতিবার বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক ডাক্তার রজত ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে চার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক-সহ মোট ৬ জনের টিম প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অপারেশন করেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সফল অপারেশনের পর এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছে শিশুটি।

মা সইরম বানু জানান, তাঁর স্বামী দিনমজুর। কোনও মতে সংসার চলে। তাঁর উপর প্রতিমাসে এক বোতল করে রক্ত দিতে হয়। এই রক্ত জোগাড় এবং চিকিৎসা চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ছিল তাঁদের কাছে। গত কয়েকমাস ধরে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছিল তাঁদের শিশু। এই অবস্থায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাঁর বাচ্চাকে ভর্তি করে নেওয়া হয়।

ডাক্তার রজত ভট্টাচার্য জানান,  প্লিহা বড় হয়ে ওঠায় রক্তের জোগান কম হচ্ছিল শিশুর শরীরে। অস্ত্রোপচারের ফলে সেই সমস্যা কাটল। থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণে প্রতি মাসেই বাইরে থেকে রক্ত দিতে হত শিশুকে। সেই প্রয়োজনীয়তা এখন অনেকটাই কমবে বলে জানান তিনি।

ঘটনায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের উপ অধ্যক্ষ ডাক্তার কল্যান খাঁ বলেন, “অত্যন্ত জটিল অপারেশন ছিল। প্লিহা একদিকে যেমন শরীরে রক্তের রিজার্ভার। অপরদিকে প্লিহা বেশ কিছু ব্যাকটেরিয়া রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। পিলে বাদ যাওয়ার ফলে শরীরে বাড়তে পারে ব্যাকটেরিয়াঘটিত রোগ তাই আগেভাগে ভ্যাক্সিন-সহ অন্যান্য ওষুধ প্রয়োগ করে আগাম ব্যাবস্থা নিয়ে এই জটিল অপারেশন করা হয়।”

একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন,  এখানে এখন প্রচুর জটিল রোগের চিকিৎসা বিনামূল্যে এখানে করা হচ্ছে। যে কোনও শারিরীক বা মানসিক সমস্যা হলে মানুষজনকে মেডিক্যাল কলেজমুখী হতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।