জলমগ্ন জলপাইগুড়ি, ঘরছাড়াদের রান্না করে খাওয়ালেন পুরসভার চেয়ারপার্সন
Jalpaiguri: তিস্তার জলে প্লাবিত হয়েছে করলা নদী। বানভাসি হয়ে ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক পরিবার। শিবিরে থাকা মানুষদের রাতে নিজের হাতে রান্না করে খাওয়ালেন জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া দেবী।
জলপাইগুড়ি: একের পর এক নিম্নচাপে জেরবার বাংলার মানুষ। উত্তরলবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ ছবিটা একই। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গে যে বন্যা দেখা দিয়েছিল, তার ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি এখনও মানুষজন। মাঝে দুর্গাপুজোর সময় কয়েকদিন বিরতি ছিল। ফের নিম্নচাপের ভ্রুকুটি। এখন আবার খবরে উত্তরবঙ্গ। তিস্তা নদীতে আচমকাই জলস্ফীতিতে ইতিমধ্যেই ঘর হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। সেই বন্যা দুর্গতদের নিজে রান্না করে খাওয়ালেন পুরসভার চেয়ারপার্সন।
তিস্তার জলে প্লাবিত হয়েছে করলা নদী। বানভাসি হয়ে ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক পরিবার। শিবিরে থাকা মানুষদের রাতে নিজের হাতে রান্না করে খাওয়ালেন জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া দেবী। ঘরছাড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আস্থা জোগালেন তিনি। শীঘ্রই কেটে যাবে ফাঁড়া, প্রার্থনা সকলের।
জলপাইগুড়ি তিস্তা ব্রিজ সংলগ্ন বিবেকানন্দ পল্লিতে হাজার চারেক মানুষ বসবাস করে। সেই এলাকায় এখন জল ঢুকতে শুরু করে বুধবার থেকে। এই খবর পেয়ে রাতেই টিম নিয়ে পৌঁছে যান পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। এর পর স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বাঁধ মেরামতের কাজে হাত কাজে লাগায় পুলিশ।
এদিকে পাহাড় ও সমতলে টানা অতি ভারী বৃষ্টি জেরে ব্যাপক জলস্ফীতি হয়েছে তিস্তা নদীতে। একই সঙ্গে জল বাড়ে করলা নদীতেও। ফলে জলপাইগুড়ি পৌর এলাকার ১, ৩ এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ড সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। তাইঈ বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বানভাসি মানুষেরা আশ্রয় নিয়েছেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তায়-রাস্তায়। এঁদের সবার পাশে দাঁড়ালেন জলপাইগুড়ি পুরসভা এবং তৃণমূলের এসসি, এসটি, ওবিসি সেলের সদস্যরা। এলাকায় তড়িঘড়ি খোলা হয় ত্রাণ শিবির।
সেই মানুষরা কেমন আছেন, তা দেখতে বুধবার রাতে ত্রাণ শিবিরে যান পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া দেবী। তিনি যখন পৌঁছন তখন শিবিরের লোকদের জন্য রান্নার তোড়জোড় চলছিল। সেসব দেখে পাপিয়া দেবী নিজেই হাত লাগান। নিজে হাতে বিশাল আকারের কড়াইয়ে খিচুড়ি ও সোয়াবিনের তরকারি রান্না করেন। আর ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের সেই খাবার পরিবেশন করেন তৃণমূল কর্মীরা। এই অবস্থার মধ্যে পুরসভার চেয়ারপার্সনের এমন সহানুভূতিশীল কাজে স্বাভাবিক ভাবে খুশি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষরা।
পাপিয়া দেবীর কথায়, “সারাদিন জল জমার খবর পাচ্ছি। সারাদিন ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। মনে হল রাতের দিকে ওঁরা কেমন আছেন দেখে আসি। তাই পরেশ মিত্র কলোনিতে এলাম।” আর খিচুড়ি রান্না নিয়ে পুরসভার চেয়ারপার্সন বলেন, “বড় কড়াইয়ে রান্না হচ্ছে দেখে একটু খুন্তি নাড়লাম। তবে সবার পাশে থাকাটা ব্যাপার। আশা করছি দ্রুত সমস্যা মিটবে। কয়েকটি এলাকায় জল নামছে বলেও জানান তিনি। তাছাড়া ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের জন্য চিঁড়ে-মুড়ি ইত্যাদি শুকনো খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।”
আরও পড়ুন: North Bengal Weather: গর্জন বাড়ছে তিস্তার! দক্ষিণের পর এবার ভয় ধরতে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গে