ফের রক্তাক্ত বাংলা! টিকা চেয়ে পদপিষ্ট কমপক্ষে ২৫, গুরুতর জখম পুলিশও

COVID Vaccination: ধুপগুড়ি স্বাস্থ্য়কেন্দ্রে টিকাপ্রাপকদের হুড়োহুড়িতে শিবিরের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এসে পদপিষ্ট পুলিশও। 

ফের রক্তাক্ত  বাংলা! টিকা চেয়ে পদপিষ্ট কমপক্ষে ২৫, গুরুতর জখম পুলিশও
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 31, 2021 | 3:30 PM

ধূপগুড়ি ও মুর্শিদাবাদ: টিকা লাইনে (COVID Vaccination) ফের রক্তারক্তি। ধুপগুড়িতে টিকার লাইনে ২৫ জন পদপিষ্ট। গুরুতর আহতদের জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার, ধুপগুড়ি স্বাস্থ্য়কেন্দ্রে টিকাপ্রাপকদের হুড়োহুড়িতে শিবিরের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এসে পদপিষ্ট পুলিশও। এদিন, শুধু ধুপগুড়ি নয়, মুর্শিদাবাদের মেডিক্যাল কলেজের টিকাকেন্দ্রেও এই হুড়োহুড়ির ছবি সামনে এল।

টিকাপ্রাপকদের অভিযোগ, টিকা নিতে স্বাস্থ্য়কেন্দ্রের বাইরে রাত থেকে লাইন দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, এসে দেখা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গেট বন্ধ। সকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গেট খুলতেই হুড়মুড়িয়ে কাতারে কাতারে  টিকাকেন্দ্রের দিকে ধেয়ে যান সকলে। আর তাতেই বিপত্তি! হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হন কমপক্ষে ২৫ জন টিকাপ্রাপক। অভিযোগ, টিকার পরিমাণ কম থাকায়  এই বিপত্তি। এমনকী কতজন টিকা পাবেন তাও নির্দিষ্ট করা ছিল না বলে অভিযোগ।ফলে, গেট খুলতেই আগে টিকা নেওয়ার দৌড়ে লাইনচ্যুত হয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে ছুটে যান কাতারে কাতারে মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আহত  পুলিশও। পদপিষ্ট হন বেশ কিছু আধিকারিক।

অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের টিকাকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার ছবি সামনে আসে। সেখানেও টিকাপ্রাপ্তি নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। নিরাপত্তা রক্ষী না থাকায় বিশৃঙ্খলা বলে অভিযোগ। ঘণ্টাখানেকের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। যদিও, ওই ঘটনায় বিশেষ কেউ আহত হননি। প্রশ্ন উঠছে বারবার কেন জেলাজুড়ে টিকাকেন্দ্রে এমন বিশৃঙ্খলার ছবি সামনে আসছে? কেন যথার্থ পদক্ষেপ করছে না রাজ্য সরকার?

ঘটনায় বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার বলেন, “বিনামূল্যে টিকা সকলের প্রাপ্য। সরকারের কোনও পলিসি নেই, নীতি নেই। স্বাস্থ্যদফতর কোনও স্বচ্ছ পদক্ষেপ করেনি। ফলে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু, শাসক শিবির মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন।” বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “লক্ষ্মীর ভাণ্ডার হোক বা টিকার লাইন সবক্ষেত্রে সরকার ও প্রশাসনের অপদার্থতা স্পষ্ট। টিকা নিতে চায় মানুষ বাঁচার জন্য। সেখানে টিকা নিতে গিয়ে পদপিষ্ট হচ্ছেন! রাজ্য়ে টিকা নিয়ে যে অব্যবস্থা শুরু হয়েছে তাতে স্পষ্ট টিকা দেওয়ার ইচ্ছে নেই রাজ্য সরকারের। টিকা নিয়ে বাইরে বিক্রি করার চেষ্টা করছে সরকার।” পাল্টা তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, “সমস্ত নিয়ম করা হয়েছে। কিন্তু প্রাণের দাবি থাকলে যে তাগিদ অনুভূত হয়, তাতে কি এইভাবে পরিস্থিতি ঠেকানো যাবে! রাজ্যে পর্যাপ্ত টিকা রয়েছে, কিন্তু, সাধারণ মানুষের বুঝতে সময় লাগবে।”

সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, রাজ্যের স্বাস্থ্যভবন টিকাকরণে যে নির্দেশ দিয়েছিল তা কোনও অংশেই মানা হয়নি। রাজ্যে টিকার জোগান পর্যাপ্ত থাকলেও কেন টিকার এই আকাল? বিশ্লেষকদের দাবি, সরকারি টিকাকরণের ক্ষেত্রে অনেকক্ষেত্রেই কোনও স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়নি। একদিনে কতজনকে টিকা দেওয়া হবে, টিকার কোন ডোজ দেওয়া হবে, টিকাকেন্দ্রে সর্বোচ্চ কতজন উপস্থিত থাকতে পারে এই সমস্ত নির্দেশ যথাযথ কোথাওই মানা হয়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টিকাকরণের পুরো কর্মসূচি নিয়ন্ত্রিত হয়েছে সেই এলাকার শাসক শিবিরের নেতৃত্ব, মেয়র, কাউন্সিলরের মাধ্যমে। ফলে, এই বিশৃঙ্খলা অবধারিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কিছুদিন আগেই TV9 বাংলার খবরের জেরে সামনে আসে পানিহাটি  টিকা দুর্নীতির ছবি। অন্যদিকে, ‘বাংলা টিকাকরণে প্রথম’ এমন তথ্য় তুলে ধরে আসানসোল জুড়ে পড়েছিল ব্যানার। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময়ে জেলা জুড়ে টিকাকরণকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও বিশৃঙ্খলার ছবি সামনে এসেছে। বিনামূল্যে টিকাকরণ হোক, সকলেই টিকা পান এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। আরও পড়ুন: জোর সরগরম! একই দিনে CID ও CBI পৌঁছল নন্দীগ্রামে