পাহাড়-সমতলেও করোনার বাড়বাড়ন্ত, ভোটের বাংলা সামাল দিতে পারবে কি না আশঙ্কা স্বাস্থ্যকর্তার

মঙ্গলবার বাংলায় একদিনে করোনা (COVID-19) আক্রান্ত হলেন ২ হাজার ৫৮ জন। বাড়ল মৃতের সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ পজিটিভ সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণে যা রেকর্ড।

পাহাড়-সমতলেও করোনার বাড়বাড়ন্ত, ভোটের বাংলা সামাল দিতে পারবে কি না আশঙ্কা স্বাস্থ্যকর্তার
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে সুশান্ত রায়।
Follow Us:
| Updated on: Apr 06, 2021 | 9:10 PM

জলপাইগুড়ি: পাহাড় থেকে সমতল, লাফিয়ে বাড়ছে করোনা (COVID)। বেড়ে চলা করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন স্বাস্থ্যকর্তা। রাজনৈতিক সমাবেশগুলিতে মানা হচ্ছে না কোভিড বিধি। বেড়ে চলা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর। তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে আশঙ্কার কথা জানালেন উত্তরবঙ্গের কোভিড আধিকারিক চিকিৎসক সুশান্ত রায়।

মঙ্গলবার সুশান্ত রায় ঘুরিয়ে নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বলেন, ভোট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আদর্শ আচরণ বিধি চালু হয়। এবার সেখানে কোভিড বিধিও যুক্ত। কিন্তু সেটা ঠিকমত মানা হচ্ছে কি না তা দেখাও তো কারও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। যাদের এই দায়িত্ব তারা তা ঠিকমত পালন করছে কি না সেটাও প্রশ্নের মুখে।

সুশান্তবাবুর কথায়, গত নভেম্বরের পর থেকে উত্তরবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। ধীরে ধীরে কমতে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু নির্বাচন আসতেই ফের মাথাচাড়া দিয়েছে করোনা। এর মূল কারণ হিসেবে তিনি রাজনৈতিক সভা সমিতিগুলিকে নিশানা করেন।

আরও পড়ুন: বাংলায় একদিনে করোনা সংক্রমণ ২ হাজার পার! দ্বিতীয় পর্যায়ে রেকর্ড মৃত্যু আজ

উত্তরবঙ্গের কোভিড পরিস্থিতির নজরদারি যাঁর কাঁধে সেই সুশান্ত রায়ের অভিযোগ, ‘অধিকাংশ সভা সমিতিগুলিতে দেখা যাচ্ছে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এমনকী যারা নির্বাচিত হয়ে বিধায়ক বা মন্ত্রী হবেন, তাঁদের মধ্যেও কোভিড বিধি মানায় অনীহা দেখা যাচ্ছে। এই ব্যাপারে অবিলম্বে সকলে সচেতন না হলে আগামী ২ মের পর কোভিড হাসপাতালে আমরা জায়গা দিতে পারব না।’

রীতিমত পরিসংখ্যান তুলে ধরে সুশান্ত রায় জানান, ২৩ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল- এই ১৩ দিনের মধ্যে উত্তরবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭৮ জন। সংক্রমণে শীর্ষে রয়েছে মালদহ। তারপরই দার্জিলিং। এই ১৩ দিনে মালদহে ১৭৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন (শুধুমাত্র আরটিপিসিআর রিপোর্টের নিরিখে)। র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ধরা হয়নি। সেটা হলে সংখ্যাটা অনেক বেশি। দার্জিলিংয়ে সংক্রমিতের সংখ্যা ১৭৪ জন। জলপাইগুড়িতে গত চারদিনে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৭জন। উত্তর দিনাজপুরে ১০১ জন। দক্ষিণ দিনাজপুরে ৫১জন। এই তথ্যও শুধুমাত্র আরটিপিসিআর-এর।

আরও পড়ুন: সুপ্রিম-রক্ষাকবচ মিলতেই ফের ‘কালো হীরক রাজা’ লালাকে তলব সিবিআইয়ের

করোনা সংক্রমণে ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি জেলায় ৬ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে বলে এই সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়েছে। ২০-২১জন চিকিৎসক কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। যারা সুস্থ হয়ে কাজে যোগও দিয়েছেন। কিন্তু এভাবে সমস্তমহল যদি কোভিড বিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীন হয়, তবে সেক্ষেত্রে চিকিৎসক বা নার্সরা কতদূর স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে পরিস্থিতি সামলে রাখতে পারবেন তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেন সুশান্ত রায়।

যদিও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সুশান্তবাবুর তোলা প্রশ্ন নিয়ে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচন আধিকারিক মৌমিতা গোদারা বসুর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।