Jalpaiguri: ‘কাক কাকের মাংস খায় না’, বিধায়কের বাড়ির গৃহবধূকে হেনস্থার অভিযোগে তরজায় দুই তৃণমূল নেতা
Jalpaiguri: খগেশ্বর রায় অভিযোগ করে বলেন, 'বধূ নির্যাতন কাণ্ডে তিনি ও তাঁর পরিবার কোনও ভাবে জড়িত নন। যেহেতু বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে তাই আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। আইন-আইনের পথে চলবে।'
রাজগঞ্জ: গৃহবধূ নির্যাতন নিয়ে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ। একে অপরকে দোষারোপ করেই চলেছন, তবুও ক্ষান্ত হচ্ছেন না তৃণমূলের দুই নেতা।
রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ এনে আদালতের দারস্থ হয়েছিলেন বিধায়কের পুত্রবধূ পিঙ্কি রায়। বিষয়টি নিয়ে আদালত পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। আগামী মাসের ১২ তারিখ রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে এই বিষয়ে। এদিকে, ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ফের শুরু হয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। বিধায়ক খগেশ্বর রায় ও জলপাইগুড়ি জেলার এস সি এস টি ওবিসি সেলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাস এই দুই যুযুধান নেতার মধ্যে রীতিমত যুদ্ধ বেধে গিয়েছে।
খগেশ্বর রায় অভিযোগ করে বলেন, ‘বধূ নির্যাতন কাণ্ডে তিনি ও তাঁর পরিবার কোনও ভাবে জড়িত নন। যেহেতু বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে তাই আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। আইন-আইনের পথে চলবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই চক্রান্ত শুরু হয়েছে গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকে। তিনি যাতে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী না হতে পারেন তার জন্য চেষ্টা করেছিলেন তাঁদের দলের অপর এক নেতা।’ নাম না করে কৃষ্ণ দাসের দিকে এমন ইঙ্গিত করেছেন খগেশ্বর বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়কের দাবি, তাঁর চক্রান্তে সেই সময় থানার দারস্থ হয়েছিল তাঁর পুত্রবধূ। ভোটে তাকে হারাবার চেষ্টাও করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নেতা কোনও লাভ করতে পারেনি। তিনি মমতা ব্যানার্জীর আশীর্বাদে জিতেছেন। এখন তিনি বিধায়ককের পাশাপাশি তৃণমূলের চেয়ারম্যান।’ তৃণমূল বিধায়ক আরও জানিয়েছেন, সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই এখন তাঁকে ফের বদনাম করা যায় সেই লক্ষে বিজেপির সঙ্গে গোপনে যোগসাজশ করে আবার পুরোনো কাসুন্দি ঘাঁটা হচেছে।
খগেশ্বর বলেন, ‘আমার পারিবারিক বিষয় নিয়ে জনসভা থেকে প্রকাশ্যে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন ওই নেতা। এখন দেখা যাচ্ছে কাক কাকের মাংস খাচ্ছে। বিজেপির হাত শক্ত করতে এসব করে এবারেও খুব একটা লাভ করতে পারবে না। কারণ এসসিএসটি ওবিসি সেল আর একসাথে থাকছে না। এই সেল ভেঙে তিনটি আলাদা সেল তৈরি হচ্ছে। নতুন সেল তৈরি হলে তার আর জেলা সভাপতি থাকা হবে না। আর এতেই ওই নেতা তার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে এসব উল্টো-পাল্টা বকছেন।’
ঘটনায় পালটা তোপ দেগেছেন এস সি এস টি ওবিসি সেলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাস। দাপুটে এই নেতার বক্তব্য, ‘খগেশ্বর রায়ের পরিবারের এক দুইজন নয় তাদের পরিবারের পাঁচ পাঁচটি গৃহবধূ অত্যাচারিত হয়ে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে থানার দারস্থ হয়েছেন। যিনি জননেতা তাঁর পরিবারের ৫ জন গৃহবধূ কেন অত্যাচারিত হবে। আর অভিযোগ জানাতে থানায় যাবে। তাহলে সেই জননেতার ভাবমূর্তি দলের অবশ্যই ক্ষতি করবে। তাই এমন নেতাকে দরকার নেই।’ একই সঙ্গে আরও বলেন, ‘গত লোকসভা ও বিধানসভা এই দুই নির্বাচনে খগেশ্বর রায় তার নিজের বুথ নিজের অঞ্চলে হেরেছেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জী, অভিশেখ ব্যানার্জী তাঁকে বলেছিল রাজগঞ্জ আসনে যাতে খগেশ্বর রায় জেতে সেই ব্যাপারে বিশেষ পদক্ষেপ করতে। তিনি তার অনুগামীদের নিয়ে প্রচণ্ড খেটে তাঁর অঞ্চল থেকে ব্যাপক লিড নিয়ে খগেশ্বর রায়কে জিতিয়েছেন।’