Protection of senior citizen: ‘মদ খেয়ে এসে ছেলেরা মারে, বউরা উসকায়’, সন্তানদের ঘাড় ধাক্কা খেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ মা-বাবা
Jalpaiguri: যদিও ছেলেদের দাবি, তাঁদের উপরই মা, বাবা অত্যাচার করেন।
জলপাইগুড়ি: বহু যন্ত্রণা, লড়াইকে ঠেলে নিজের শরীরে তিলে তিলে রক্ত মাংসের মানব মূর্তি তৈরি করেন যিনি, তিনি মা। আর তাঁর এই লড়াইয়ে সর্বতোভাবে সাহস, শক্তি জুগিয়ে যান যিনি, তিনিই বাবা। কিন্তু একটা সময়ের পর এই সন্তানের বিরুদ্ধেই মা, বাবার গায়ে হাত তোলা, নির্যাতন, এমনকী সর্বস্ব কেড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার মতো নিকৃষ্ট অভিযোগও ওঠে। যেমনটা ঘটেছে জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানা এলাকায়। জলপাইগুড়ি রায়কত পাড়ার বাসিন্দা মুক্তিরানি ভৌমিক ও উৎপল ভৌমিক। তাঁদের দুই ছেলে। অভিযোগ, দুই ছেলে ও দুই বৌমা তাঁদের উপর প্রতিনিয়ত অত্যাচার করতেন। তবু এতদিন বাড়িতে থাকার অধিকার ছিল এই বৃদ্ধ দম্পতির। অভিযোগ, শনিবার তাঁদের বাড়ি থেকেই বের করে দেওয়া হয়। অসহায় বুড়ো বুড়ি দ্বারস্থ হন থানার। তাঁদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দুই ছেলে, দুই বৌমাকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। এমন ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে পাড়ায়। রবিবার আদালতে তোলা হবে তাঁদের।
জলপাইগুড়ি রায়কত পাড়ার বাসিন্দা মুক্তিরানিদেবী ও তাঁর স্বামী উৎপল ভৌমিক পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁদের দুই ছেলে নিয়মিত নেশা করে বাড়িতে ফেরেন। রোজই বাড়ি ফিরে মা, বাবার উপর সম্পত্তি লিখিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। স্বামীদের এই আচরণে পাশে দাঁড়ান দুই বউ। অভিযোগ, শনিবার সকাল ৮টা নাগাদ শাশুড়ির চুলের মুঠি ধরে মারধর করেন দুই বউ। তাতে উস্কানি দেন দুই ছেলে। বৃদ্ধাকে বাঁচাতে গিয়ে মার খান উৎপলবাবুও। এরপরই বাড়ির বাইরে বের করে দেওয়া হয় ওই দম্পতিকে।
তবে সাহস হারাননি তাঁরা। সোজা গিয়ে হাজির হন পুলিশের কাছে। সবটা লিখিত দেন। পুলিশ সরেজমিনে তদন্তে গিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন। পড়শিরাও জানান, এই বৃদ্ধ দম্পতির উপর অত্যাচার চলে। এলাকার লোকজনও পুলিশের কাছে এর বিহিত চান। এরপরই চারজনকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এ প্রসঙ্গে এলাকার কাউন্সিলর মহুয়া দত্ত বলেন, যেহেতু তাঁরা থানার দ্বারস্থ হয়েছেন তাই এবার যা করার পুলিশই করবে।
এই ঘটনায় ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সমীর পাল বলেন, মুক্তিরানি ভৌমিক ও উৎপল ভৌমিকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দুই ছেলে উদয়শঙ্কর ও অর্ণব এবং তাঁদের স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়। উদয়শঙ্কর ভৌমিকের কথায়, “আমারা কষ্ট করে বাড়ি ঘর সাজিয়েছি। এখন মা বাবা বলছে তোরা বাড়িতে থাকতে পারবি না। যেহেতু ওদের নামে বাড়ি তাই এখন অন্য কথা বলছে। মারধর করার কথা একেবারেই মিথ্যা। ওরা আগেও বলত। একবার আমি আমার বউ নিয়ে বাড়ি থেকে চলেও গেছি। পাড়ার লোককেও মিথ্যা বুঝিয়েছে। ” ছোট ছেলে অর্ণব আবার পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, “আমরা কেন মাকে মারব? তার মানে নিশ্চয়ই ওরা আমাদের সঙ্গে খারাপ কিছু করছে। আমার বউকে মা আজ মেরেছে। আমার কাছে ভিডিয়ো রেকর্ডিংও আছে।”