তালিবানি ফতোয়ায় সঙ্কটে ডুয়ার্সের চা শিল্প! চিন্তায় শিল্প মহল

জলপাইগুড়ি: আফগানিস্তান (Afganistan) এখন তালিবানদের (Taliban) দখলে। আর তার পরোক্ষ প্রভাব পড়তে চলেছে ডুয়ার্স চা শিল্পেও (Tea Industry)। কীভাবে? তালিবান শাসকরা ভারত থেকে সবরকম পণ্য সামগ্রী আমদানি ইতিমধ্যেই বন্ধ করেছে। ভারত থেকে অন্যান্য খাদ্যশস্য ও পন্যসামগ্রীর সঙ্গে বিরাট পরিমাণ রফতানি হত উত্তরবঙ্গের চা। তালিবানি ফতোয়ার জেরে সেই রফতানি এখন থমকে গিয়েছে। এতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ […]

তালিবানি ফতোয়ায় সঙ্কটে ডুয়ার্সের চা শিল্প! চিন্তায় শিল্প মহল
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 22, 2021 | 10:00 PM

জলপাইগুড়ি: আফগানিস্তান (Afganistan) এখন তালিবানদের (Taliban) দখলে। আর তার পরোক্ষ প্রভাব পড়তে চলেছে ডুয়ার্স চা শিল্পেও (Tea Industry)। কীভাবে? তালিবান শাসকরা ভারত থেকে সবরকম পণ্য সামগ্রী আমদানি ইতিমধ্যেই বন্ধ করেছে। ভারত থেকে অন্যান্য খাদ্যশস্য ও পন্যসামগ্রীর সঙ্গে বিরাট পরিমাণ রফতানি হত উত্তরবঙ্গের চা। তালিবানি ফতোয়ার জেরে সেই রফতানি এখন থমকে গিয়েছে। এতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের কর্ণধারদের। কী হবে এবার? ব্যবসার একটা বড় অংশই যে এবার মার খাবে! উদ্বেগ ডুয়ার্সের চা মালিক ও কর্ণধারদের মধ্যে।

চা শিল্পের প্লান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরামর্শক (সিসিপিএ) কমিটির সম্পাদক অভিজিৎ রাহা বলছেন, ভারত থেকে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ৬ লক্ষ কেজি চা রফতানি হয়েছে। যার এক শতাংশ আফগানিস্তানে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এই পরিমাণ কিছু কম নয় বলে দাবি তাঁর। বলছেন, করোনা কালে আফগানিস্তানে গরম জল ও চা পানে প্রবণতা বাড়ছিল। তাই ধীরে ধীরে এ দেশ থেকে চায়ের রফতানিও বাড়ছিল। এই রকম পরিবেশে হঠাৎই রফতানি থেমে যাওয়ায় উদ্বেগের বইকি। এভাবে হঠাৎ ডুয়ার্সের চা রফতানি বন্ধ হলে সঙ্কট আসতে পারে শিল্পে, আশঙ্কা অভিজিৎবাবুর।

ডুয়ার্সের প্রবীণ সোনগাছি, চা-বাগানের ম্যানেজার রাধেশ্যাম খান্ডেলওয়ালরা বলছেন, এখনও বিস্তারিত বিষয় তাঁরা জানেন না। তবে সংবাদমাধ্যম, পত্রপত্রিকা থেকে যেটুকু জেনেছেন, তাতে রয়েছে ভারত থেকে আফগানিস্তান আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। তাই উদ্বেগে রয়েছেন তাঁরা। রাধেশ্যামের কথায়, “ওরা আমদানি বন্ধ করলে আমাদের রফতানি বন্ধ হবে। সহজ কথা। তার ফলে পণ্য বিক্রির ঘাটতি হবে। এটাই তো চিন্তার বিষয়।”

উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট চা গবেষক তথা টি-অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার সচিব রাম অবতার শর্মা জানান, বিষয়টি সত্যিই চিন্তার। গত তিন বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা গিয়েছে প্রতি বছর কমবেশি ২০ কোটি টাকার চা আফগানিস্তানে রফতানি হয়েছে এখান থেকে। এর বেশিরভাগই গ্রিন-টি। ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি, মালনদী, টুনবাড়ি, জলঢাকা-সহ কয়েকটি চা-বাগান গ্রিন-টি উৎপাদন করে। তাদের চা-বাগানগুলিই চা-অর্থনীতিকে টিকিয়ে রেখেছে বলা যায়। এখন আচমকা রফতানি বন্ধ হলে এই সব গ্রিন-টি উৎপাদনকারী চা-বাগানগুলি থেকে পণ্য বিক্রি ব্যাহত হবে। দেশে তো আর চা-এর সেরকম বাজার নেই। তাই চা-শিল্পে সঙ্কট বাড়বে বলে মনে করছেন রাম অবতার শর্মা।

তাঁর কথায়, “চলতি বছর সবেমাত্র রফতানি শুরু হয়েছিল। কারণ, কাবুলিওয়ালারা শীতের সময় গ্রিন-টি পান করেন। এসময় এরকম ভাবে রপ্তানি থেমে গেলে গ্রিন-টি উৎপাদনকারী চা-বাগান গুলির সমস্যা বাড়বে। এর জন্যই আমরা চিন্তিত। দেখা যাক কী হয়?”

চা-বাগান মালিক সংগঠন ডিবিআইটি-এর সেক্রেটারি সঞ্জয় বাগচি জানান, “আমাদের এখান থেকে এক থেকে ২ শতাংশ গ্রীন-টি এবং সিটিসি চা আফগানিস্তান যায়। গতবছরও গিয়েছিল। কিন্তু এবছর আফগানিস্তানের যা অবস্থা তাতে চা-শিল্পে প্রভাব পড়বে। আমাদের এখানে ২৩০-২৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়। গত বছর, ১২ কোটি টাকা ব্যবসা হয়েছে আফগানিস্তানে। তবে এবছর যা পরিস্থিতি আফগানিস্তানের তাতে তার প্রভাব চা শিল্পেও পরবে। শুধু যে গ্রীন-টি আফগানিস্তান যেত এমনটাও নয়। গত বছর অসমের সিটিসি চা-ও গিয়েছিল।” আরও পড়ুন: ফাটছে কপাল, চড়া রোদে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কেউ হচ্ছেন অসুস্থ, এত দুর্ভোগের পরও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাবেন তো? প্রশ্ন মহিলাদের