Jalpaiguri Court: এজলাসে দাঁড়িয়ে বিচারকের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’, সঙ্গে সঙ্গে দিতে হল খেসারত
Jalpaiguri news: বিচারকের নির্দেশে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাঠানো হয় হাজতে। পরে অবশ্য ব্যক্তিগত জামিনে ছাড়া পান তিনি। তবে এখানেই শেষ নয়। শনিবার ফের তাঁকে হাজিরা দিতে হবে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে। আদালতে উপস্থিত থেকে শুক্রবারের কাজের জন্য ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
জলপাইগুড়ি: আদালতে শুনানি চলছিল। জলপাইগুড়ি জেলা আদালত। একটি মানি স্যুট সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছিল। সেই মামলায় শুক্রবার আদালতে সাক্ষী দেওয়ার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল ধূপগুড়ির এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ডেপুটি ম্যানেজারকে। সেখানে এজলাসে দাঁড়িয়েই বিচারক এবং আইনজীবীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ব্যাঙ্কের ডেপুটি ম্যানেজার ওই মহিলার বিরুদ্ধে। সঙ্গে সঙ্গে তার খেসারতও দিতে হল তাঁকে। বিচারকের নির্দেশে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাঠানো হয় হাজতে। পরে অবশ্য ব্যক্তিগত জামিনে ছাড়া পান তিনি। তবে এখানেই শেষ নয়। শনিবার ফের তাঁকে হাজিরা দিতে হবে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে। আদালতে উপস্থিত থেকে শুক্রবারের কাজের জন্য ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সেই মতো শুক্রবার আদালতে হাজির হন তিনি। নিজের ব্যবহারের জন্য অনুতপ্ত তিনি। ক্ষমা চাইলেন আদালতে এসে।
জানা গিয়েছে, এজলাসে শুনানি চলাকালীন বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন তিনি। সেই সময় তাঁর আইনজীবী বিষয়টি নিয়ে তাঁকে সতর্কও করেছিলেন। কিন্তু এরপরও নিজেকে শুধরে নেননি তিনি। ফলে বিচারক পুলিশকে নির্দেশ দেন, তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য। ঘটনার খবর চাউর হতেই শোরগোল পড়ে যায় জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে। পুলিশের ভিড় হয়ে যায়। তড়িঘড়ি আদালতে চলে আসেন ব্যাঙ্কের অন্যান্য আধিকারিকরাও। কিন্তু ততক্ষণে গ্রেফতার করা হয়ে গিয়েছিল ওই মহিলাকে। নিয়ে যাওয়া হয় হাজতে। পরে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তিনি।
এই ঘটনার বিষয়ে ব্যাঙ্কের তরফে আইনজীবী শাশ্বতী কর শুক্রবার বলেছিলেন, “মামলা চলাকালীন ওনার শরীরি ভাষা ঠিক ছিল না। আমি ওনাকে বারবার সতর্ক করছিলাম। কিন্তু উনি আমার কথা শোনেননি। পরে বিচারক তাঁকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পরে তিনি ব্যাক্তিগত জামিনে ছাড়া পান। শনিবার তাঁকে আদালতে উপস্থিত হয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।”
শুক্রবারের ওই ঘটনা জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের ইতিহাসে কার্যত নজিরবিহীন হিসেবেই ব্যাখ্যা করেন জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিপুল রায়। ওই ঘটনার পর তিনি বলেছিলেন, “যা ঘটেছে তা জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের ইতিহাসে নজিরবিহীন। অত্যন্ত খারাপ ঘটনা ঘটল। আদালতে আমাদের সবার উপরে। এখানে আসলে আদালতের নিয়ম-বিধি সকলকেই মানতে হবে। ওনাকে সতর্ক করার পরও উনি বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তাই বিচারক ওনাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। আদালতে দুর্ব্যবহার করলে কী হতে পারে, এই ঘটনা থেকে সবার শিক্ষা নেওয়া উচিৎ।” এদিন ওই মহিলা ক্ষমা চাওয়ার পর বিপুল রায় জানান, আদালতে কীভাবে আচরণ করতে হয়ে, মহিলাকে সেই সংক্রান্ত টিপস দিয়েছেন বিচারক। কীভাবে আদালতে চলতে হয়, কীভাবে কথা বলতে হয়… এই বিষয়ে তাঁকে বুঝিয়েছেন বিচারক।