Death: ‘পুলিশের গাড়ির ধাক্কায়’ যুবকের মৃত্যু, ধুন্ধুমার ধূপগুড়িতে! ভুল ছিল পুলিশের গাড়িরই, বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা

Dhupguri: ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রামীণের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র‍্যাফ এলাকায় আসে।

Death: 'পুলিশের গাড়ির ধাক্কায়' যুবকের মৃত্যু, ধুন্ধুমার ধূপগুড়িতে! ভুল ছিল পুলিশের গাড়িরই, বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা
পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 10, 2022 | 9:00 PM

জলপাইগুড়ি (ধূপগুড়ি): রবিবার বিকেলে ধুন্ধুমারকাণ্ড ধূপগুড়িতে। অভিযোগ, পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় এক যুবকের মৃত্যু হয়। এরপরই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা। অভিযোগ, পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি উঁচিয়ে ধাওয়া করে পুলিশ। কারও কারও গায়েও লাঠির বারি পড়ে। এরপরই এশিয়ান হাইওয়ে (৪৮) অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। রবিবার বিকেলে ধূপগুড়ি শহরের মিলপাড়া এলাকায় এক জেলা পুলিশের আধিকারিকের গাড়ির ধাক্কায় এক বাইক চালকের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। মৃতের নাম বাসুদেব রায়। ধূপগুড়ির ঠাকুরপাট এলাকার ছিলেন তিনি। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে যেহেতু অভিযোগের আঙুল, পুলিশ সুপার তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, নিহত যুবক বাসুদেব রায় পেশায় একজন গাড়ি চালক। এদিন মালিকের মোটর বাইক নিয়ে বাড়িতে খেতে যাচ্ছিলেন তিনি। মিলপাড়া এলাকায় এক পুলিশ আধিকারিকের গাড়ির সঙ্গে তাঁর গাড়ির ধাক্কা লাগে বলে অভিযোগ। এতেই গুরুতর আহত হন তিনি। বাসুদেবকে উদ্ধার করে ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এরপরই এলাকা সরগরম হতে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছিল পুলিশ। তবে কিছু পরে বাসুদেবের মৃত্যুর খবরকে সামনে রেখে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ধূপগুড়ি থেকে গয়েরকাটাগামী এশিয়ান হাইওয়ে অবরোধ করে। রীতিমত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসেন ধূপগুড়ি থানার আইসি। তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয়রা। বিক্ষুব্ধদের মধ্যে থেকে এমন অভিযোগও ওঠে, যে গাড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার কাগজপত্র ঠিকঠাক নেই। গাড়ির বিমার কাগজপত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।

ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রামীণের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র‍্যাফ এলাকায় আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জেরও অভিযোগ ওঠে। কয়েকজনকে আটকও করে পুলিশ। এরপরই এশিয়ান হাইওয়েতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। রাত অবধি ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়ন ছিল।

এক বিক্ষোভকারী রাজু বিশ্বাস বলেন, “পুলিশের গাড়ি বেপরোয়াভাবে যাচ্ছিল। বাইক চালকের কোনও ভুলই ছিল না। অথচ সেই বাইকে এসে ধাক্কা মেরে দিল। এমনকী ছেলেটাকে ধাক্কা মারার পর প্রায় ৭ মিনিট ওখানেই পড়েছিল। অথচ পুলিশের যে গাড়িটা ধাক্কা মারল তারা তুলল না পর্যন্ত। পরে এলাকার সকলে ভিড় করলে তখন উদ্ধার করে নিয়ে যায় হাসপাতালে। এই মৃতের পরিবারের দায়িত্ব পুলিশকে নিতে হবে। আর পুলিশের গাড়ির কাগজপত্র সময় পার করে গিয়েছে। আমরা অনলাইনে দেখেছি। আমরা বিচার চাই। তাই পথ অবরোধ করেছি।”

প্রত্যক্ষদর্শী মনোজ সরকার বলেন, “পুলিশের গাড়ি দ্রুতগতিতে এসে ধাক্কা মারে যুবককে। আহত অবস্থায় তাঁকে ফেলে পালানোর মতলব ছিল। স্থানীয়রা তা হতে দেননি। পুলিশের গাড়ির ভুলের কারণেই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সাধারণ মানুষ ছোট ভুল করলে ট্র্যাফিক পুলিশ বড় ফাইন করে, আর পুলিশের গাড়ির কাগজপত্র ফেল এবং পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল যুবকের। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চাই।”

জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আমরা মৃতের পরিবারকে বলেছি অভিযোগ দায়ের করতে। অভিযোগ দায়ের হলে তদন্ত করা হবে। আর পুলিশের গাড়ির কাগজপত্র ফেল রয়েছে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। ঘটনার তদন্ত চলছে।”