‘কাদা-জল, ধাক্কাধাক্কিতে কাগজই তো হারিয়ে যাচ্ছে!’ দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প যেন চাষের জমি!

Duare Sarkar: মানুষ কাদার মধ্যে হুড়োহুড়ি করে যাচ্ছে। কাদায় পা আটকে যাচ্ছে। মাঠের যা অবস্থা তাতে এই মাঠে চাষ করলে আর ট্র‍্যাক্টর লাগবে না। বলে হেসেই ফেললেন ঘেমেনেয়ে এককার ওই মহিলা। বললেন, 'ধানের চারা লাগিয়ে দিলেই এমনিই ধান হয়ে যাবে এখানে।'

'কাদা-জল, ধাক্কাধাক্কিতে কাগজই তো হারিয়ে যাচ্ছে!' দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প যেন চাষের জমি!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 23, 2021 | 5:49 PM

জলপাইগুড়ি: বৃষ্টিতে মাঠ জুড়ে জমেছে জল। তার মধ্যেই দুয়ারে সরকারের (Duare Sarkar) ক্যাম্পের লাইনে দাঁড়িয়ে ধাক্কাধাক্তিতে কার্যত যুদ্ধের ময়দান সরকারি শিবির। দূর থেকে মনে হতেই পারে এটা চাষের জমি। তবে চোখে চা দেখলে বিশ্বাস করা যায়না যে এখানেই চলছে দুয়ারে সরকারের শিবির!

দুয়ারে সরকারের পরিষেবা নিতে এসে চরম ভোগান্তির অভিযোগ উঠলো জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর অঞ্চলে। এক হাঁটুজল কাদা ঠেলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ অন্যান্য সরকারি পরিষেবা নিতে এসে দিনভর নাকাল মানুষজন। সংবাদমাধ্য়মের সামনে ক্ষোভ উগরে দিলেন গ্রামের মহিলারা। কেউ বলছেন, কাগজ সামলাব না লাইনের ধাক্কা সামলাব। কেউ বলছেন, ধাক্কাধাক্কিতে সরকারি কাগজই তো হারিয়ে ফেলছি! এমনই সব ঘটনার সাক্ষী জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর অঞ্চলের অন্তর্গত আর আর প্রাথমিক স্কুলে চলা দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প।

গত কয়েকদিন ধরে চলা টানা বৃষ্টির জেরে এই স্কুলের মাঠ জল কাদায় ভরে গিয়েছে। অভিযোগ, কোনও রকম ব্যবস্থা না নিয়ে সেখানেই চলছে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প। আর এর জেরে পরিষেবা নিতে এসে দিনভর নাকাল হলেন কয়েক হাজার মানুষ। কাদা মাখা পা আর ভিড়ে ঘামছেন। তার মধ্যেইব সামলাতে হচ্ছে দরকারি কাগজপত্র। আর করোনা দূরত্ববিধি? ‘দাঁড়াতে পারছি না, হাঁসফাঁস করছি, তার আবার মুখে মাস্ক!’ সটান জবাব পরিষেবা নিতে আসা এক প্রৌঢ়ার।

এদিন দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে পরিষেবা নিতে এসেছিলেন জনৈক অনুপমা রায়। তিনি বলেন, সকাল থেকে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। গোটা মাঠ জল আর কাদায় ভর্তি। তবু বাধ্য হয়ে তার মধ্যেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। এরমধ্যে মানুষ কাদার মধ্যে হুড়োহুড়ি করে যাচ্ছে। কাদায় পা আটকে যাচ্ছে। মাঠের যা অবস্থা তাতে এই মাঠে চাষ করলে আর ট্র‍্যাক্টর লাগবে না। বলে হেসেই ফেললেন ঘেমেনেয়ে এককার ওই মহিলা। বললেন, ‘ধানের চারা লাগিয়ে দিলেই এমনিই ধান হয়ে যাবে এখানে।’

সুন্দরী রায় নামে আরেক মহিলা জানালেন ফর্ম নিয়েছেন। কিন্তু ফর্ম পূরণ করে দেওয়ার লোকই নেই বলে অভিযোগ তাঁর। তাই আবার বাড়ি গিয়ে ফর্ম ফিল-আপ করে আগামী ক্যাম্পে এসে ফর্ম জমা দিতে হবে। আবার এই জলকাদার মধ্যে এসে দাঁড়াতে হবে এই চিন্তাই যেন এখন তাঁর কাছে বেশি।

সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান বেনুরঞ্জন সরকার সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে বলছেন, “গত কয়েকদিন ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে। তাই স্কুল মাঠে জলকাদা হয়ে গেছে। কিন্তু ক্যাম্প বন্ধ রাখলে তো আবার মানুষ সমস্যায় পড়বেন। তাই আমরা একপ্রকার বাধ্য হয়ে এই অবস্থার মধ্যে আজকের ক্যাম্প পরিচালনা করতে হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, ফর্ম ফিল-আপ করার লোক রয়েছে। কিন্তু তাঁদের জায়গার অভাবে বসতে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই সেচ্ছাসেবকরা ইতস্তত বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফর্ম ফিল আপ করছেন। এমনই ছবি দুয়ারে সরকারের এক শিবিরের। আরও পড়ুন: ‘আমরা আর দুয়ারে সরকারে কাজ করব না,’ বিডিও-র বিরাশি শিক্কার চড়ে চোখ ছলছল কর্মীর